Advertisement
২২ মার্চ ২০২৩
Khejuri

ভাগের মায়ের ঠাঁই শ্মশান লাগোয়া গাছতলায়

সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক ভাবে ওই বৃদ্ধার কথা জানতে পেরে তাঁরা তাঁর হাতে শীতবস্ত্র তুলে দিয়েছেন। পরে তিনি একটি ত্রিপল দেওয়ার কথা বলেছিলেন।

ঝুপড়ি ঘরে রয়েছেন সাবিত্রী দেবনাথ। নিজস্ব চিত্র

ঝুপড়ি ঘরে রয়েছেন সাবিত্রী দেবনাথ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খেজুরি শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:১৪
Share: Save:

উঁচ নিচু জমিতে হুমড়ি খাওয়া ঘর। ঘর নয়, আসলে মাথা গোঁজার ঠাঁই। সেই ঠাঁইয়ের ছাউনি পুরনো হয়ে যাওয়া খড়। যাতে ঝরে না পড়ে সে জন্য খড়ের উপরে ত্রিপল চাপানো। ছাউনিতে ঢোকার জায়গায় কোনও আগল নেই। তেরচা সেই তথাকথিত দরজার চারপাশে ঝুলছে গোটা কতক ব্যাগ। পুরো ছাউনি খাড়া করে রাখতে বহু দড়ি বাঁধা। এই ঝুপড়ি ঘরেই থাকেন সাবিত্রী দেবনাথ। বয়স ৭৯ বছর। পাঁচ ছেলের মা তিনি। কিন্তু ঠাঁই হয়েছে শ্মশানের ধারে গাছের নীচে।

Advertisement

সাবিত্রী দেবনাথের বাড়ি খেজুরি ১ ব্লকের বীরবন্দর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত দেউলপোতা গ্রামে। এখন তাঁর ঠাঁই হয়েছে কামারদা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত গড় কচুরি ধোবা পুকুর শ্মশান সংলগ্ন মাঠে। জঙ্গলের ভিতরে এক চিলতে ঝুপড়ি বাড়িতে। এই আশ্রয়েই রাত দিন বৃদ্ধা বেঁচে থাকার লড়াই চালাচ্ছেন। রেশনের চাল, গম, আটা আর বার্ধক্য ভাতার টাকাই তাঁর জীবনের শেষ সম্বল।

এক সময়ে সব ছিল বৃদ্ধার। তিল তিল করে গড়েছিলেন সংসার। তাঁর পাঁচ সন্তান। সরকারি ভাবে বাড়ি তৈরির টাকাও পেয়েছিলেন। সেই বাড়ি তৈরি হয়েছে। কিন্তু সেখানে থাকার সুযোগ পাননি সাবিত্রী দেবনাথ। বৃদ্ধা বলছেন, ‘‘ছেলেরা সব সম্পত্তি লিখে নিয়েছে। পরে বাড়িঘর বানিয়ে সেখানেই তারা থাকে। আমাকে এক ছেলে সেখানে একটা ছোট্ট ঘর করে দেবে বলেছিল। কিন্তু বাকিরা তাকেও অত্যাচার করেছে।’’ মাথার উপরের ছাদ আর সহায় মেলা এখন সাবিত্রীর স্বপ্ন। ফেলে আসা সংসারের স্মৃতি আঁকড়ে বেঁচে রয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি দেউলপোতা গ্রামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সাবিত্রীকে শীতবস্ত্র এবং ত্রিপল দিয়েছে। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক ভাবে ওই বৃদ্ধার কথা জানতে পেরে তাঁরা তাঁর হাতে শীতবস্ত্র তুলে দিয়েছেন। পরে তিনি একটি ত্রিপল দেওয়ার কথা বলেছিলেন। চাহিদা মতো তাঁর কাছে ত্রিপলটুকু পৌঁছে দেওয়া হয়।

Advertisement

অসহায় বৃদ্ধাকে বাড়িতে ফেরানোর জন্য প্রশাসনের তরফে কোনওরকম উদ্যোগী হয়নি বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। কিন্তু কেন? এ প্রসঙ্গে খেজুরি ১-এর বিডিও পার্থ হাজরা বলেন, ‘‘ঘটনাটি প্রথমবার শুনলাম। প্রশাসনিক ভাবে বাড়ি ফেরানোর জন্য যথাসম্ভব চেষ্টা করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.