Advertisement
E-Paper

বৌভাতের ভোজে ভিড়, বিধিভঙ্গে পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন রেলশহরে

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২১ ০৬:৫১
আমন্ত্রিতদের অনেকের মুখে মাস্কও ছিল না।

আমন্ত্রিতদের অনেকের মুখে মাস্কও ছিল না। নিজস্ব চিত্র

রাজ্যে কার্যত লকডাউন চলছে। সরকারের জারি করা নির্দেশিকায় বিয়েবাড়িতে ৫০ জনের বেশি নিমন্ত্রণে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। অথচ কার্যত লকডাউনের প্রথম রাতেই ভাঙল সরকারি বিধি-নিষেধ। পুলিশি উদাসীনতায় হাজারের অধিক আমন্ত্রিতের সমাগমে রেলশহর দেখল ব্যবসায়ী পরিবারের জমকালো বিয়েবাড়ি। আঙুল উঠল পাশেই চলা আরও এক সামাজিক অনুষ্ঠানের জন সমাগমেও! রবিবার রাতে খড়্গপুর শহরের দেবলপুর দুর্গামন্দির সংলগ্ন এলাকার এমন ঘটনায় শহরে পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল নেতৃত্ব।

বৌভাতের ওই অনুষ্ঠানে প্রায় দেড় হাজার মানুষ আমন্ত্রিত ছিলেন বলে স্থানীয়দের দাবি। ছিল না মাস্কের বালাই। ঘটনাটি দেখে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা পুলিশ-প্রশাসনে প্রশ্ন করার প্রায় এক ঘন্টা বাদে রাত সাড়ে দশটায় পৌঁছয় টাউন পুলিশ। ততক্ষণে অবশ্য ভিড় পাতলা হয়েছে অনেকটাই। স্থানীয়দের দাবি, ওই ব্যবসায়ী পরিবারের এক আত্মীয়ের সঙ্গে টাউন পুলিশের ‘ঘনিষ্ঠ’ যোগাযোগ রয়েছে। এর জেরেই প্রাথমিকভাবে পুলিশ পৌঁছতে গড়িমসি করেছে বলে অভিযোগ। এমনকি, পাশে চলা আরও একটি সামাজিক অনুষ্ঠানেও রাজ্যের নির্দেশিকা লঙ্ঘিত হলেও পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। যদিও টাউন পুলিশের দাবি, তারা যাওয়ার পরে দেড় হাজার নয়, বিয়েবাড়িতে চারশো মানুষের উপস্থিতি নজরে এসেছে। ঘটনাটি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, “ঘটনাটি জানার পরে আমরা ভিড় প্রতিহত করেছি। সেই সঙ্গে মামলা রুজু করা হয়েছে।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন শহরের দেবলপুরের বাসিন্দা বিশাল সোনকারের বৌভাত ছিল। সন্ধ্যার পর থেকেই আমন্ত্রিতদের ভিড় দেখা যায়। আতঙ্কিত হয়েছেন আমন্ত্রিতরাও। যেমন গোলবাজারের ব্যবসায়ী সুরেশ সোনকার বলেন, “নিমন্ত্রণ করলে তা রক্ষা করতে যেতে হয়। তাই পরিবারের সকলে নিমন্ত্রিত থাকলেও বিশালের বিয়েতে আমি একাই গিয়েছিলাম। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ গিয়ে ভিড় দেখে নিমন্ত্রন রক্ষা করেই চলে এসেছি। রাজ্যের নির্দেশিকা এভাবে লঙ্ঘন করা উচিত হয়নি।” বৌভাতের ওই অনুষ্ঠানের পাশেই তৃণমূলকর্মী হায়দার আলি ওরফে মান্টার বাড়িতে একটি সামাজিক অনুষ্ঠান ছিল। দু’টি অনুষ্ঠানেই নিমন্ত্রিত ছিলেন তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর প্রদীপ সরকার। তিনি বলেন, “আমি মান্টার বাড়িতে গিয়েছিলাম। কারণ ওখানে ৩০-৪০জনের বেশি ছিল না। তার পাশে বিশাল সোনকারের বৌভাতেও আমার নিমন্ত্রণ ছিল। কিন্তু বিয়ে বাড়িতে প্রায় দেড় হাজার লোক নিমন্ত্রিত ছিল। সেই ভিড় দেখে কিছুটা আতঙ্কিত হয়েই এড়িয়ে গিয়েছি।” সোমবার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রদীপ বলেন, “আমি বুঝতে পারছি না প্রশাসন কীভাবে এটাকে প্রশ্রয় দিল? সরকারের নির্দেশ প্রশাসনের পালন করা উচিত। প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রশাসনের মদতেই রাজ্যের নির্দেশিকার অবমাননা হল।”

অবশ্য রাজ্যের নির্দেশিকা লঙ্ঘন করা নিয়ে সেই প্রশ্নে বিশালের দাদা বিকাশ সোনকার বলেন, “আমাদের সরকারি নির্দেশ মেনেই নিমন্ত্রিতরা এসেছেন। করোনা বিধি মানা হয়েছে। তাছাড়া বিনা নিমন্ত্রণে লোক যদি চলে আসে কী করব!” বিশাল, বিকাশের দাদা রাজু সোনকার বলেন, “আমাদের বিয়েবাড়ির পাশে আরও একটি অনুষ্ঠান হচ্ছিল। সেখানেই সবচেয়ে বেশি লোক এসেছিল। তবে পরিবারে আনন্দের অনুষ্ঠান করতে গিয়ে আমাদেরও ভুল হয়েছে। আর কী করা যাবে!” পরে পাশের বাড়ির সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজক তৃণমূল কর্মী হায়দার আলি বলেন, “বাড়ির অনুষ্ঠানে কয়েকজন পরিচিতকে ডেকেছিলাম। সেটা যদি ভুল হয় তবে ক্ষমাপ্রার্থী।”

marriage Corona Coronavirus in West Bengal COVID-19
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy