Advertisement
E-Paper

দিঘা দাপাচ্ছে হনুমান, ধরতে নাকাল বন দফতর

কখনও গলার নলি চেপে ধরছে, কখনও আঁচড় বসাচ্ছে কানে, কখনও হাতে। রক্তাক্ত হচ্ছেন পর্যটক, এমনকী হোটেল ম্যানেজারও। ভরা মরসুমে সৈকত শহর দিঘা জুড়ে এখন শুধুই হনুমান আতঙ্ক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:১৬

কখনও গলার নলি চেপে ধরছে, কখনও আঁচড় বসাচ্ছে কানে, কখনও হাতে। রক্তাক্ত হচ্ছেন পর্যটক, এমনকী হোটেল ম্যানেজারও। ভরা মরসুমে সৈকত শহর দিঘা জুড়ে এখন শুধুই হনুমান আতঙ্ক।

গত সোমবার কলকাতার পর্যটক পূর্ণিমা চন্দ বাদাম খাওয়াতে গিয়ে হনুমানের হামলার মুখে পড়েন। গলার নলিতে নখ বসিয়ে গভীর ক্ষত করে দিয়েছিল হনুমানটি। ঘটনাটি ঘটেছিল নিউ দিঘার অমরাবতী পার্কের বাইরে চা দোকানে। বুধবার পার্কের ভেতরে হনুমানের আঁচড়ে কান কেটে জখম হন আর এক পর্যটক। বৃহস্পতিবারও অমরাবতী পার্ক সংলগ্ন হোটেল চত্বরে হনুমানের হানায় জখম হয়েছেন এক পর্যটক।

হনুমানের হামলায় একের পর এক পর্যটক জখম হওয়ায় নড়ে বসেছে বন দফতর। বিশেষ দল গড়ে এ দিন দিঘার বিভিন্ন এলাকায় অভিযানও চালান বনকর্মীরা। তবে হামলাকারী হনুমানটি ধরা পড়েনি। বন আধিকারিক অনির্বাণ মিত্র বলেন, “এই হনুমানটি দলছুট হয়েছে। সে জন্য হয়তো কিছুটা ছটফটে হয়ে পড়েছে। পর্যটক ও স্থানীয়রাও হনুমানটিকে নানা ভাবে উত্যক্ত করছেন। বাঁশের খোঁচা, ঢিল ছোড়ায় হনুমানটি এখন মানুষকে শত্রু ভাবতে শুরু করেছে। তাই আত্মরক্ষার জন্য হামলা চালাচ্ছে।’’ হনুমানটিকে ধরতে দরকারে ঘুম পাড়ানি গুলি ব্যবহার করবে বন দফতর।

নিউটাউনের বাসিন্দা নূর মহম্মদ সস্ত্রীক দিঘায় এসেছিলেন গত মঙ্গলবার। উঠেছিলেন ওল্ড দিঘার হোটেলে। বুধবার বিকেলে স্ত্রীকে নিয়ে অমরাবতী পার্কে বেড়াতে এলে আচমকাই হনুমানটি নূরের বাঁ কান আঁচড়ে রক্ত বের করে দেয়। দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা হয় তাঁর। এরপর আর দিঘায় থাকার ঝুঁকি নেননি ওই দম্পতি। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হোটেল বুকিং থাকলেও বুধবার রাতেই তাঁরা কলকাতা ফেরেন।

বৃহস্পতিবার সকালেও হামলা চালিয়েছে হনুমানটি। জখম হন অমরাবতী পার্কের পিছনে একটি হোটেলের ম্যানেজার গোবিন্দ জানা। সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ হোটেল ছেড়ে যাচ্ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের বাসিন্দা পল্টু চক্রবর্তী। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী বুলু চক্রবর্তী ও বছর দশকের ছেলে। তাঁদের দাবি, কোনও প্ররোচনা ছাড়াই পল্টুবাবুর ছেলের দিকে হঠাৎ তেড়ে আসে হনুমানটি। হোটেলের ম্যানেজার গোবিন্দবাবু তাঁকে বাঁচাতে গেলে তাঁর বাঁ হাতে আঁচড়ে হনুমানটি পালায়। গোবিন্দবাবুও দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছেন।

অমরাবতী পার্ক লাগোয়া চত্বরে এই হনুমান এখন সাক্ষাৎ আতঙ্ক। এ দিন পার্কে আসা বেহালার সুমন রায় বলছিলেন, ‘‘হনুমানের কথা শুনলাম। ঘুরতে এসে কে ঝামেলায় পড়তে চায়। তাই দিঘা মোহনায় চলে যাচ্ছি।’’ পার্কের সামনে বসা ফুচকা দোকানি নিত্যানন্দ জানার কথায়, “হনুমানের ভয়ে পর্যটকরা দোকানে বেশিক্ষণ দাঁড়াচ্ছেন না। আমরাও কাঁটা হয়ে রয়েছি।’’ সোনারপুরের পল্টুবাবু বলছিলেন, ‘‘আমার ছেলে তো এই যাত্রায় বেঁচে গেল। কিন্তু হনুমানটিকে দ্রুত ধরা উচিত। না হলে দিঘার আকর্ষণ কমবে।’’

Monkey Administration Digha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy