বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে এক অসুস্থ মহিলার।
লোহা কারখানায় কাটাইয়ের কাজ চলছিল। কিন্তু ফাঁকা ভেবে যে সিলিন্ডারগুলি কাটা হচ্ছিল, তাতে ছিল বিষাক্ত গ্যাস। আর সেই গ্যাস ছড়িয়েই প্রচুর মানুষ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেন। আপাতত তাঁদের সকলেই হাসপাতালে ভর্তি। চিকিৎসা চলছে। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার বেলুড়ে।
বেলুড়ের বজরঙ্গবলি মার্কেটে মূলত লোহার কারবার চলে। লোহার প্রচুর কারখানাও রয়েছে ওই এলাকায়। বড় বড় লোহার কন্টেনার কাটাই করে বিভিন্ন কাজে তা ব্যবহার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সকালে সে রকমই একটি কারখানায় দীর্ঘদিন পড়ে থাকা ফ্লোরিন গ্যাসের ৫টি বাতিল কন্টেনার কাটতে গিয়েই বিপত্তি বাধে। যাঁরা কাটাইয়ের কাজ করছিলেন, তাঁরা ভেবেছিলেন কন্টেনারটি ফাঁকা। কিন্তু, কাটাই শুরু করতেই গ্যাস বেরতে শুরু করে।
ওই গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকার প্রায় ৭০ জন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতাল এবং টিএল জায়সবাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ এবং দমকল। কিন্তু, বিশেষজ্ঞের পরামর্শ না নিয়েই তারা নিজেদের মতো করে ওই গ্যাস নিষ্ক্রিয় করতে যায় বলে অভিযোগ। আর তাতেই ক্ষুব্ধ হন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা ওই কাজে বাধা দেন। ফলে, অল্প সময়ের মধ্যেই গ্যাস প্রচুর পরিমাণে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিলেন বালির তৃণমূল বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বালি পুরসভার প্রতিনিধিরাও।
লিক হওয়া সিলিন্ডারটি গঙ্গায় ফেলে দেওয়ার পর। সোমবার।
আরও পড়ুন: ‘ছেলে ঢুকিয়ে দেব, রেপ করে দেবে’, এত দিনে ক্ষমা চাইলেন তাপস
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সকালের দিকে কারখানার ভিতরে যখন গ্যাস বেরনোর ঘটনাটি ঘটে, তখন তা এত ভয়াবহ আকার নেয়নি। প্রথমে কারখানার কয়েকজন কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পরেই দমকল এবং পুলিশে খবর দেওয়া হয়। তারা এসে সাবান দিয়ে সিলিন্ডারের কাটাই হওয়া অংশগুলি সিল করে দেয়। ঠিক করা হয়, এর পরেই কন্টেনারগুলি গঙ্গায় ফেলে দেওয়া হবে। সেই মতো বজরঙ্গবলি মার্কেট থেকে সেগুলো বার করে গঙ্গার দিকে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ ও দমকল। অভিযোগ, তখনই ঝাঁকুনিতে সাবান খুলে গিয়ে সিলিন্ডার থেকে গলগল করে হলুদ গ্যাস বেরতে থাকে। ওই গ্যাসে আশপাশের প্রচুর মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন।গ্যাস শরীরে ঢুকতে শুরু করতেই সকলের বমি শুরু হয়। মাথা ঘুরতে থাকে। ত্বক, চোখে জ্বালা করতে শুরু করে। তাঁদের তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এমনকী, গ্যাসের প্রভাবে আশপাশের সমস্ত গাছের পাতাও হলুদ হয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, গঙ্গার সিলিন্ডারগুলি ফেলে দেওয়ার পরে পাশের একটি কারখানার ১২ জন কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েন।
পুলিশ এবং দমকল কেন কোনও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিল না, এই অভিযোগ তুলে এলাকাবাসীরা বিক্ষোভ দেখান। এলাকায় আতঙ্কের পাশাপাশি তীব্র উত্তেজনাও তৈরি হয়। পুলিশ এবং দমকল যদিও একে অন্যের উপর দায় চাপিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, দমকল সাবান দিয়ে লিক বন্ধ করে গঙ্গায় ফেলার প্রস্তাব দেয়। দমকল আবার এই সিদ্ধান্তের দায় চাপিয়েছে পুলিশের উপরে।
ওই কারখানাটির লাইসেন্স বৈধ কি না তদন্ত করে তা দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুরসভা।
—নিজস্ব চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy