রামেশ্বর সাহু
তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল জাল নোটের মামলায়। চার্জশিটও পেশ করেছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। ৯ ফেব্রুয়ারি চার্জ গঠনের কথা ছিল। তার আগেই, রবিবার সকালে এসএসকেএম হাসপাতালে মারা গেলেন ঝাড়খণ্ডের গিরিডির বাসিন্দা রামেশ্বর সাহু (৪৯)। ওই বিচারাধীন বন্দির মৃত্যুর জন্য কলকাতার জেলে ও হাসপাতালে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনেছেন বাড়ির লোকজন।
রামেশ্বরের পরিবার জানিয়েছে, আজ, সোমবার কলকাতা নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারক বা এনআইএ আদালতের বিচারকের কাছে স্বাস্থ্য ও কারা দফতরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে ক্ষতিপূরণ দাবি করবে তারা। রামেশ্বরের আইনজীবী ফজলে আহমেদ খান বলেন, ‘‘ওই বন্দির চিকিৎসা যে ঠিকমতো হচ্ছে না, তা বারবার আদালতে জানানো হয়েছিল। বিচারকের নির্দেশ সত্ত্বেও উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়নি।’’
এনআইএ সূত্রের খবর, তারা এ রাজ্যের যে-সব মামলার তদন্ত করছে, তার মধ্যে কোনও বিচারাধীন বন্দির মৃত্যু হল এই প্রথম। রামেশ্বরের বিরুদ্ধে ইউএপিএ বা বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে চার্জশিট দেয় এনআইএ। জাল নোটের ওই মামলার অন্য আট জন অভিযুক্ত প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি।
২০১৫-র ২৬ মে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানের ডাকবাংলো মোড়ে ১০ লক্ষ এক হাজার টাকার জাল নোট-সহ সর্বেশ্বর সাহু নামে ওডিশার এক যুবককে গ্রেফতার করেন ডিআরআই (ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইনটেলিজেন্স)-এর স্থানীয় শাখার গোয়েন্দারা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে সেই বছরের ১৭ অগস্ট ওই মামলার তদন্তভার নেয় এনআইএ। ২০১৬-র জানুয়ারিতে এনআইএ রামেশ্বরকে গ্রেফতার করে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের অভিযোগ, ২০০৬-এর এপ্রিল থেকে রামেশ্বর ওই চক্রে জড়িত। মালদহে বাংলাদেশ থেকে চোরাপথে ঢোকা জাল নোট দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিতেন তিনি।
কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেল সূত্রের খবর, দু’বছর আগে ওখানে অভিযুক্ত হিসেবে আসা ইস্তক বেশির ভাগ সময়ে রামেশ্বর হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন। তাঁর ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা ও হৃদ্রোগ ছিল। কারা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রথমে এম আর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় রামেশ্বরকে। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএমে। যা করণীয়, সবই করা হয়েছে।’’ এসএসকেএমের এক শীর্ষ কর্তা জানান, রামেশ্বর সাউ হৃদ্রোগ ও কিডনির সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। চিকিৎসকেরা তাঁকে নিয়মিত দেখতেন। বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখার অভিযোগ মিথ্যা।
এক মাস ধরে এসএসকেএম-চত্বরে ঠাঁই নেওয়া রামেশ্বরের স্ত্রী সারো দেবী ও বড় মেয়ে খুশবু কুমারী অবশ্য এই বক্তব্য মানতে রাজি নন। এ দিন সকাল ৬টায় তাঁরা রামেশ্বরের মৃত্যুর খবর পান। ‘‘রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়া সত্ত্বেও তাঁকে আইসিইউ-এ নিয়ে যাওয়া হয়নি,’’ অভিযোগ মা ও মেয়ের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy