Advertisement
E-Paper

১ কোটি এলেবেলে সংখ্যা নয়, শাহ এসে লক্ষ্যপূরণের লক্ষ্যে রাজ্য বিজেপিকে ৩ মন্ত্র দিয়ে গেলেন রবিবার

শনিবার রাতে কলকাতায় এসে রবিবার বিকেলে দলের সদস্যসংগ্রহ অভিযানের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন অমিত শাহ। কিন্তু ওই দু’দিনে আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও সাংগঠনিক বৈঠক করেননি তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:৩১
MHA Amit Shah gave 3 advice to state BJP leaders to reach one crore membership target dgtl

রবিবার সল্টলেকের পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রে বিজেপির কর্মসূচিতে (বাঁ দিক থেকে) শুভেন্দু অধিকারী, অমিত শাহ এবং সুকান্ত মজুমদার। ছবি: পিটিআই।

শনিবার রাত থেকে রবিবার বিকেল পর্যন্ত কলকাতায় ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু তার মধ্যে রাজ্যনেতারা তেমন ভাবে শাহের থেকে ‘সময়’ পাননি। যদিও রবিবার সন্ধ্যায় দিল্লি ফেরার আগে কিছু সময়ের আলোচনায় লক্ষ্যপূরণের লক্ষ্যে কী কী করতে হবে, তা নিয়ে রাজ্য নেতাদের পরামর্শ দিয়ে গিয়েছেন শাহ। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, তখন বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেই ছিলেন সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী-সহ রাজ্য বিজেপির প্রধান নেতারা। সেখানেই শাহ তিন ‘মন্ত্র’ শুনিয়েছেন।

শনিবার বেশি রাতে কলকাতায় পৌঁছন শাহ। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুকে নিজের গাড়িতে নিয়েই নিউটাউনের হোটেলে যান। তবে রাতে আলাদা করে কোনও বৈঠক হয়নি। রবিবার সকালেই শাহ চলে যান সীমান্তসুরক্ষা বাহিনীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বনগাঁ। সেখানে শাহের সঙ্গী ছিলেন না সুকান্ত-শুভেন্দু। সেখানে ছিলেন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী তথা বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। বনগাঁ থেকে ফিরে হোটেলে মধ্যাহ্নভোজের সময়ে রাজ্যের নেতাদের মধ্যে সুকান্ত, শুভেন্দু, শান্তনু ছাড়াও ছিলেন প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। বিজেপি সূত্রের খবর, সেখানেও সাংগঠনিক বিষয়ে বিশেষ আলোচনা হয়নি। কারণ, সল্টলেকের পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার তাড়া ছিল শাহের।

সল্টলেকের ওই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনার পরে সেখানেই দলের রাজ্য নেতাদের নিয়ে সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন শাহ। চা-পানের অছিলায় মিনিট দশেকের সেই বৈঠকে মূলত শাহই কথা বলেছেন। হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল বনসল, রাজ্যের পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে, সহ পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য। রাজ্যের নেতাদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল, জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো, জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় এবং সদস্য সংগ্রহ অভিযানের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যেরাও ছিলেন। সেখানেই বাংলা থেকে ১ কোটি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্র পূরণের জন্য কী কী করতে হবে তা নিয়ে পরামর্শ দেন শাহ। লক্ষ্যপূরণ নিয়ে তিনি যে ‘আশাবাদী’, তা-ও জানান।

বিজেপি প্রতি ছ’বছর অন্তর নতুন করে দলের সদস্য সংগ্রহ করে। তাদের দাবি, এর আগে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৮৮ লাখ সদস্য করা গিয়েছিল। তখন শাহ ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি। এ বার রাজ্যে দলের লক্ষ্য ১ কোটি। প্রকাশ্য বক্তৃতায় শাহ কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ১ কোটি সদস্যসংখ্যা খুব সহজেই করে ফেলা সম্ভব। তবে একান্তে রাজ্য নেতাদের তা বলেননি। মঞ্চে তিনি বলেছিলেন, ‘‘বাংলায় ১ কোটি সদস্য হয়ে গেলে ২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে সহজেই জয় নিশ্চিত।’’ তার পরে পরেই ঘরোয়া বৈঠকে রাজ্য নেতাদের মনে করিয়ে দেন, ১ কোটি সংখ্যা খুব সহজেই ছুঁয়ে ফেলার নয়। এর জন্য তিনটি কথা মাথায় রেখে চলতে হবে। ওই বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা জানিয়েছেন, শাহ জানিয়েছেন, প্রথমেই চাই ‘সুস্পষ্ট পরিকল্পনা’। দ্বিতীয় কাজ সেই পরিকল্পনা মতো কিছুদিন কাজ করার পর ‘পর্যালোচনা’। তৃতীয় পদক্ষেপ হবে পর্যালোচনার শেষে বকেয়া কাজ কী ভাবে শেষ করা যাবে, সেই পরিকল্পনা করে ‘পদক্ষেপ’।

গোটা দেশে গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে সদস্যসংগ্রহ অভিযান শুরু হয়ে গেলেও বাংলায় আরজি কর-কাণ্ডের জেরে তৈরি হওয়া রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং পুজোর জন্য তা শুরু হয়নি। রবিবার শাহ বলেছেন, ‘‘দেরিতে শুরু হলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রাজ্যে লক্ষ্য ছুঁতে হবে।’’ একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, গোটা দেশে ইতিমধ্যেই দলের ১০ কোটি সদস্য সংগ্রহ হয়ে গিয়েছে।

বাংলায় কী ভাবে লক্ষ্যপূরণ হবে, তা দেখার জন্য সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দুষ্মন্ত গৌতম দায়িত্বে রয়েছেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নজরদারিতে রাজ্যে কাজ করবেন শমীক। রবিবার শাহ দিল্লি ফিরে যাওয়ার পরে সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের দফতরে বৈঠকে বসেন রাজ্যনেতারা। বিজেপি ঠিক করেছে প্রথম পর্বে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ৩১ তারিখে পর্যালোচনা বৈঠক করবে। এর পরে ১ থেকে ৭ নভেম্বর দ্বিতীয় দফার অভিযান। ৮ নভেম্বর ফের পর্যালোচনা বৈঠকের পরে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে ওই অভিযান। এ ছাড়াও বুথ স্তর থেকে ব্লক ও জেলা পর্যায়ের আলাদা আলাদা লক্ষ্য ঠিক করে নানা পরিকল্পনা করেছে রাজ্য বিজেপি। দল মনে করে, এর আগের সদস্যসংগ্রহ অভিযানের পরে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল হয়েছিল বাংলায়। এ বারেও অভিযান ‘সফল’ হলে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তার রাজনৈতিক সুবিধা মিলবে।

Amit Shah MHA BJP Leader
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy