ফের বৃষ্টির আশঙ্কা।
ঠুকঠুক করে এক-দু’রান আর নয়! শ্রাবণের শেষে এসে এ বার বর্ষার ব্যাটে চার-ছয়ের ইঙ্গিত দেখছেন আবহবিজ্ঞানীরা। তাঁরা বলছেন, এই চার-ছয়ের হাত ধরেই স্বাভাবিকের কোঠা পেরিয়ে উপরি বর্ষা মিলবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে।
গত সপ্তাহেই অতিগভীর নিম্নচাপের জেরে এক দফা ভারী বৃষ্টি পেয়েছে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ। উপগ্রহ-চিত্র বিশ্লেষণ করে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের বিজ্ঞানীরা বলছেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ফের বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ দানা বাঁধতে চলেছে। তার জেরে ফের গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে জোরালো বৃষ্টি মিলবে। কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি মিলতে পারে বলেও হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস।
কেন্দ্রীয় আবহবিজ্ঞান দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘‘বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। সেটিই শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে। সোমবার থেকেই বৃষ্টির দাপট বাড়বে।’’
মৌসম ভবন জানিয়েছে, ১ জুন থেকে ১১ অগস্ট পর্যন্ত হিসেবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বর্ষার ঘাটতি মাত্র ২ শতাংশ। এ বারের জোরালো বৃষ্টি সেই ঘাটতি মিটিয়ে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে দেবে তো বটেই, চারা রোপণের শেষ পর্যায়ে তা চাষিদের মুখে হাসি ফোটাবে বলেও মনে করছেন মৌসম ভবনের কর্তারা।
নিম্নচাপের প্রভাবে কেমন বৃষ্টি মিলতে পারে, তার আঁচ অবশ্য রবিবারেই মিলেছে। দুপুরের পর থেকেই আকাশ কালো মেঘে ঢেকে গিয়েছিল। হুড়মুড়িয়ে বৃষ্টির সঙ্গে বাজও পড়েছে। প্রবল বৃষ্টির জেরে কলকাতার বহু এলাকায় অল্পবিস্তর জলও জমেছে। তবে ছুটির দিন হওয়ায় সে ভাবে যানজটের সমস্যা হয়নি বলেই পুলিশ সূত্রের দাবি।
রে়ডার-চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিজ্ঞানীরা জানান, এ দিন কলকাতা এবং লাগোয়া গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপরে একাধিক বজ্রগর্ভ মেঘপুঞ্জ তৈরি হয়েছিল। তার জেরেই এমন প্রবল বৃষ্টি এবং বজ্রপাত হয়েছে। দুপুর থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত কলকাতায় ৩১.৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। হাওয়া অফিসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বর্ষা সক্রিয় হওয়ায় গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের পরিমণ্ডলে ভরপুর জলীয় বাষ্প রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বায়ুমণ্ডলের নিচুস্তর এবং মধ্যস্তরে তাপমাত্রার ফারাক বেশি হওয়ার ফলেই এই বজ্রগর্ভ মেঘপুঞ্জ তৈরি হয়েছিল।
এ বছর বর্ষার গোড়ায় গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ঝিমিয়ে ছিল বর্ষা। আবহবিদেরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে বর্ষার আগমনে দেরি তো হয়েইছে, তার উপরে বর্ষা জোরালো হওয়ার জন্য বঙ্গোপসাগরে প্রয়োজনী ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপও দানা বাঁধতে পারেনি। জুলাই মাস থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হয়। ‘‘অগস্টে এসে তো হাত উপুড় করছে বর্ষা!’’ মন্তব্য হাওয়া অফিসের এক পদস্থ কর্তার।
আরও পড়ুন
জল থইথই হেঁশেলেই চাপল খিচুড়ির হাঁড়ি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy