Advertisement
E-Paper

জঙ্গলমহলের বহু স্কুলে তালা, খুলতে হন্যে প্রশাসন

গোয়েন্দাদের কাছে খবর আছে, মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে আদিবাসী সমাজের একাংশ জঙ্গলমহলে বড় ধরনের আন্দোলন করার চেষ্টা করছে। পুলিশি পদক্ষেপ হলে সেটিকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের আন্দোলন তৈরির চেষ্টা হতে পারে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।

কিংশুক গুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৮ ০৭:১০
এসআই অফিসে তালা।নিজস্ব চিত্র

এসআই অফিসে তালা।নিজস্ব চিত্র

একের পর এক স্কুলে তালা দিচ্ছেন আদিবাসী সংগঠনের লোকজন। তালা লাগানো হচ্ছে স্কুল পরিদর্শকের দফতরেও। পিছন পিছন ছুটছেন পুলিশ-প্রশাসন আর স্কুল শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তালা খোলা হচ্ছে। আবার তালা দিচ্ছেন আদিবাসী সংগঠনের লোকেরা। বুধ ও বৃহস্পতিবার দিনভর এমনই ছবি দেখা গেল ঝাড়গ্রাম জেলায়।

যাঁরা তালা দিচ্ছেন, সেই আদিবাসী সংগনের কর্মীদের বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে কড়া পদক্ষেপের পক্ষপাতী নয় প্রশাসন। কারণ, সামনেই রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর সফর। সব কিছু ঠিক থাকলে ৯ অগস্ট ঝাড়গ্রাম জেলায় আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কারণে প্রশাসনও ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছে। গোয়েন্দাদের কাছে খবর আছে, মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে আদিবাসী সমাজের একাংশ জঙ্গলমহলে বড় ধরনের আন্দোলন করার চেষ্টা করছে। পুলিশি পদক্ষেপ হলে সেটিকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের আন্দোলন তৈরির চেষ্টা হতে পারে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।

বুধবার সাঁওতালদের সর্বোচ্চ সামাজিক সংগঠন ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’-এর পক্ষ থেকে প্রথমে গোপীবল্লভপুরের ছাতিনাশোলে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। জেলাশাসক আয়েষা রানির হস্তক্ষেপে ওই দফতরটি খোলা হলেও ওইদিনই সাঁকরাইলের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। বুধবারই সাঁকরাইল ব্লকের বেশ কিছু প্রাথমিক স্কুল, জুনিয়র হাইস্কুল ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলেও তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন আদিবাসী সংগঠনটির লোকজন। স্কুলগুলি খুলতে বৃহস্পতিবার স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন ও স্কুল শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা সাঁকরাইল ব্লকের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পুলিশের সহযোগিতায় সাঁকরাইলের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরের তালা খোলা হয়। এ ছা়ড়াও আরও কয়েকটি স্কুলের তালা খোলা হয়েছে। তবে এ দিনই নয়াগ্রাম, জামবনি ও গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের মোট ৬ টি অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরে (নয়াগ্রাম, নয়াগ্রাম-১, গিধনি, গিধনি পূর্ব, তপসিয়া ও বেলিয়াবেড়া) তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। পোস্টারও সাঁটিয়ে দিয়ে লাগাতার আন্দোলনের কথা জানানো হয়েছে। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর গুলি ও স্কুল গুলির তালা ভাঙার পরে ফের তালা পড়ে। সব মিলিয়ে ২৫টি স্কুলে তালা দেওয়া হয়েছে।

লাগানো হয়েছে পোস্টারও। নিজস্ব চিত্র

পারগানা মহলের নেতা পেশায় শিক্ষক রবিন টুডুকে চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের টেনপুর হাইস্কুল থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার একটি স্কুলে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। এর পরই গত সোমবার থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতরের সামনে লাগাতার ঘেরাও-বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের ‘ঝাড়গ্রাম তল্লাট’-এর নেতা সূর্যকান্ত মুর্মু বলেন, “সাঁওতালি মাধ্যম স্কুলগুলিতে শিক্ষক নেই। অথচ ইচ্ছুক সাঁওতালি শিক্ষকদের দূরের বাংলা মাধ্যম স্কুলে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। সাঁওতালি মাধ্যম স্কুলগুলির উপযুক্ত পরিকাঠামোর দাবিতে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু হয়েছে।” ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, “সরকারি দফতর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝোলানো বেআইনি কাজ। এরকম করলে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে প্রশাসনিকস্তরে পদক্ষেপ করা হবে।”

School Administration Jungle Mahal Mamata Banerjee জঙ্গলমহল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy