যুবকের বাড়ি পুরাতন মালদহের মুচিয়া নেমুয়া এলাকায়। দেবের প্রতিবেশীদের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।
দুপুরবেলা হইহই কাণ্ড মালদহের মুচিয়া অঞ্চল চন্দ্রমোহন হাই স্কুলে। সপ্তম শ্রেণির ক্লাসে ঢুকে শিক্ষিকা এবং পড়ুয়াদের দিকে বন্দুক উঁচিয়ে ধরলেন এক ব্যক্তি। পিঠে ব্যাগ। হাতে পেট্রল বোমা। বলেছিলেন, সবাইকে খুন করবেন। কিন্তু কেন এমন কাণ্ড ঘটাতে গেলেন দেব বল্লভ? কী দাবি ছিল তাঁর?
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, দেব বল্লভ জানান তাঁর স্ত্রী ২০২১ সাল থেকে নিখোঁজ। এ নিয়ে এসডিপিও, বিডিও, এমনকি নবান্নতেও গিয়েছেন তিনি। কিন্তু কেউ স্ত্রীর খোঁজ দেয়নি। স্কুলে বন্দুক হাতে দেব বল্লবের যে ভিডিয়ো সামনে এসেছে, তাতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমার স্ত্রীকে বলেছে, তোমার স্বামীর মতো এমন বাজে চরিত্রের লোক হয় না। সেই রেকর্ড আমার কাছে আছে। আমাকে বলেছে, তোমার স্ত্রীর চরিত্র খারাপ। টিএমসির নেতা, আমাদের ওই মৃণালিনীও একই কথা বলেছে।’’ একটি কাগজ হাতে এক নাগাড়ে তারিখ ধরে কিছু বলার চেষ্টা করছিলেন তিনি। সেই সময় তাঁকে ধাক্কা দেন পুলিশকর্মী। পুলিশ এবং স্থানীয় কয়েক জন যুবক দেব বল্লভকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে বার করে আনে। কেড়ে নেওয়া হয় তাঁর কাছে থাকা অস্ত্রশস্ত্র।
পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার মালদহের মুচিয়া চন্দ্রমোহন হাই স্কুলে সশস্ত্র অবস্থায় ঢুকে পড়া ওই যুবকের বয়স বছর ৪৪। যুবকের বাড়ি পুরাতন মালদহের মুচিয়া নেমুয়া এলাকায়। দেবের প্রতিবেশীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। ছেলে রয়েছে মায়ের হেফাজতে। কিন্তু বন্দুক হাতে দেব বল্লভের দাবি, তাঁর স্ত্রী নিখোঁজ। স্ত্রীকে খুঁজে দিচ্ছে না প্রশাসন। তাই এই পথ বেছে নিয়েছেন তিনি।
ওই স্কুলের শিক্ষক দেবাশিস শীলের দাবি, তিনি প্রথমে বুঝতেই পারেননি যে দেব বল্লভের হাতে থাকা বন্দুকটি আসল। কিন্তু পরে বোঝা যায় বন্দুকটি আসল। কার্তুজও পাওয়া গিয়েছে। ওই শিক্ষক বলেন, ‘‘উনি বার বার বলছিলেন ওঁর স্ত্রী নিখোঁজ। এক বছর ধরে পাচ্ছেন না। কেউ ওঁকে গুলি করলে উনিও গুলি করবেন।’’ দেব বল্লভকে মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ অসুস্থ বলতে নারাজ দেবাশিসবাবু। তাঁর আশঙ্কা, মঙ্গলবার বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।
মালদহের স্কুলে এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশের কাজের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি, বিষয়টিকে তিনি হালকা ভাবে নিতে নারাজ। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘মালদহে ছাত্রদের পণবন্দি করার চেষ্টা হয়েছিল। পরে পাগল সাজিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয় (অভিযুক্তকে)। এত সহজ ভাবে সব কিছু নিলে চলে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy