Advertisement
১১ মে ২০২৪

সবংয়ে আক্রান্ত কংগ্রেস, মানসের বার্তা ভারতীকে

তৃণমূলের সভার পতাকা লাগানো নিয়ে গোলমাল চলছিল। কংগ্রসের এক কর্মী জখম হয়েছিলেন। সভার পরে ফের হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে সবংয়ের বলপাই গ্রাম পঞ্চায়েতের পেরুয়া গ্রামে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৬ ০০:৪৩
Share: Save:

তৃণমূলের সভার পতাকা লাগানো নিয়ে গোলমাল চলছিল। কংগ্রসের এক কর্মী জখম হয়েছিলেন। সভার পরে ফের হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে সবংয়ের বলপাই গ্রাম পঞ্চায়েতের পেরুয়া গ্রামে। রবিবার বলপাইতে তৃণমূলের সভার পরেই শাসক দলের লোকজন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকের বাড়িতে ঢুকে হুমকি দিয়েছে ও মারধর করেছে বলে অভিযোগ। গত ২ জানুয়ারি পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে এলাকার কংগ্রেস কর্মী শঙ্কর মাইতিকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল। তিনি সবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কংগ্রেসের অভিযোগ, তাদের দলীয় কর্মীদের জোর করে তৃণমূল ওই সভায় নিয়ে যাওয়ার চাপ দিলেও কংগ্রেস কর্মীরা যাননি। তাই হামলা বলে অভিযোগ।

ওই ঘটনায় সরব হয়েছে কংগ্রেস। এ দিন সকালে খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষকে এসএমএস করে ঘটনার বিহিত চেয়েছেন সবংয়ের কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। পুলিশ কোনও অভিযোগ নিচ্ছে না বলেও তিনি এসএমএস বার্তায় জানিয়েছেন। মানসবাবু বলেন, ‘‘গত চার দিন ধরে পেরুয়া গ্রামে কংগ্রেস কর্মীদের উপর অত্যাচার চলছে। একজন জখম হয়েছেন। আমাদের কর্মীরা পুলিশকে জানালেও সবং থানা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। আমি তাই বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে এসএমএস করে জানিয়েছি।’’

তবে এই বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। আর এ দিন দুপুরে খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্ত বলেন, ‘‘আমার ঘটনাটি জানা নেই। কোনও এসএমএস আমি এখনও দেখিনি। তবে খোঁজ নেব। অভিযোগ হলে নিশ্চয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

জেলায় একমাত্র সবং ব্লকেই কংগ্রেসের দাপট দীর্ঘদিনের। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও এখানে পঞ্চায়েত সমিতি-সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী হয় কংগ্রেস। বলপাই পঞ্চায়েতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। ১৫টি আসনের ৮টি দখল করে তৃণমূল। আর ৭টিতে জেতে কংগ্রেস। পরে কংগ্রেসের দু’জন পঞ্চায়েত তৃণমূলে যোগ দেয়। তবে পেরুয়া গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য কংগ্রেসেরই। ওই গ্রামে সিপিএম থেকে মুখ ঘুরিয়ে বহু মানুষ কংগ্রেসের এসেছে বলে খবর। ফলে বিষয়টি তৃণমূলকে ভাবাচ্ছে। রবিবার বলপাই হাইস্কুলের ময়দানে তৃণমূলের সভা ছিল। শনিবার সেই কারণে পেরুয়ায় পতাকা লাগাচ্ছিল তৃণমূল। তখন কংগ্রেসের পতাকা ফেলে দিয়ে তৃণমূল পতাকা লাগানোয় উত্তেজনা ছড়ায়। বাড়ি ফেরার পথে আক্রান্ত হন কংগ্রেস কর্মী শঙ্কর মাইতি। তাঁকে ভর্তি করা হয় সবং গ্রামীণ হাসপাতালে। সোমবার শঙ্করবাবু বলেন, “শনিবার বাড়ি ফেরার সময়ে তৃণমূল কর্মীরা ঘিরে ধরে। আমি ওদের পতাকা ছিঁড়ে দিয়েছি দাবি করে তৃণমূল কর্মীরা মারধর করে। পালাতে গিয়ে পড়ে যাই। বুকে-পায়ে চোট লেগেছে।’’

কংগ্রেসের অভিযোগ, বিষয়টি থানায় জানিয়েও সুফল মেলেনি। যদিও থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি বলে পাল্টা দাবি করেছে সবং পুলিশ। রবিবার তৃণমূলের সভায় কংগ্রেস কর্মীরা কেন যায়নি তা নিয়ে এ দিন ফের উত্তেজনা ছড়ায় গ্রামে। দুর্গাপদ চন্দ, দুলাল মহাপাত্র-সহ কয়েকজন কংগ্রেস কর্মীর বাড়িতে হামলা হয় বলে অভিযোগ। এক কংগ্রেস কর্মীর স্ত্রীর শ্লীলতাহানি করা হয় বলেও অভিযোগ।

কংগ্রেসের সবং ব্লক সভাপতি অমল পণ্ডার কথায়, ‘‘তৃণমূল চাইছে সকলকে জোর করে তৃণমূলে যোগ দেওয়াতে। সবং বিরোধী শূন্য করতে ব্লকের সর্বত্র সন্ত্রাস চলছে।পুলিশ সব জেনেও নীরব।’’তবে এ দিনের ঘটনার পরে বিকেল পর্যন্ত কংগ্রেস কর্মীরা থানায় লিখিত কোনও অভিযোগ করেনি। স্থানীয় কংগ্রেস পঞ্চায়েত সদস্য সঞ্জয় বেরা বলেন, ‘‘বাড়ি থেকে বেরোতে লোকজন ভয় পাচ্ছে। তাই ওঁদের থানায় নিয়ে গিয়ে অভিযোগ করাতে সময় লাগছে।’’

তৃণমূলের স্থানীয় নেতা তথা জেলা কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতির অবশ্য বক্তব্য, “কংগ্রেস প্রচারের আলোয় আসতে এ সব অভিযোগ করছে। পেরুয়ায় এ ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sobong congress attacked manas
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE