Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Akhil Giri

অখিলের হাতেই রাশ, বার্তা সভায়

পিতা-পুত্রের এই আড়াল যে অস্বাভাবিক নয় তা মানছে রাজনৈতিক মহল। বিকল্প হিসেবে সাংসদ সৌগত রায় যে ভাবে বুধবার ডরমিটরির মাঠের সভায় অখিল গিরির নাম এনেছেন, নতুনত্ব নেই তাতেও।

—ফাইল চিত্র

—ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:৩২
Share: Save:

শান্তিকুঞ্জের এক অধিকারী শিবির বদলেছেন। তৃণমূল ছেড়ে গিয়েছেন বিজেপিতে। বাকি দুই অধিকারীও জনপ্রতিনিধি। শিশির এবং দিব্যেন্দু। দলবদলু মেজো ভাই শুভেন্দুকে বার্তা দিতে অধিকারী গড়ে সভা বুধবার সভা করল তৃণমূল। সে সভার আয়োজক জেলা তৃণমূল। বার্তা দেওয়ার সে সভায় মঞ্চ তো বটেই পোস্টার ব্যানারেও দেখা গেল না দুই সাংসদ শিশির, দিব্যেন্দুকে।

পিতা-পুত্রের এই আড়াল যে অস্বাভাবিক নয় তা মানছে রাজনৈতিক মহল। বিকল্প হিসেবে সাংসদ সৌগত রায় যে ভাবে বুধবার ডরমিটরির মাঠের সভায় অখিল গিরির নাম এনেছেন, নতুনত্ব নেই তাতেও। এ সবই পরিকল্পনার অংশ। তবু এত কিছুর পরও থাকছে প্রশ্ন। জেলার অন্য জায়গার কথা যদি বাদও দেওয়া যায়, শুধুমাত্র কাঁথিতেই কি প্রভাবে অধিকারীদের কাছাকাছি পৌঁছতে পারবেন অখিলরা! এ দিন সভার আগে পদযাত্রা করেছেন তৃণমূলকর্মীরা। অধিকারীদের বাড়ি ‘শান্তিকুঞ্জ’র কাছাকাছি জায়গা থেকে শুরু হয়েছিল সেই পদযাত্রা। সভা হোক বা পদযাত্রা। দু’টি কর্মসূচিতেই অবশ্য এ দিন অখিলের নিয়ন্ত্রণ ছিল স্পষ্ট। কাঁথি শহরে এবং পার্শ্ববর্তী তিনটি ব্লক থেকে প্রচুর কর্মী-সমর্থক তৃণমূলের কর্মসূচিতে যোগ দেন। এবার তাহলে গুরুত্ব বাড়ছে? অখিল বলছেন, ‘‘দল যা দায়িত্ব দেবে তাই করব।’’

শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে এ দিনের কর্মসূচি ছিল শাসক দলের কাছে 'চ্যালেঞ্জ'। সৌগত, ফিরহাদেরা একটি ছত্রে ছত্রে শুভেন্দুর দিকে সে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। দলত্যাগের আগে পরে শুভেন্দু যে যে প্রসঙ্গ তুলে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে তৃণমূলের সমালোচনা করেছেন, প্রতিটিরই জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন দুই নেতা। বোঝানোর চেষ্টা শুভেন্দু ছাড়াও কাঁথি তথা পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূল শক্তিশালী। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের মুখ হিসেবে সুফিয়ানকেও প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা হয়েছে। সৌগতকে বলতে শোনা গেল, ‘‘নন্দীগ্রামের আন্দোলন সুফিয়ানদের মতো স্থানীয় নেতারাই করেছেন। আমরা বাইরে থেকে গিয়ে পাশে থেকেছি। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি নন্দীগ্রামে না যেতেন তবে সেখানকার আন্দোলন ভারতব্যাপী ছড়িয়ে পড়ত না।’’ পরিবারতন্ত্র নিয়ে শুভেন্দুর তোলা অভিযোগ ফিরিয়ে দিয়ে ফিরহাদ বলেছেন, ‘‘২০০১-এ টিকিট পেয়েছিলেন। ২০০৪, ২০০৬ সালে টিকিট পেয়েছিলেন। কোনও আন্দোলন করে নয়। শুধুমাত্র শিশির অধিকারীর ছেলে বলেই আপনাকে টিকিট দিয়েছিল দল।’’

শিশির, দিব্যেন্দুর অনুপস্থিতি নিয়ে আলোচনা শুরু হলেও তাকে যে রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব আমল দিতে নারাজ তা স্পষ্ট এ দিনের সভায়। সৌগত বলেন, ‘‘মঞ্চে কোন নেতা এলেন, আর কে এলেন না, সেটা বড় কথা নয়। বুধবার কাঁথিতে সর্বকালীন সবচেয়ে বড় কর্মসূচি করেছে তৃণমূল। রাজ্য নেতৃত্বে নির্দেশে এই কর্মসূচির আয়োজন করেছিল অখিল গিরি।’’

শুভেন্দুর ঘরে উঠোনে এসে তাঁকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন তৃণমূল নেতারা। শুভেন্দু কি তার পাল্টা দেবেন? কারণ, আজ, বৃহস্পতিবার তৃণমূলের পাল্টা পদযাত্রা করবে বিজেপি। একইসঙ্গে কাঁথি শহরের সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে জনসভা করবে তারা। সেখানে শুভেন্দু ছাড়াও যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খান খাঁ এবং মহিলা মোর্চা সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল হাজির থাকতে পারেন বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে।

অধিকারী পরিবারের মেজো ছেলে শাহি মঞ্চে উঠতে কার্যত যুদ্ধক্ষেত্র কাঁথি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Akhil Giri TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE