Advertisement
E-Paper

আমলা হওয়ার পাঠ দিচ্ছেন প্রশাসনিক কর্তারাই

এক সময় দোকানে সাইকেল সারানোর কাজ করতেন বরুণ জগদীশ। মহারাষ্ট্রের এই যুবক পরিশ্রম করে আইএএস পরীক্ষা দিয়ে প্রথম সারিতে স্থান দখল করেছিলেন।

আনন্দ মন্ডল

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৬ ০১:০১
তখন ক্লাস চলছে। নিজস্ব চিত্র।

তখন ক্লাস চলছে। নিজস্ব চিত্র।

এক সময় দোকানে সাইকেল সারানোর কাজ করতেন বরুণ জগদীশ। মহারাষ্ট্রের এই যুবক পরিশ্রম করে আইএএস পরীক্ষা দিয়ে প্রথম সারিতে স্থান দখল করেছিলেন।

শারীরিক প্রতিবন্ধী ইরা সিঙ্ঘল পরিশ্রম করে লেখাপড়া করার পর প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় পাশ করে আইএএস অফিসার হয়েছেন।

এগুলো কোনও কাল্পনিক গল্প নয়। বরুণ, ইরাদের বাস্তবিক জীবনের কাহিনী নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্র তুলে ধরে দর্শকদের সামনে বোঝাচ্ছিলেন আর নবীন আইএএস অফিসার রাজু মিশ্র। আর দর্শকাসনে বসে তখন কয়েকশো তরুণ-তরুণী চোখ অপলক দৃষ্টিতে আটকে সেদিকেই।

শনিবার এমন দৃশ্যের সাক্ষী রইল কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বলাকা মঞ্চ। আইএএস, আইপিএস-সহ পদস্থ অফিসার হওয়ার লক্ষ্য পূরণ করতে তরুণ-তরুণীদের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসার প্রস্তুতিতে উৎসাহ দিতে কর্মশালার আয়োজন করেছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগ। কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘প্রেরণা‘।

অনলাইন পদ্ধতিতে আবেদনের মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় ১২০০ এর বেশি তরুণ-তরুণী কর্মশালায় যোগ দিতে নাম নথিভুক্ত করেছিলেন। যোগ দিয়েছিলেন আটশোজন। শনিবার প্রথম কর্মশালায় তাঁদের হাজিরও ছিল নজরে পড়ার মতো। কর্মশালায় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসার আগে প্রস্তুতি থেকে আইএএস, আইপিএস অফিসারদের দায়িত্ব-কর্তব্য নিয়ে খুঁটিনাটি নিয়ে বোঝাচ্ছিলেন আইএ এস অফিসার তথা পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল, অতিরিক্ত জেলাশাসক রাধিকা আইয়ার, কাঁথির মহকুমাশাসক রীনা নিরঞ্জন, অ্যাসিস্ট্যান্ট কালেক্টর দিব্যা প্রমুখরা।

পদস্থ আধিকারিকদের কাছে প্রশ্ন করে অনেক বিষয় জেনে নেন তরুণ-তরুণীরা। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতির বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি তথ্যচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হয় দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকা থেকে নানা প্রতিবন্ধকতার সাথে লড়াই করে দেশের সব চেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আধিকারিক হওয়ার উত্তরণের বাস্তব কাহিনী। এমনকি আইএএস ও আইপিএস হওয়ার জন্য দিল্লি গিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে হবে এ ধারনাও ভুল বলেই জানিয়ে দেন জেলার পদস্থ আইএএস ও আইপিএস’রা।

কর্মশালায় যোগ দেওয়া প্রত্যেক তরুণ-তরুণীকে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার সিলেবাস ও প্রস্তুতির জন্য বিভিন্ন পরামর্শ সহ একটি পুস্তিকা দেওয়া হয়। জেলাশাসক রশ্মি বলেন, ‘‘কীভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে তা জানানোর জন্য ও উৎসাহ দেওয়ার জন্য এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। খুব ভাল সাড়া মিলেছে।’’

পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘এ রাজ্যে অনেক মেধাবী ছেলে-মেয়ে আছে। কিন্তু সর্বভারতীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসার ক্ষেতে এদের উৎসাহ ও সচেতনতার অভাব দেখা যা । এ বিষয়ে উৎসাহ ও ধারণা দেওয়ার জন্য কর্মশালা করা হচ্ছে।’’

এ দিন কর্মশালায় যোগ দেওয়া তমলুকের দেবপ্রীতি জানা বলেন, ‘‘আমি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু জেলার উচ্চ-পদস্থ আধিকারিকরা যে ভাবে উদাহরণ তুলে ধরে উৎসাহ দিলেন ও কিভাবে পরীক্ষা প্রস্তুতি নিতে হবে বোঝালেন তা এখানে না এলে জানতাম না।’’ কর্মশালা শেষে দমদমের প্রতীক পাল বলেন, ‘‘এতকাছ থেকে সরকারি অফিসারদের শেখানোর অভিজ্ঞতা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সারা জীবন এটা মনে থাকবে।’’ উত্তর চব্বিশ পরগণার হাবড়া থেকে আসা স্নেহাশিস মণ্ডল বলেন, ‘‘আইপিএস পরীক্ষা দিতে চাই। কিন্তু সেভাবে সাহায্য পাচ্ছিলাম না। এখানে এসে উচ্চ-পদস্থ পুলিশ অফিসারদের কাছ থেকে যা শিখলাম তাতে বেশ সুবিধে হল।’’

IAS Administrator
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy