প্রতীকী ছবি।
রোদ উপেক্ষা করেই সকাল থেকে বুথের সামনে লম্বা লাইন। সময় বিকেল ৫টা গড়ালেও সেই লাইন কমার বদলে আরও দীর্ঘতর। ভোটের সময় শেষ হতেই লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদের হাতে স্লিপ ধরানো হয়। দিনের শেষে অবশ্য প্রশাসন জানাচ্ছে, গতবারের থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরে ভোটার হার কমেছে বেশ খানিকটা।
পশ্চিম মেদিনীপুরে ভোটার সংখ্যা ৩১ লক্ষ ৪৩ হাজার ৭১৯ জন। এর মধ্যে এ বার পঞ্চায়েত ভোটে ভোট দিয়েছেন ২৬ লক্ষ ২৭ হাজার ৮০০ জন। অর্থাৎ, ৮৩.৫৯ শতাংশ। আর ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৮৫.৯০ শতাংশ।
এ বার জেলার ২১টি ব্লকের মধ্যে সবথেকে বেশি ভোট পড়েছে খড়্গপুর-২’এ, ৮৯.২৭ শতাংশ। সবথেকে কম দাসপুর-২ এ, ৭৪.৩৫ শতাংশ। গতবার এই ব্লকগুলোর মধ্যে সবথেকে বেশি ভোট পড়েছিল কেশিয়াড়িতে, ৯০.৪৩ শতাংশ। সব থেকে কম ভোট পড়েছিল দাসপুর-২’এ, ৭৫.৫৫ শতাংশ। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “নির্বাচন নির্বিঘ্নে হয়েছে। ভোটারদের লাইন ছিল। তাই কিছু বুথে রাত পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়।”
ভোটদানের হার কম কেন? বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশ বলেন, “বহু বুথে তৃণমূলের লোকেরা ছাপ্পা মেরেছে। অনেককে ভোট দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে।” জেলার বাম নেতা সন্তোষ রাণার কথায়, “ভোটের নামে প্রসহন হয়েছে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি অবশ্য বলেন, “অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন হয়েছে। বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলো সন্ত্রাস-সন্ত্রাস বলে চেঁচাচ্ছিল। প্রমাণ হয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরের মানুষ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়।” তাঁর প্রশ্ন, “যদি ছাপ্পাই হবে, তাহলে তো দুপুরের মধ্যেই ভোট শেষ হয়ে যাওয়ার কথা! কিছু বুথে রাত পর্যন্ত ভোটারদের লাইন থাকবে কেন!” বিকেল পাঁচটায় ভোট শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, এই সময়ের পরেও পশ্চিম মেদিনীপুরে ভোটের লাইনে ছিলেন ১ লক্ষ ৯৫ হাজার ৬৭৫ জন ভোটার। বিকেল পাঁচটার পরে যাঁরা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন, তাঁদের হাতে স্লিপ ধরিয়ে দেওয়া হয়। স্লিপ ধরানো হয় লাইনের শেষের দিক থেকে। যাতে নতুন করে কেউ লাইনে দাঁড়াতে না পারেন। পঞ্চায়েতে রাত পর্যন্ত ভোট অবশ্য নতুন কিছু নয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও বেশ কিছু বুথে রাত ১১টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়েছিল। গত পঞ্চায়েত ভোটে কিছু বুথে রাত ২টো পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়। কেশিয়াড়ি এসটি বিধানসভা কেন্দ্রের কানপুর ১৩৩ নম্বর বুথে রাত দেড়টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। তৃণমূলের একাংশের দাবি, মানুষের আগ্রহ না থাকলে ৮৩ শতাংশ ভোট পড়ত না। জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “গতবারের থেকে এক-আধটু ভোটের হার কমতেই পারে! জেলায় ৮৩ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। এটা কম নয়। ভোটদানে মানুষের এই আগ্রহ অভিনন্দনযোগ্য।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy