গ্রামে মাটির রাস্তা কাদায় ভরা। সপ্তাহ দুয়েক আগে সে রাস্তা পাকা করার দাবিতে অবরোধ করেছিলেন বাসিন্দারা। ওই রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্স না ঢোকায়, অসুস্থ এক মহিলাকে রবিবার টোটোয় হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। অভিযোগ, প্রায় ছ’কিলোমিটার কাদা রাস্তা পেরিয়ে যখন হাসপাতালে পৌঁছনো যায়, তত ক্ষণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের দাবি, হৃদ্রোগে আক্রান্ত ওই মহিলাকে ঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলেবাঁচানো যেত বলে চিকিৎসকেরা তাদের জানিয়েছেন।
পূর্ব মেদিনীপুরের অমরপুর (চৌকিশ্বর) গ্রামের বছর আটত্রিশের বাসন্তী বেরা রবিবার সকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এলাকার এক গ্রামীণ চিকিৎসক দেখার পরে, রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সে বন্দোবস্ত করতে ঘণ্টাখানেক পেরিয়ে যায়। তার পরে রোগীকে নিয়ে টোটোয় পটাশপুর গ্রামীণ হাসপাতালে রওনা দেয় পরিবার। তাদের অভিযোগ, রাস্তার কাদায় টোটোর চাকা আটকে যাচ্ছিল। টোটো ঠেলতে হচ্ছিল। এ ভাবে ছ’কিলোমিটার পথ পেরোতে ঘণ্টাখানেক পেরিয়ে যায়। দুপুর ১২টা নাগাদ হাসপাতালে পৌঁছলে চিকিৎসকেরা জানান, মৃত্যু হয়েছে বাসন্তীর। মৃতের আত্মীয় শ্যামলী বেরা বলেন, ‘‘কাদা রাস্তার জন্য রোগীকে সময়ে হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারলাম না। রাস্তা আমাদের উপকারে আসার বদলে, প্রাণ কেড়ে নিল!’’
অমরপুরে যাওয়ার পথ কর্দমাক্ত। —নিজস্ব চিত্র।
স্থানীয় সূত্রের খবর, পটাশপুরের দুর্গারোড থেকে তালাডিহা হনুমান মন্দির পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার অংশে গ্রামীণ সড়ক তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। রাজ্য গ্রামোন্নয়ন দফতরের বরাদ্দ করা সাড়ে ৯ কোটি টাকায় কাজ চলছিল। প্রায় ১১ কিলোমিটারের কাজ হলেও, অমরপুর (চৌকিশ্বর)-সহ বাকি অংশের রাস্তা এখনও তৈরি হয়নি। মাটির রাস্তা পাকা করার দাবিতে সম্প্রতি অবরোধ-বিক্ষোভও হয়। তখন প্রশাসনিক আশ্বাস মিললেও, কাজ শুরু হয়নি বলে দাবি এলাকাবাসীর।
পটাশপুর ১ বিডিও বিধানচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘‘মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক। পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। তবে রাস্তায় দুর্ভোগের জন্যই এই মৃত্যু হয়েছে কি না, জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)