Advertisement
E-Paper

বন্ধ আউটডোর, ফাঁকা শয্যা

বৃহস্পতিবার রাতে জরুরি বৈঠকে বসে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)-এর মেদিনীপুর শাখা। সেখানে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে সংহতি জানিয়েই মেদিনীপুর মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার আর্জি জানানো হবে বলে ঠিক হয়।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৯ ০০:০৯
মেডিক্যালে ফাঁকা শয্যা। নিজস্ব চিত্র

মেডিক্যালে ফাঁকা শয্যা। নিজস্ব চিত্র

জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার আবেদন জানালেন সিনিয়র ডাক্তাররা।

বৃহস্পতিবার রাতে জরুরি বৈঠকে বসে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)-এর মেদিনীপুর শাখা। সেখানে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে সংহতি জানিয়েই মেদিনীপুর মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার আর্জি জানানো হবে বলে ঠিক হয়। তবে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, কর্মবিরতি চলবে। শুক্রবার হাসপাতাল চত্বরে এক নতুন ফেস্টুন টাঙিয়ে জুনিয়র ডাক্তাররা দাবি করেন, ‘ডাক্তারদের আন্দোলনের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর হুমকির বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে।’ অবস্থান-বিক্ষোভও করেন তাঁরা। হাসপাতাল চত্বরে মিছিলও করেন তাঁরা। পাল্টা বিক্ষোভ করেন রোগীর পরিজনেরাও।

জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগ এ দিন খোলা ছিল। তবে পরিষেবা ব্যহত হয়। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এ দিনও মাঝেমধ্যেই ডাক্তারের খোঁজে দিশাহারা হয়ে ছোটাছুটি করতে দেখা গিয়েছে রোগীর পরিজনেদের। মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডুর দাবি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার সব রকম চেষ্টা চলছে। মৃতদের পরিজনেদের একাংশের নালিশ, ঠিকঠাক চিকিৎসা হয়নি বলেই এই মৃত্যু। মেডিক্যালের এক সূত্রের অবশ্য বক্তব্য, এখানে গড়ে ৩- ৪ জন রোগীর মৃত্যু হয়ই। মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, ‘‘অভিযোগ এলে নিশ্চিতভাবেই খতিয়ে দেখা হবে।’’ হাসপাতাল সূত্রের বক্তব্য, চিকিৎসার গাফিলতিতে মৃত্যুর অভিযোগ আসেনি।

কর্মবিরতির প্রভাব পড়েছে হাসপাতালের অন্তর্বিভাগেও। কমতে শুরু করেছে রোগীর সংখ্যা। মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু মানছেন, ‘‘হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা খানিক কমেছে।’’ দিন কয়েক আগেও হাসপাতালের মেঝেতে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। শুক্রবার সেই মেঝেই ছিল শুনশান। হাসপাতালের এক সূত্রে খবর, সাধারণত যে ওয়ার্ডে ৬০-৭০ জন রোগী ভর্তি থাকেন, এখন সেই ওয়ার্ডে ৪০- ৫০ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন

আইএমএ-এর মেদিনীপুর শাখার সভাপতি তারাপদ ঘোষ বলেন, ‘‘এনআরএসের ঘটনা নিন্দনীয়। আমরাও দোষীদের শাস্তি চাইছি। তবে চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক করাও জরুরি।’’ আইএমএ-র জেলা সম্পাদক কৃপাসিন্ধু গাঁতাইতও জানান, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে সমর্থন রয়েছে। কিন্তু রোগীদের চিকিৎসা করাটাও দায়বদ্ধতা। সেটাও এড়িয়ে যাওয়া যায় না। বিজেপির জেলা সম্পাদক অরূপ দাস বলেন, ‘‘জুনিয়র ডাক্তারদের দাবিগুলির প্রতি আমাদের সমর্থন রয়েছে। তবে হাসপাতালে পরিষেবা এই ভাবে ব্যাহত হতে পারে না। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছি।’’ জেলা কংগ্রেস সভাপতি সৌমেন খানের কথায়, ‘‘হাসপাতাল- কর্তৃপক্ষ কেন পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন না বুঝতে পারছি না!’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতিও বলেন, ‘‘আমরা চাই হাসপাতালের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক।’’

কর্মবিরতির প্রভাব মূলত পড়েছে মেডিক্যাল কলেজগুলোতেই। অন্যান্য হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তার না থাকায় সেখানে পরিষেবা মোটের ওপরে সচল রয়েছে। অনেকে আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েও রোগী দেখেছেন। ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এ দিন চিকিৎসকেরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক করেন। বিকেলে মিছিল করে মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের দাবি, হাসপাতাল স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প চালু করতে হবে। বাড়াতে হবে নিরাপত্তা কর্মীর সংখ্যা। দাবি মানা না হলে তাঁরা পদত্যাগের পথে যেতে পারেন বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। ঘাটালের মহকুমাশাসক অসীম পালের আশ্বাস, চিকিৎসকেরা স্মারকলিপি দিয়েছেন। নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।

এ দিন এনআরএস কাণ্ড নিয়ে দাসপুরের তেমোহানি ঘাট থেকে সেকেন্দ্রারি বারাসত ময়দান পর্যন্ত মৌনী মিছিল করে বিজেপি।

Health Midnapore Medical College Doctor's Strike
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy