সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। সামনে বসে রয়েছেন কলেজের ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিরা। কৌশিক সাঁতরার তোলা ছবি।
এক দিনের মধ্যেই ১৮০ ডিগ্রি ভোট বদল!
শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের সময় মতো কলেজ আসার নির্দেশ জারি করেছিলেন নাড়াজোল রাজ কলেজের টিএমসিপি ইউনিটের সভাপতি। বিষয়টির নিন্দা করে কলেজের টিচার ইনচার্জ রণজিৎ খালুয়া বলেছিলেন, ‘‘টিএমসিপি এ ভাবে চিঠি দিতে পারে না।’’ এমনকী এ বিষয়ে বৈঠকের কথা জানিয়েছিলেন তিনি। আর বৈঠক শেষে মঙ্গলবার রণজিৎ খালুয়ার প্রতিক্রিয়া, ‘‘ছাত্ররা আবেদন করতেই পারে। এই বিষয়টি নিয়ে এত আলোচনা করার কী আছে”?
গত শুক্রবার কলেজের টিএমসিপি ইউনিটের সভাপতি প্রলয় সিংহর সই করা একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয় শিক্ষকদের কাছে। তাতে বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মোতাবেক কলেজের শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের বেলা ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে কাজে যোগ দিতে হবে। আর এমন চিঠির কথা শুনে বিস্মিত হয়েছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। শিক্ষাঙ্গনে এমন বেচাল বরদাস্ত না করার কড়া বার্তাও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মন্ত্রীর সেই বার্তা যে কোনও ছাপ ফেলেনি তার প্রমাণ মিলল মঙ্গলবার কলেজে গিয়েই।
টিএমসিপির পক্ষ থেকে এই চিঠিতে সই করেছেন যিনি সেই তৃণমূল ইউনিট সভাপতি প্রলয় সিংহ এ দিন সাফ বললেন, ‘‘ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস না হলে আমাদের কাছেই আসে।তা ই আমরা লিখিত ভাবে টিআইসি-সহ কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এতে অন্যায় কোথায়?” ওই কলেজে টিএমসিপির চেয়ারম্যান অনুপম ভুঁইয়ার গলাতেও একই সুর। তাঁর কথায়, ‘‘ছাত্র-ছাত্রীদের ভালমন্দ দেখা আমাদের কাজ। তাই আমরা লিখিত ভাবে ওই আবেদন করেছি। কোনও ভুল করিনি।” তবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলার সভানেত্রী দেবলীনা নন্দী বলেন, “সরাসরি চিঠি দিয়ে ছাত্ররা ঠিক করেনি। বিষয়টি সংগঠন ভাবে দেখা হচ্ছে।”
আর কলেজের টিআইসির প্রথম দিনের বিরক্তি, রাগ এ দিন উধাও। উল্টে প্রশ্রয়ের সুরে এ দিন রণজিৎবাবু বলেন, ‘‘কলেজে ঠিকই ক্লাস হয়। কোনও শিক্ষক ছুটি নিলে ক্লাস বন্ধ থাকে। অফিসের সব তথ্য তো ছাত্র সংসদের জানা নেই। তাই ওরা চিঠি দিয়েছেন।” তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘টিচার্স কাউন্সিলের সম্পাদক ও ছাত্রদের নিয়ে বৈঠকে বিষয়টি মিটে গিয়েছে।’’
মঙ্গলবার নাড়াজোল কলেজে গিয়ে দেখা গেল, কেউই এই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রীর কথায়, “সংবাদমাধ্যমের লোকেরা আসবে শুনে আমাদের ক্লাসেই থাকতে বলা হয়েছিল। যারা ক্যাম্পাসে ঘুরছিল তাদের উপরও নজরদারি ছিল।’’ কলেজের পরিচালন কমিটির সদস্য তথা তৃণমূলের দাসপুর-১ ব্লক সভাপতি সুকুমার পাত্র বলেন, “কলেজের শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের নির্দিষ্ট সময়ে আসা নিয়ে ছাত্র সংগঠন একটি চিঠি দিয়েছে বলে শুনেছি। দ্রুত পরিচালন কমিটির বৈঠক ডাকা হবে। সেখানেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy