মায়ের সঙ্গে অনির্বাণ। নিজস্ব চিত্র
এই মুহূর্তে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম পরিচিত মুখ তিনি। অনির্বাণ ভট্টাচার্য। থিয়েটার, ধারাবাহিক, ওয়েব সিরিজ, সিনেমা— সর্বত্রই সমান বিচরণ তাঁর। কৈশোর পার করেছেন বহু বছর হয়ে গিয়েছে। কিন্তু শনিবার মেদিনীপুরের এসে সেই ছোটবেলার নস্ট্যালজিয়াতেই ভাসলেন অভিনেতা!
শনিবার মেদিনীপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘মেদিনীপুর লিটারেরি মিট’। মেদিনীপুরের তরুণ কবিদের উদ্যোগে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাঘরে এই মিটের আয়োজন করা হয়। সেখানেই উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অনির্বাণ। অভিনেতার আসল বাড়ি শহরের শরৎপল্লিতে। মেদিনীপুরের বিধাননগর-শরৎপল্লিতেই তাঁর ছোটবেলা কেটেছে। এক সময় বিধাননগরের মাঠে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাও দিয়েছেন। ঘুরে বেড়িয়েছেন পাড়ার অলিগলিও। মাধ্যমিক দিয়েছেন নির্মল হৃদয় আশ্রম থেকে (চার্চ স্কুল)। এবং বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ (বালক) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক। তারপর রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শুরু করেন। প্রসঙ্গত, কলকাতায় যাওয়ার পরই থিয়েটারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এর পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
‘মেদিনীপুর লিটারেরি মিট’এ অংশ নেওয়ার জন্য অনির্বাণকে প্রায় একমাস আগে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু প্রথমে তিনি উপস্থিত থাকতে রাজি হননি। অনির্বাণের কথায়, ‘‘স্কুল জীবনে আবৃত্তি করতাম, স্কুলের অনুষ্ঠান সঞ্চালনাও করেছি। তবে অভিনেতা তকমাটা পাওয়ার পর মেদিনীপুরে এসে কিছু বলিনি। তবে কলকাতায় কিছু সেমিনারে, সভায় অংশ নিয়েছি। এই অনুষ্ঠানে আসতে প্রথমদিকে কিছুটা নিমরাজিই ছিলাম!’’ কিন্তু কেন? অনির্বাণের উত্তর, ‘‘কবিতা বা সাহিত্য উৎসবের উদ্বোধনে সিনেমার অভিনেতার দরকার হবে কেন? তবে আমার কাছে এটা একটা আগ্রাসনের মতো। অনেকে বলতেই পারেন— এটা আগ্রাসন নয়, এটা মেলবন্ধন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, আমাদের সমাজ সিনেমা, চিত্রশিল্প, থিয়েটার, কবিতা— প্রতিটা বিষয়কেই আলাদা আলাদা দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে। এর মধ্যে কোনও সম-বন্টন নেই।’’
এরপর মেদিনীপুর শহরের প্রসঙ্গে ঢোকেন অনির্বাণ। অভিনেতা বলেন, ‘‘এই শহরটার একটা লম্বা ইতিহাস আছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস আছে। শিল্পের, কারুকার্যের, লোকশিল্পের ইতিহাস আছে। মেদিনীপুর খুবই ঋদ্ধ একটা শহর।’’ অভিনেতার অনেক গুণমুগ্ধ তাঁর সঙ্গে নিজস্বী তোলার আবদার নিয়ে এগিয়ে এলেও, তাঁদের কেবল অভিনেতার অটোগ্রাফ নিয়েই ফিরতে হয়েছে। নিজস্বী বদলে অটোগ্রাফ কেন? অনির্বাণের কথায়, ‘‘আমি নিজস্বী-বিরোধী নই। তবে সব সময় নিজস্বী তোলার যুক্তিযুক্ত কোনও কারণও খুঁজে পাই না।’’ এক উৎসাহীর প্রশ্ন, ‘‘আপনি থিয়েটার করাটা কমিয়ে দিলেন কেন?’’ অনির্বাণের সাফ উত্তর, ‘‘থিয়েটার তো ছাড়িনি! আগামী ২১ তারিখও শো আছে। আসলে থিয়েটার করে টাকা হয় না, সিনেমা করেই টাকা হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy