Advertisement
E-Paper

বিয়ের নামে চেষ্টা মেয়েকেই ‘বিক্রির’

খেতমজুর বাবার অবশ্য তর সয়নি। বিয়ের নামে মেয়েকে বিক্রি করার চক্রান্তের অভিযোগে শ্রীঘরে যেতে হয়েছে কৃষ্ণ পুঝারকে! ধরা পড়েছে উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁ জেলার পাত্র দুর্বেশ জাঠাম, তাঁর দাদা এবং আরও তিন জন।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:০৮

চার বছর পরে সে পা দেবে আঠারোয়। বুধবার রাজ্য বাজেটে ঘোষিত ‘রূপশ্রী’ অনুযায়ী তখন বিয়ে দিলে পরিবার পাবে ২৫ হাজার টাকা। এখন সেই মেয়ে কন্যাশ্রীর টাকা পায়। রোজ স্কুলে যায়। খেতমজুর বাবার অবশ্য তর সয়নি। বিয়ের নামে মেয়েকে বিক্রি করার চক্রান্তের অভিযোগে শ্রীঘরে যেতে হয়েছে কৃষ্ণ পুঝারকে! ধরা পড়েছে উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁ জেলার পাত্র দুর্বেশ জাঠাম, তাঁর দাদা এবং আরও তিন জন।

প্রশাসনের হাজার চেষ্টা, কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্প নাবালিকা বিয়ে রোধে অনেকটাই সাফল্য পেয়েছে। কিন্তু অনেক পথ চলা বাকি, তা দেখাল পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থানার দখলপুর গ্রামের এই ঘটনা।

পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যদের মাধ্যমে আশাপুর আনন্দময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত বিষ্ণু জানতে পারেন, তাঁর স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মেয়েটি আরও পড়তে চায়। সুব্রতবাবু বিডিও (মেমারি ২) অনিন্দিতা রায়চৌধুরীকে সব জানান। বিডিও-র ফোন পেয়ে ওই দিনই কন্যাশ্রী যোদ্ধা, চাইল্ডলাইন, পুলিশ, ব্লক অফিসের কর্মীরা মিলে খড়ি নদীর পাড়ে দখলপুরে গিয়ে বিয়ে রোখেন।

তাতেও দমেনি পাত্রপক্ষ। বৃহস্পতিবার মেয়েটির মা সীমাদেবী বলেন, “বুধবার দুর্বেশরা স্বামীর হাতে ৬ হাজার টাকা তুলে দেয়। পরে আরও দেবে বলে। বুঝতে পারি, মেয়েকে বিক্রির মতলবই হচ্ছে। পড়শিদের মাধ্যমে মেয়েকে নিয়ে বিডিও-র কাছে গিয়ে সব জানাই।” মেয়েটির কথায়, “বাবা জোর করে বিয়ে দিচ্ছে বলে জানিয়েছিলাম স্কুলের এক কন্যাশ্রী দিদিকে। সে প্রধান শিক্ষককে জানায়। তা বলে বাবা আমাকে বিক্রি করে দিচ্ছে, এটা ভাবিনি।”

বিডিও বলেন, “ভিন্‌ রাজ্যের ৩৬ বছর বয়সী এক যুবকের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেওয়া নিয়ে প্রতিবাদ করায় মেয়েটির মাকে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছিল বাবা। কিন্তু, মা চুপ করে বসে থাকতে পারেননি।’’ বিয়ের যোগাযোগকারী রানি পুঝারের কাছে বিডিও জানতে পারেন, আর্থিক লেনদেন হয়েছে। প্রশাসনের দাবি, ওই এলাকার কয়েক জনের বিয়ে উত্তরপ্রদেশে হয়েছে। রানি তাদের চেনেন। তিনিই দুর্বেশের সঙ্গে ওই নাবালিকার বিয়ে হলে আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ার প্রলোভন দেখান মেয়েটির বাবাকে। রানিও গ্রেফতার হয়েছেন। যদিও মেয়েটির বাবার দাবি, “বিয়ের আয়োজনের জন্যই পাত্র ছ’হাজার টাকা দিয়েছিল। আমি চার হাজার রেখে বাকি ফেরত দিয়েছি।’’

Arrested Minor Marriage Human Trafficking Uttar Pradesh Kanyashree Child Line
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy