প্রতীকী ছবি।
তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ যেন থামতেই চাইছে না তমলুক শহরে। সম্প্রতি আর্থিক দুর্নীতির তিরে বিদ্ধ পুরপ্রধান। এর মধ্যেই সরকারি প্রকল্পে অন্যের বাড়ি তৈরির বরাদ্দ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের হল তৃণমূলের কাউন্সিলর, তাঁর স্বামী এবং তৃণমূলের তমলুক শহর সভাপতির বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, তমলুক পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চামেলি সামন্ত, তাঁর স্বামী কালীপদ সামন্ত এবং শহর তৃণমূলের সভাপতি দিব্যেন্দু রায়ের বিরুদ্ধে বুধবার বিকেলে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন শেখ হাসিবুল নামে এক ব্যক্তি। পায়রাটুঙ্গিচর এলাকার বাসিন্দা পেশা মাছ ব্যবসায়ীর অভিযোগ, তাঁর নামে বরাদ্দ বাড়ি তৈরির টাকা আত্মসাৎ করেছেন ওই তিনজন।
হাসিবুল জানান, সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য ২০১৬ সালে তাঁর নামে অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল। সেই টাকা পাওয়ার জন্য কাউন্সিলর চামেলি, কালীপদ এবং তৃণমূল নেতা দিব্যেন্দুর কথামত কিছু কাগজ পত্রে সই করেছিলেন। হাসিবুল বলেন, ‘‘ওঁরা তমলুক শহরের মানিকতলায় একটি ব্যাঙ্কের শাখায় অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু আমার ব্যাঙ্কের পাসবই, চেক বই নিজেদের কাছে রেখে দেন।’’ হাসিবুলের অভিযোগ, টাকার পরিমাণ উল্লেখ না করা থাকা ১৯টি চেকে তাঁর সই করিয়ে নেন ওই তিনজন। কিন্তু এর পরেও তিনি বাড়ি তৈরির টাকা পাননি। দাবি, টাকা চাইতে গেলে জানানো হয়, টাকা আসেনি।
হাসিবুল বলেন, ‘‘আমার কাছে ব্যাঙ্কের পাসবই না থাকায় বরাদ্দ টাকা এসেছে কি না, জানতে পারিনি। শুভানুধ্যায়ীদের সাহায্যে কয়েকদিন আগে ব্যাঙ্কে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, আমার সই চেক ব্যবহার করে টাকা তোলা হয়েছে। আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে ওঁরা বাড়ি তৈরির টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এর সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদের শাস্তি চাইছি’’
উল্লেখ্য, এই চামেলির বিরুদ্ধেই দিন কয়েক আগে তাঁর এক প্রাক্তন পরিচারিকা একই অভিযোগ দায়ের করেছিলেন থানায়। সেবারও চামেলির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি পাসবই আটকে রেখে আর্থিক দুর্নীতি করেছেন। আর দিব্যেন্দুর বিরুদ্ধে পুরসভার জমিতে বেআইনি ভাবে বাড়ি তৈরির অভিযোগ রয়েছে।
হাসিবুলের অভিযোগ অস্বীকার করে দিব্যেন্দু বলেন, ‘‘তিন বছর আগে সরকারিভাবে বরাদ্দ অর্থ তুলে ওই ব্যক্তি নিজেই বাড়ি তৈরি করেছেন। এতদিন টাকা না পেলে আগে অভিযোগ জানাননি কেন। বিজেপির মদতে এখন এইসব মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’’ চামেলির বক্তব্য, ‘‘ওই ব্যক্তি বাড়ি তৈরির টাকা পাওয়ার বিষয়ে নিজেই পুরসভার অফিসে গিয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। আমাদের কাছে পাসবই থাকার অভিযোগ ভিত্তিহীন। বিজেপির লোকজন ষড়যন্ত্র করে এই সব অভিযোগ করিয়েছে।’’
বিজেপির তমলুক নগর মণ্ডল সভাপতি মধুসূদন প্রামাণিক বলেনস ‘‘বাড়ি তৈরির প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়ে আমরা পুরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। তাতে পুরসভা কোনও পদক্ষেপ করেনি। তাই এখন হাসিবুলের মতো বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন। বিজেপি’র ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’ পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেন অবশ্য বলেন, ‘‘আমার কাছে এবিষয়ে কোনও অভিযোগ আসেনি।’’ তমলুক থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের তদন্ত করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy