দাসপুরে শ্বশুরবাড়ির সামনে মৌমিতা। নিজস্ব চিত্র
যমজ কন্যা সন্তান হয়েছিল। তারপরই সদ্যোজাত দুই শিশু কন্যা-সহ এক তরুণীকে শ্বশুরবাড়ি থেকে বার করে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। বুধবার কাকভোরে যমজ সেই কন্যাদের নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে এসে ধর্নায় বসলেন ওই তরুণী।
এ দিন সকালে ওই খবর চাউর হতেই দাসপুর থানার বেলেঘাটায় হইচই শুরু হয়ে যায়। মহিলার দাবি, তিনি শ্বশুরবাড়িতে ফিরতে চান। তাঁর কন্যাদের দায়িত্ব নিক স্বামী। খবর পেয়ে পৌঁছয় পুলিশ। শেষপর্যন্ত শ্বশুরবাড়ির দরজা না খোলায় মেয়েদের নিয়ে ফিরে যান ওই তরুণী।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর দশেক আগে দাসপুর থানার বেলেঘাটার যুবক বিদ্যুৎ ঘোড়ুইয়ের সঙ্গে স্থানীয় কুমারচক গ্রামের মৌমিতার বিয়ে হয়। বিদ্যুৎ পেশায় স্বর্ণশিল্পী। দিল্লিতে থাকেন। বছর ছয়েক আগে ওই ঘোড়ুই দম্পতির যমজ কন্যা হয়। মৌমিতার অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই স্বামীর অত্যাচার শুরু হয়েছিল। যমজ কন্যা সন্তান হওয়ার পর অত্যাচার আরও বেড়ে যায়। অভিযোগ, মারধরের পাশাপাশি মানসিক অত্যাচারও হতো। মৌমিতার দাবি, স্বামীর মদতে শ্বশুরবাড়ির লোকজন অত্যাচার চালাতেন। সদ্যোজাত দুই কন্যা সন্তানের উপরও চলত অত্যাচার। একসময় যমজ কন্যা সন্তান-সহ ওই তরুণীকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়ি থেকে বার করে দেন বলে অভিযোগ।
এ দিন কাকভোরে মৌমিতা দুই মেয়েকে নিয়ে সটান শ্বশুরবাড়ির দরজায় এসে বসে পড়েন। শ্বশুরবাড়িতে ফিরতে দরজায় কড়া নাড়েন। তরুণীর সঙ্গে ছিলেন তাঁর বাবা ও মা। মৌমিতার চিৎকারে পড়শিরা জড়ো হন। এক সময় পাশাপাশি গ্রামের লোকজনও ছুটে আসেন। খবর পেয়ে পৌঁছয় দাসপুর পুলিশ। পুলিশ দরজা খোলার জন্য ডাকাডাকি করে। কিন্তু পুলিশকেও শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানিয়ে দেন, আদালতের নথি থাকলে দরজা খোলা হবে। ফিরে যায় পুলিশ। মৌমিতাও দুই মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি ফিরে যান। মৌমিতা বলেন, ‘‘যমজ কন্যা সন্তান হওয়ার জন্য আমাকে শ্বশুরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। আমি এখন অসহায়।বাপের বাড়িতে থাকি। কন্যাদের মানুষ করতে পাচ্ছি না। আমি শ্বশুরবাড়ি ফিরতে চাই।”
পুলিশ জানতে পেরেছে, তরুণীর স্বামী নাকি ফের বিয়ে করেছেন। কর্মসূত্রে তিনি ভিন্ রাজ্যে থাকেন। স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ির বিরুদ্ধে কয়েক বছর আগে ওই তরুণী থানায় মামলা করেন। সেই মামলা চলছে। এ দিনের ঘটনার পর অবশ্য পুলিশের কাছে তরুণীর কোনও লিখিত অভিযোগ করেননি। শ্বশুরবাড়ির কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy