বেআইনি ভাবে আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ রাখার অভিযোগ পুলিশ এক প্রাথমিক শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার হয়েছে এক আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহকারীকেও।
ধৃতের নাম তরুণ পাত্র। ভগবানপুরে পূর্ব রাধাপুরের ওই বাসিন্দা পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক। তবে তিনি চিত্র শিল্পীও বটে। ভিডিয়োও বানিয়ে ইউটিউবেও আপলোড করেন। পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার রাতে তাদের কাছে খবর আসে ওই শিক্ষকের বাড়িতে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র এবং কার্তুজ রয়েছে। রাতেই পুলিশ তরুণের বাড়ি তল্লাশি করে একটি নাইনএমএম পিস্তল এবং চার রাউন্ডগুলি উদ্ধার করে। এর পরেই গ্রেফতার করা হয় ওই শিক্ষককে। পুলিশের দাবি, রাতে শিক্ষককে জেরা করে তারা এক আগ্নেয়াস্ত্র পাচারকারীর সন্ধান পায়। সেই মতো জলিবাড়ের এক বাসিন্দা প্রবোধ মহাপাত্রকেও গ্রেফতার
করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, জেরায় ওই শিক্ষক দাবি করেছেন, তিনি আত্মরক্ষার্থে ওই আগ্নেয়াস্ত্র রবিবার কিনেছিলেন প্রবোধের কাছ থেকে। ধৃত দু’জনকে রবিবার কাঁথি আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের দু’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। এগরার এসডিপিও দেবীদয়াল কুণ্ডু বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে আগ্নেয়াস্ত্র বাড়িতে রাখা এবং সেই আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহের অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কী উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র রেখেছিলেন উনি, সেই বিষয় জেরা করা হচ্ছে।’’
পূর্ব রাধাপুর এলাকায় রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা যায় না। আপাত শান্ত এলাকায় ধৃত শিক্ষক তরুণও নির্ঝঞ্ঝাট জীবন কাটাতেন বলে দাবি। তবে তাঁর কাছে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় রাজনীতির রং লেগেছে। ধৃত প্রবোধ এলাকায় বিজেপি কর্মী হিসাবে পরিচিত। আর তরুণ ভগবানপুর-১ প্রখণ্ডের বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সক্রিয় সদস্য বলে দাবি তৃণমূলের। এ দিন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা ভগবানপুর থানায় বিক্ষোভ দেখান।
ভগবানপুর-১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি রবীনচন্দ্র মণ্ডল বলছেন, ‘‘বিজেপি এলাকায় সন্ত্রাস ছড়াতে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি মজুত করছিল। পুলিশ এই দ্রুত পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাই।’’ যদিও ভগবানপুর-১ প্রখণ্ডের বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভাপতি প্রজ্জ্বল দাস বলছেন, ‘‘ওই শিক্ষক আমাদের সংগঠনের সদস্য ঠিকই। তবে এলাকায় ওঁর যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। পুলিশ ও তৃণমূল যৌথ পরিকল্পনা করে ওঁকে ফাঁসাচ্ছে। আমরা ওঁদের পাশে রয়েছি।’’ একই দাবি বিজেপির জেলা (কাঁথি) সহ-সভাপতি স্বপন রায়েরও। তিনি বলেন, ‘‘প্রবোধ দলের সক্রিয় কর্মীর হওয়ায় তৃণমূল নির্দেশে পুলিশ চক্রান্ত করে ফাঁসিয়েছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)