Advertisement
E-Paper

উধাও বাম, বিরোধী বিজেপিই

এ বার পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব থেকেও স্পষ্ট, ধীরে ধীরে সিপিএমকে পিছনে ফেলে প্রধান বিরোধী হিসেবে সামনে উঠে আসছে বিজেপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৮ ০২:২৬
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

জেলায় তৃণমূলের বিকল্প এখন তারাই, মাস কয়েক ধরেই এমন দাবি করে আসছেন বিজেপি নেতৃত্ব। সম্প্রতি সবং উপ-নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরের দাবিকে খানিক মান্যতা দিয়েই দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছিল বিজেপি। এ বার পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব থেকেও স্পষ্ট, ধীরে ধীরে সিপিএমকে পিছনে ফেলে প্রধান বিরোধী হিসেবে সামনে উঠে আসছে বিজেপি।

মনোনয়নের ছবিটা ঠিক কেমন?

শনিবার পর্যন্ত ত্রি-স্তর পঞ্চায়েতের জেলা পরিষদে মনোনয়ন হয়েছে ১৭৬টি, পঞ্চায়েত সমিতিতে ১,১৩২টি, গ্রাম পঞ্চায়েতে ৫,৯৬৫টি। বিরোধীদের মধ্যে সবথেকে বেশি মনোনয়ন দিয়েছে বিজেপিই। সিপিএম বেশ কিছুটা দূরে! পশ্চিম মেদিনীপুর এক সময় লালদুর্গ বলেই পরিচিত ছিল। জানা গিয়েছে, শনিবার পর্যন্ত জেলা পরিষদে তৃণমূল ৫৫টি, বিজেপি ৩৪টি, সিপিএম ৪৮টি, সিপিআই ১টি, কংগ্রেস ১৮টি মনোনয়ন করেছে। পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূল ৫৮১টি, বিজেপি ২৭৬টি, সিপিএম ১৭৪টি, সিপিআই ১৭টি, কংগ্রেস ২১টি মনোনয়ন করেছে। অন্য দিকে, গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল ৩,১৯১টি, বিজেপি ১,৫৬১টি, সিপিএম ৬১৬টি, সিপিআই ৬১টি, কংগ্রেস ৫৪টি মনোনয়ন করেছে।

জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় শাসক দলের সন্ত্রাস চলছে বলে অভিযোগ। চন্দ্রকোনা, কেশিয়াড়ি, নারায়ণগড়-সহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্ত হিংসার ঘটনাও ঘটেছে। ব্লক অফিস, মহকুমাশাসকের অফিসের সামনে তৃণমূলের ‘উন্নয়ন’ দাঁড়িয়ে থাকায় বিরোধী দলের অনেক কর্মীই মনোনয়নের সুযোগ পাননি বলেও অভিযোগ উঠছে।

এত ‘উন্নয়ন’ দাঁড় করিয়ে রেখেও অবশ্য জেলায় খালি মাঠ পাচ্ছে না শাসক দল। যেখানে যেখানে সুযোগ মিলেছে, সেখানেই মনোনয়ন করেছে সিপিএম, বিজেপির মতো বিরোধী দলগুলো।

দিন কয়েক আগেও তৃণমূলের যে নেতা বড় মুখ করে বলেছিলেন, “সিপিএমই খুঁজে পাচ্ছে না। বিজেপি প্রার্থী খুঁজে পাবে কি করে! এ বার ভোটে ওদের দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হবে!” মনোনয়নের ছবিটা দেখে সেই নেতাই এখন রসিকতা করে বলছেন, “ওরম মনে হয়! ওটা বলতে হয় বলে বলেছিলাম! সিপিএমের সব লোকই তো বিজেপিতে গিয়ে
মনোনয়ন করেছে!”

গত বিধানসভা নির্বাচনে নারায়ণগড় থেকে হেরেছিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র। এ বার তাঁর জেলাতেই বামেদের কেন এই অবস্থা? সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায় বলেন, “তৃণমূলের সন্ত্রাস চলছে। আমাদের লড়াই তৃণমূলের বিরুদ্ধে, বিজেপির বিরুদ্ধে। যেখানে সুযোগ রয়েছে, সেখানে মনোনয়ন করা হয়েছে। আমাদের কর্মীরা মাঠে-ময়দানে রয়েছেন।” সব দিক দেখে গ্রামেগঞ্জে ‘স্বচ্ছ ভাবমূর্তির’ নির্দল প্রার্থীকে সমর্থনের কথাও ভাবছে সিপিএম।

বেশ কিছু আসনে না কি ‘সর্বসম্মত নির্দল’ প্রার্থী দাঁড় করানোও হয়েছে। বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাস বলেন, “এখন বিজেপিই বিকল্প। দলের চেহারা আর আগের মতো নেই। দলের কর্মীদের রক্ত ঝরলে প্রতিটি রক্তবিন্দুর দাম দেওয়ার জন্য দলের কর্মীরাই তৈরি। বিজেপির ক্ষমতা রয়েছে যে যে ভাষায় কথা বোঝে তাকে সেই ভাষায় কথা বোঝানোর!” তৃণমূলের একাংশ নেতাও মানছেন, বিজেপি মেরুকরণের রাজনীতি করে। সিপিএম সেটা করে না। মেরুকরণের রাজনীতি মোকাবিলা করা তুলনায় কঠিন! শাসক দলের নেতৃত্বের গলায় অবশ্য এখনও তাচ্ছিল্যের সুর। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, “এ জেলায় বিজেপি কোনও ফ্যাক্টর নয়!”

West Bengal Panchayat Elections 2018 Panchayat Poll TMC BJP Midnapore
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy