Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বিজ্ঞাপনে মুখ ঢেকেছে যাত্রী প্রতীক্ষালয়, ভোগান্তি বাসিন্দাদের

নামেই যাত্রী প্রতীক্ষালয়। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ঘাটাল শহরের জীর্ণ প্রতীক্ষালয়গুলিতে সন্ধ্যা নামলেই বসে মদ ও জুয়ার আসর। তাই যাত্রীদের বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচেই বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। রোদ-বৃষ্টিতে সমস্যায় পড়েন প্রবীণ ও শিশুরাও।

চিহ্নই নেই বাসস্ট্যান্ডের। ঘাটালে তোলা নিজস্ব চিত্র।

চিহ্নই নেই বাসস্ট্যান্ডের। ঘাটালে তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৫ ০০:৩২
Share: Save:

নামেই যাত্রী প্রতীক্ষালয়।

দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ঘাটাল শহরের জীর্ণ প্রতীক্ষালয়গুলিতে সন্ধ্যা নামলেই বসে মদ ও জুয়ার আসর। তাই যাত্রীদের বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচেই বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। রোদ-বৃষ্টিতে সমস্যায় পড়েন প্রবীণ ও শিশুরাও। শহরের যাত্রী প্রতীক্ষালয়গুলির হাল ফেরানোর ব্যাপারে হুঁশ নেই পুরসভার। প্রতীক্ষালয়গুলির খারাপ অবস্থার কথা স্বীকার করছেন ঘাটাল পুরসভার চেয়ারম্যান বিভাসচন্দ্র ঘোষও। তিনি জানান, শহরের দু’টি যাত্রী প্রতীক্ষালয় ভেঙে নতুন করে তৈরি করা হবে। সেখানে পর্যাপ্ত আলো ও পানীয় জলের ব্যবস্থাও থাকবে। কাজের জন্য টেন্ডারও ডাকা হয়েছে।

ঘাটাল পুরসভা ১৪০ বছরের প্রাচীন। ঘাটাল মহকুমার সদর শহরও এটি। প্রতিদিন মহকুমা তথা জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ নানা কাজ নিয়ে এই শহরে আসেন। ঘাটাল শহরের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন প্রায় শতাধিক বাস চলাচল করে। বর্তমানে ঘাটাল পুরসভা এলাকায় চারটি যাত্রী প্রতীক্ষালয় রয়েছে। কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, ঘাটাল-পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ড, কুশপাতা ও ময়রাপুকুর মোড়ে এই প্রতীক্ষালয়গুলি রয়েছে। শহরের এই চারটি জায়গাতেই বেশি সংখ্যায় যাত্রী বাস ধরার জন্য ভিড় করেন। এর মধ্যে কুশপাতার যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের অবস্থা তুলনামূলক ভাল। যদিও সংস্কারের অভাবে অপরিষ্কার থাকে প্রতীক্ষালয় চত্বর। পর্যাপ্ত জায়গাও নেই প্রতীক্ষালয়ে।

শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ড ও ময়রাপুকুর স্ট্যান্ডের যাত্রী প্রতিক্ষালয়গুলির অবস্থা শোচনীয়। প্রতীক্ষালয়গুলি এখন বিভিন্ন বেসরকারি বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। অনেকক্ষেত্রে পোস্টার-হোর্ডিংয়ে প্রতীক্ষালয়ে ঢোকার রাস্তাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে পুরসভা এই যাত্রী প্রতীক্ষালয়গুলি তৈরি করেছে। কিন্তু সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় সেগুলি এখন ব্যবহারের অনুপযুক্ত।

শহরের বাসিন্দাদের আক্ষেপ, ঘাটাল মহকুমার সদর শহর হলেও শহরের সৌন্দর্যায়নের ব্যাপারে হুঁশ নেই কোনও দলের। ফলে শহরের আসা বহিরাগতদের কাছে পুরসভার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহরের একাধিক বাসিন্দাদের বক্তব্য, বর্ষাকালে যাত্রীদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ হয়। বৃষ্টিতে অপেক্ষার জন্য বাধ্য হয়ে যাত্রীদের কারোর দোকানে বা ফুটপাথের নিচে ছাউনির আশ্রয় খুঁজতে হয়। গ্রীষ্মেও রোদে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় বাসের জন্য।

শহরের কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডের প্রতীক্ষালয়টির অবস্থাও তথৈবচ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাত বাড়লেই বাড়ে সমাজবিরোধীদের দৌরাত্ম্য। ফলে মহিলাদের পক্ষে একা স্ট্যান্ডে অপেক্ষা করা সমস্যার হয়ে দাঁড়ায়। দিনের বেলায় সমস্যা কিছু কম নয়। উদাসীন প্রশাসনও। পুরসভার চেয়ারম্যান বিভাসবাবু জানান, ক্ষমতায় আসার পরেই আমরা এই সমস্যা উপলব্ধি করেছিলাম। দু’টি যাত্রী প্রতীক্ষালয় ভেঙে নতুন করে তৈরি করা হবে। সেখানে পর্যাপ্ত আলো ও পানীয় জলের ব্যবস্থাও থাকবে। শীঘ্রই এই কাজ শুরু হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE