প্রথমে ঠান্ডা মাথায় স্ত্রীকে খুন। তার পর প্রমাণ লোপাট করতে খড়ের গাদায় দেহ লুকিয়ে তা জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা! দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতার ওই ঘটনায় গ্রেফতার হলেন নিহত মহিলার স্বামী।
গত বৃহস্পতিবার ফলতার বুদা গ্রামে জলন্ত খড়ের গাদা থেকে এক মহিলার অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে তাঁর পরিচয় জানতে পারে পুলিশ। পুড়ে যাওয়া শরীরে গলায় রুপোর চেন, লাল-হলুদ চুড়িদারের না-পোড়া এবং ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া জুতো দেখে দেহ শনাক্ত করেন বাপের বাড়ির লোকেরা। পুলিশ জানিয়েছেন, মৃতা দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানা এলাকার বাসিন্দা। শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার (জ়োনাল) মিতুনকুমার দে জানান, অভিযুক্ত স্বামী গোলাম আলি শেখকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি বুদা গ্রামের বাসিন্দা।
নিহত বধূর বাপের বাড়ির লোকেরা জানিয়েছেন, বুদা গ্রামে পাঁচ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল তাঁদের মেয়ের। স্বামীর সঙ্গে অশান্তির জেরে বছর দেড়েক আগে বাপের বাড়ি ছেড়ে চলে আসেন মেয়ে। গোলাম একাধিক বার স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল। অভিযোগ, এর পর মঙ্গলবার বাখরাহাট এলাকা থেকে স্ত্রীকে বাইকে তুলে নিয়ে যান গোলাম আলি। তার পর সেই রাতেই ঠান্ডা মাথায় স্ত্রীর উপর শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে তাঁকে খুন করেন স্বামী। এর পর প্রমাণ লোপাট করতে গ্রামের নির্জন জায়গায় খড়ের গাদায় দেহ ফেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন।
বধূর পরিবারের দাবি, স্ত্রীকে খুন করার পর রাতেই বিষ্ণুপুরে নিজের কর্মস্থলে ফিরে যান গোলাম। সেখানে দরজির কাজ করেন তিনি। মেয়েকে রাত থেকে খুঁজে না পেয়ে পরিবারের লোকেরা বুধবার গোলামের কাছে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেখানে তাঁদের দেখে গালিগালাজ করতে শুরু করেন গোলাম। তখন ঘটনাস্থলে থাকা কিছু লোক গোলামকে মারধরও করেন। এর পরেই সেখান থেকে পালিয়ে যান গোলাম। তার পরেই নিহতের পরিবারের লোকেরা ফলতা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, স্ত্রী বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছে, এই সন্দেহের বশেই গোলাম তাঁকে খুন করেছেন।