Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Citizenship Amendment Act

ছাত্রপীড়নে নাৎসি-ছায়া, মাওবাদী প্রতিবাদপত্র কোবিন্দকে

জেল সূত্রের খবর, চিঠিটি জেল সুপারের মাধ্যমে মেদিনীপুর থেকে কলকাতায় রাজ্যের কারা দফতরে এসে পৌঁছয়।

রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ

রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ

সুনন্দ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:২৩
Share: Save:

প্রতিবাদ এ বার লৌহকপাটের আড়াল থেকেও। সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি বা জাতীয় নাগরিক পঞ্জির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সঙ্গে সঙ্গে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন সমর্থন করে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে চিঠি দিলেন মাওবাদীরা। সেই আন্দোলনের সময় যে-ভাবে পড়ুয়াদের উপরে আক্রমণ নেমে এসেছে, তার প্রতিবাদ করে ওই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।

চিঠিটি লেখা হয়েছে মেদিনীপুর সংশোধনাগার থেকে। জেল সূত্রের খবর, চিঠিটি জেল সুপারের মাধ্যমে মেদিনীপুর থেকে কলকাতায় রাজ্যের কারা দফতরে এসে পৌঁছয়। রাষ্ট্রপতির পাশাপাশি সেটি পাঠানো হয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছেও। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘‘সারা ভারতের মানুষ জাতীয় নাগরিক পঞ্জি এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে মুখর। সেই গণতান্ত্রিক আন্দোলন থামাতে দিকে দিকে যে-ভাবে গুলি ও লাঠি চালিয়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে, তা ফ্যাসিবাদকে মনে করিয়ে দেয়।’’

রাজ্যের বিভিন্ন জেলে আছেন মাওবাদীরা। তাঁরা রাজনৈতিক বন্দির মর্যাদা পান। তাঁদের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলে বসে কখনও মাওবাদী নেতা কিষেণজির, কখনও শহিদ ভগত সিংহের মৃত্যুদিবস পালন করেন তাঁরা। জেলে মিটিং করে এই সব কর্মসূচি ঠিক করা হয়। সম্প্রতি এমনই এক বৈঠকে রাষ্ট্রপতি এবং মানবাধিকার কমিশনে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। তাতে মাওবাদী নেতা মধুসূদন মণ্ডল, শচীন ঘোষাল, বিমল মল্লিক সহ ১৬ জনের নাম রয়েছে।

সেই চিঠি।

চিঠিতে মাওবাদীরা লিখেছেন, ছাত্রছাত্রীরা দেশের ভবিষ্যৎ। প্রতিবাদ করা তাঁদের মৌলিক অধিকার। জেএনইউয়ে ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে তাঁদের প্রতিবাদ ন্যায়সঙ্গত। ৫ জানুযারি রাতে যে-ভাবে কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে পুলিশের মদতে এবিভিপি-র সদস্যেরা তাঁদের উপরে হকিস্টিক, লোহার রড নিয়ে আক্রমণ চালিয়েছে, তা ন্যক্কারজনক ফাসিস্ত হামলা। এই ঘটনা হিটলারের কালো দিনগুলিকে মনে করিয়ে দেয়।

মাওবাদী নেতাদের চিঠিতে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি-র সভাপতি অমিত শাহকে ‘জাঁদরেল’ বলে উল্লেখ করে তাঁরই মদতে এই হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে গৌরী লঙ্কেশ, কালবুর্গী, রোহিত ভেমুলার অপমৃত্যুর ঘটনার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘‘শিক্ষাপ্রাঙ্গণে পৈশাচিক, নাৎসি কায়দায় বর্বর আক্রমণ গণতন্ত্রের উপরে চরম আঘাত। আমরা স্তম্ভিত, লজ্জিত, মর্মাহত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE