ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে গভীর রাতে হানা দিয়ে বীরভূম থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। পাইকরের কাশিমবাজার এলাকার বাসিন্দা ওই ব্যক্তির নাম নাজিবুল্লা (৫০)। তাঁর হেফাজত থেকে উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু মৌলবাদী নথিপত্র ও ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জাম। তাঁর সঙ্গে জঙ্গি যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে এসটিএফ সূত্রে খবর। শুক্রবারই ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে নাজিবুল্লাকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
এসটিএফ সূত্রে খবর, সাকিব আলি নামে একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট চালাতেন নাজিবুল্লা। সেই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে একটি ধর্মের প্রচার এবং অন্য ধর্মের প্রতি ঘৃণা-বিদ্বেষমূলক পোস্ট করতেন। যুবকদের কট্টর ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ করার কাজও নাজিবুল্লা করতেন বলে অভিযোগ। দীর্ঘদিন ধরেই ওই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট-সহ নাজিবুল্লার উপর নজর রাখছিলেন গোয়েন্দারা। অবশেষে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বাড়িতে হানা দিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করে এসটিএফ।
ধৃত নাজিবুল্লার একটি ছাপাখানা রয়েছে। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর জেহাদি বই, সিডি, ভুয়ো সিম কার্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে এসটিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে। এসটিএফ-এর একটি সূত্রে খবর, ২০১৩ সালে বুদ্ধগয়ায় ধারাবাহিক বিস্ফোরণের সঙ্গে যোগ থাকতে পারে নাজিবুল্লার। এ ছাড়া অন্য কোনও জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে তাঁর যোগ আছে কি না, তা-ও তদন্ত করে দেখবেন গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন: ডাকলে চোখ খোলার চেষ্টা করছেন, সঙ্কটজনক হলেও স্থিতিশীল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য
এসটিএফ সূত্রে খবর, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের ম্যাপ এক করে ইসলামিক রাষ্ট্র বানানোর ছবি দিয়ে ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করত নাজিবুল্লা। দুটি ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলেছিল সে। আইএস জঙ্গী গোষ্ঠীর মতাদর্শ প্রচার করত বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: টিটাগড়ে মণীশ খুনের মূল চক্রী নাসির মণ্ডলকে গ্রেফতার সিআইডির
ধৃতের পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, প্রথমে একটি ছোট চায়ের দোকান ছিলো নাজিবুল্লার। পরে গ্রামেই একটি ছাপাখানার দোকান খুলে ব্যাবসা করতেন তিনি। সঙ্গে এলাকায় হাতুড়ে আয়ুরবেদিক ডাক্তার হিসেবেও কাজ করতেন। ধৃতের ভাই সামিম আখতার বলেন, ‘‘গতকাল রাত্রে বিষয়টি জানতে পারি। পুলিশকর্মীরা এসে দাদাকে নিয়ে যান। তাঁর মোবাইলগুলিও পুলিশ নিয়ে গিয়েছে। ধৃতের ছেলে সিবরাতুল্লা অবশ্য দাবি করেন, ‘‘বাবাকে ফাঁসানো হচ্ছে। ছাপাখানা আর ডাক্তারির বাইরে বাবার কোনও যোগাযোগ বা যাতায়াত ছিল না।’’