এত্তা-জঞ্জাল: অব্যবহৃত পুকুরেই জমছে আবর্জনা। খড়্গপুর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
পরপর ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যুর পরেও হুঁশ ফেরেনি। বুধবার দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে নিমাই বৈতালিক (৪২) নামে এক ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু হয়। ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়ে হয়েছে ৯২ জন। শহরের রাস্তাঘাট, নিকাশি নালা দেখে অবশ্য তা বোঝার উপায় নেই। নিকাশি নালায় জমে থাকা জল, আবর্জনায় ভরা পুকুর— সব জায়গাই মশার আঁতুড়ঘর বলে শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ।
গত ২১ অগস্ট থেকে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে করছে ‘ডেঙ্গি মনিটারিং কমিটি’। পরিদর্শনের রিপোর্ট নিয়ে ইতিমধ্যেই জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে কমিটির প্রতিনিধিদের বৈঠকও হয়েছে। তারপরেও অবস্থার বিশেষ বদল হয়নি।
বুধবার শহরের ২৪ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে পরিদর্শন গিয়েও কমিটির সদস্যরা দেখেন, বিভিন্ন এলাকায় জমে রয়েছে আবর্জনা। জমে জলও।
শহরের একাধিক ছোট-বড় পুকুর রয়েছে। রয়েছে অনেক ডোবাও। শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, একাধিক পুকুরে জঞ্জাল জমে থাকে। সেখানেই বংশবৃদ্ধি করছে মশা। মশার লার্ভা নিধনে পুরসভা কার্যত কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি। শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষপল্লি কালীমন্দির পুকুরের জল থেকে মশার উপদ্রব বাড়ায় অতিষ্ঠ এলাকার বাসিন্দারা। এলাকার বাসিন্দা আশিস মাইতির অভিযোগ, “আবর্জনা আর নোংরা জল জমে কালীমন্দির পুকুর মশার আঁতুড়ঘর হয়ে উঠছে। মশার উপদ্রবে আমরা অতিষ্ঠ। কিন্তু একদিনও মশা মরার তেল, ব্লিচিং পাউডার কিছুই দেওয়া হচ্ছে না।’’
একই অবস্থা সেবাসমিতি সংলগ্ন ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যানার্জী পুকুরেরও। এই পুকুরের ধারেই বাড়ি স্নেহাশিস প্রধানের। তিনি বলছেনন, “পুকুরের জলে আবর্জনা ভরে গিয়েছে। মশার উপদ্রবে থাকতে পারছি না। বারবার পুরসভায় জানিয়েছি। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। কী করা যায় তা ঠিক করতে শেষমেশ আমরাই বৈঠক ডেকেছি।”
সমস্যার কথা মানছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধানও। তিনি বলছেন, “এটা ঠিক, খড়্গপুর শহরে পরিদর্শনের সময়ে এমন অনেক পুকুর দেখেছি যেখানে আবর্জনা জমে রয়েছে। সেখানে ডেঙ্গির মশা থাকতেও পারে। আমরা নিশ্চয় এ বিষয়ে পুরসভাকে ব্যবস্থা নিতে বলব।”
প্রাথমিকভাবে জেলায় ৭৫ জন ডেঙ্গি রোগীর খোঁজ মিলেছিল। তার মধ্যে ৭০ জন ছিলেন খড়্গপুরের। গত ২৪ অগস্ট জানা যায়, জেলায় আরও ২৫ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে ৫ জন ছিলেন খড়্গপুরের। বুধবার খড়্গপুরে নতুন করে আরও ছ’জন ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।
ডেঙ্গি মনিটারিং কমিটির সভাপতি তথা খড়্গপুরের অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পালেরও বক্তব্য, “প্রতিদিন বিভিন্ন ওয়ার্ডে নজরদারি চলছে। স্কুলে-স্কুলেও ডেঙ্গি বিরোধী প্রচার শুরু হয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আবর্জনা, জমা জল তে আছেই, একইসঙ্গে অব্যবহৃত পুকুরের জুলে মশা জন্মাচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যেই অব্যবহৃত পুকুরগুলিতেও মশা মারার তেল ও ব্লিচিং পাউডার দিতে পুরসভাকে বলেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy