Advertisement
২৮ মার্চ ২০২৩
Panskura

প্রত্যন্ত গ্রামেই ‘বাজি হাব’

পাঁশকুড়া থানা থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সাধুয়াপোতা গ্রাম। পাঁশকুড়া শহর থেকে তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়ক ধরে ১০ কিলোমিটার গেলেই পুরুষোত্তমপুর বাজার পড়বে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দিগন্ত মান্না
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২২ ০৮:২৯
Share: Save:

বাজার থেকে নেমে গিয়েছে ঢালাই রাস্তাটা। প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ সেই রাস্তাটা যেখানে শেষ, সেখান থেকে আর মোটরবাইক চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। ইট বিছানো উঁচু-নিচু রাস্তাটা ধরে প্রায় ৩০০ মিটার যাওয়ার পরে দেখা যাবে শ্রীকান্ত ভক্তার বাড়ি। যেখানে মঙ্গলবার বাজি বিস্ফোরণে দু’জনের মৃত্যুর পরে প্রশ্ন উঠছে পুলিশের নজরদারির ভূমিকা নিয়ে। প্রশ্ন উঠছে, প্রত্যন্ত ও কার্যত অগম্য এলাকা এবং থানা থেকে দূরত্বের কারণেই কী এলাকা হয়ে উঠছে ‘বাজির হাব’!

Advertisement

পাঁশকুড়া থানা থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সাধুয়াপোতা গ্রাম। পাঁশকুড়া শহর থেকে তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়ক ধরে ১০ কিলোমিটার গেলেই পুরুষোত্তমপুর বাজার পড়বে। সেখান থেকে ডান দিকে গ্রামীণ সড়ক ধরে সাড়ে ৫ কিলোমিটার এগোলে রয়েছে পূর্ব চিল্কা গ্রাম। পূর্ব চিল্কা বাজার থেকে কিছুটা গেলেই সাধুয়াপোতা বাজার। ওই বাজারেই রয়েছে শ্রীকান্তর বাজি বিক্রির দোকান। তবে বাজার থেকে তাঁর বাড়ি যাওয়ার রাস্তার যা হাল, তা কার্যত গাড়ি চলাচলের অগম্য। বাড়ির একদিকে মাঠ। অন্যদিকে পুকুর, ডোবা এবং জঙ্গল। রাস্তার দু’ধারে রয়েছে ঘিঞ্জি বসতি। অভিযোগ, বেআইনি বাজি কারবার চালানোর জন্য এই ভৌগলিক অবস্থান সুবিধা দিয়েছিল শ্রীকান্তকে। তাই প্রায় কয়েক দশক ধরে তিনি ওই কারবার চালিয়ে গিয়েছেন।

২০১১ সালে শ্রীকান্তর বাড়ির অদূরে একটি বাড়িতে বাজি তৈরির সময় বিস্ফোরণে মারা গিয়েছিল দু'জন। সে ঘটনা থেকে শ্রীকান্ত অবশ্য শিক্ষা নেননি। এ দিনের বিস্ফোরণের পর দেখা যায় শ্রীকান্তের বাড়ির রান্নাঘর, সিঁড়ির নীচ, বাথরুমের সামনের অংশে প্রচুর শক্তিশালী শব্দবাজি এবং বাজি তৈরির সামগ্রী মজুত রয়েছে। এমনকী, বিস্ফোরণের পর পুলিশ আসার আগে বিপুল পরিমাণ শব্দবাজি ও বাজি তৈরির সামগ্রী বাড়ির অদূরে একটি জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়েও রাখা হয়েছিল। শ্রীকান্তর বিরুদ্ধে স্থানীয়দের গুরুতর অভিযোগ হল, এলাকার নাবালক স্কুল পড়ুয়াদের দিয়ে তিনি বাজি তৈরি এবং প্যাকেটজাত করার কাজ করাতেন। এ দিনের বিস্ফোরণে প্রদীপ সামন্ত নামে স্কুল পড়ুয়ার মৃত্যুর পর সে অভিযোগ আরওজোরদার হয়েছে।

স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, কোনও ক্রেতা বড় বরাত দিতে এলে সাধুয়াপোতা বাজারে নিজের দোকানের সামনের রাস্তায় বাজির ‘ট্রায়াল’ তাঁদের দেখাতেন শ্রীকান্ত এবং তাঁর ছেলেরা। সেই শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে উঠতেন স্থানীয়েরা। এলাকায় এর আগে পুলিশি অভিযান হলেও শ্রীকান্তর দোকানে কখনও তল্লাশি হত না বলেও অভিযোগ। দূরত্বের কারণে নজরদারির অভাবের অভিযোগ কিছুটা হলেও স্বীকার করছে পুলিশ। পাঁশকুড়া থানার এক আধিকারিক জানান, পাঁশকুড়া থানা থেকে ওই এলাকার দূরত্ব অনেক। তবুও নজরদারি চালানো হয়। তা আরও জোরদার করতে ওই এলাকায় একটি পুলিশ শিবির গড়তে আমরাউদ্যোগী হয়েছি।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.