Advertisement
E-Paper

‘দেখলেন, কেমন ট্রেন চালালাম’

ট্রেন ছাড়তে তখনও বাকি পাঁচ-সাত মিনিট। শিয়ালদহের তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে বুধবার রাত ৯টা ২০-র নৈহাটি লোকালে তখন পা রাখার জো নেই। আচমকা গার্ড কামরা থেকে বাজল হুটার। ভেঁপু শুনে ঘরমুখো নিত্যযাত্রীরা প্রায় দৌড়ে ট্রেনে ওঠার চেষ্টা শুরু করলেন। আর তখনই বিপত্তি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৫ ০০:০১
অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য

অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য

ট্রেন ছাড়তে তখনও বাকি পাঁচ-সাত মিনিট। শিয়ালদহের তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে বুধবার রাত ৯টা ২০-র নৈহাটি লোকালে তখন পা রাখার জো নেই। আচমকা গার্ড কামরা থেকে বাজল হুটার। ভেঁপু শুনে ঘরমুখো নিত্যযাত্রীরা প্রায় দৌড়ে ট্রেনে ওঠার চেষ্টা শুরু করলেন। আর তখনই বিপত্তি।

ভেঁপু আর থামে না। বেজেই চলছে। তার পরেই নিভে গেল ট্রেনের কামরার আলো। থেমে গেল পাখাও। মুহূর্তে আবার আলো জ্বলেও উঠল। ফের নিভে গেল। গরমে অতিষ্ঠ যাত্রীরা অগত্যা কামরা ছেড়ে প্ল্যাটফর্মে নেমেই পড়লেন।

পিছনে গার্ডের কামরার কাছে গিয়ে পৌঁছতেই চক্ষু চড়কগাছ। কে ভিতরে ? একমাথা উস্কোখুস্কো চুল, পরনে প্রায় ছিঁড়ে যাওয়া প্যান্ট, জামা। কেবিনের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে যন্ত্রপাতি এবং স্যুইচগুলো নাড়াচাড়া করছেন। মাঝেমধ্যেই বাজাচ্ছেন হুটারটাও।

কিছু একটা গোলমাল আঁচ করে তখন দরজায় বারবার ঘা দিচ্ছেন যাত্রীরা। বাইরে থেকে সমানে বলছেন, ‘নেমে আসুন, শক লাগবে’। কিন্তু কে শোনে কার কথা! ভিতরের লোক এক মনে নেড়ে চলেছেন যন্ত্রপাতি। এর পরেই খবর দেওয়া হয় স্টেশন কর্তৃপক্ষকে। পৌঁছে যান রেলের আধিকারিকেরা। গার্ড কেবিনের দরজাটি খোলার আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকেন তাঁরা। এই অবস্থা দেখে বেশির ভাগ যাত্রীই নেমে পড়েন ট্রেন থেকে। তবে কিছুক্ষণ পরে আর কোনও বিপত্তি না করে আচমকাই দরজা খুলে বেরিয়ে আসেন ওই ব্যক্তি।

রেল পুলিশ জানায়, ওই ব্যক্তি মানসিক অবসাদ ভুগছেন। তবে রেলের মুখ্য জনসংযোগ অধিকর্তা জানিয়েছেন, আরপিএফ কর্তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন। আচমকা ট্রেনের ‘নচে’ (যা দিয়ে ট্রেন চালানো হয়) হাত রেখে চাপ দিলে যে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারত, তা স্বীকার করে নিয়েছেন রেলকর্তারা। গার্ড বা চালক কেবিনে না থাকলে এ বার থেকে তার দরজা তালাবন্ধ করে রাখার কথাও ভাবা হচ্ছে।

তবে ‘নচে’ হাত না দিলেও, কেবিন থেকে বেরিয়ে এসে রেলকর্তাদের প্রশ্নের উত্তরে একগাল হেসে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘‘দেখলেন, কেমন ট্রেন চালালাম!’’

Mental patient driver's cabin rail police RPF MostReadStories
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy