E-Paper

এই শীতে ফের মাকালু অভিযানে পিয়ালি

নেপাল হিমালয়ে এভারেস্ট-সহ খান ছ’য়েক আট হাজারি শৃঙ্গে সফল আরোহণ করা হয়ে গিয়েছে পিয়ালির। এ বছরেই গ্রীষ্মকালে কাঞ্চনজঙ্ঘায় অভিযান চালালেও অসুস্থতার কারণে ক্যাম্প ৩ থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল তাঁকে। তবে হাল ছাড়েননি।

স্বাতী মল্লিক

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:৩৬
পিয়ালি বসাক।

পিয়ালি বসাক। — নিজস্ব চিত্র।

বিশ্বের পঞ্চম উচ্চতম মাকালু শৃঙ্গে (৮৪৮৫ মিটার) সফল অভিযান চালিয়ে নামার সময়ে আস্ত একটা রাত খোলা আকাশের নীচে কাটিয়েছিলেন। টানা ২২ ঘণ্টা বরফে আঙুল গুঁজে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে ফ্রস্ট বাইট শুরু হয়ে গিয়েছিল পায়ের চার আঙুলে। চোখে দেখতে না পাওয়ায় শেরপারা নীচে নেমে এলেও তিনি সামিট ছুঁয়ে ক্যাম্প ৪-এ নামতে পারেননি। পরের দিন শেরপারা গিয়ে তাঁকে নামিয়ে আনেন। ২০২৩ সালে মাকালুর বুকে এ ভাবেই ‘মির‌্যাকল’ ঘটানো, চন্দননগরের প্রাথমিক স্কুলশিক্ষিকা পিয়ালি বসাক ফের পাড়ি দিচ্ছেন সেই মাকালুতে। এ বার শীতকালীন আট হাজারি অভিযানে অংশ নিতে ইতিমধ্যেই কাঠমান্ডু পৌঁছে গিয়েছেন ওই তরুণী পর্বতারোহী।

নেপাল হিমালয়ে এভারেস্ট-সহ খান ছ’য়েক আট হাজারি শৃঙ্গে সফল আরোহণ করা হয়ে গিয়েছে পিয়ালির। এ বছরেই গ্রীষ্মকালে কাঞ্চনজঙ্ঘায় অভিযান চালালেও অসুস্থতার কারণে ক্যাম্প ৩ থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল তাঁকে। তবে হাল ছাড়েননি। কিন্তু শীতকালীন অভিযান কেন? পিয়ালি জানাচ্ছেন, শীতে মাকালুর তাপমাত্রা নেমে যায় প্রায় মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ঝোড়ো হাওড়ার বেগ থাকে ঘণ্টায় প্রায় ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত। ‘‘এভারেস্টে গিয়ে তুষারঝড়ের মধ্যে পড়েছিলাম। তা সামলে সামিট ছুঁয়ে আসতে পেরে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। এ ছাড়া পাহাড়ে আমার শরীরে অক্সিজেন স্যাচুরেশন আর পাঁচ জনের তুলনায় বেশি থাকে। এ বার আরও ভাল পোশাক, জ্যাকেট নিয়েছি। সঙ্গে আছে প্রয়োজনীয় ওষুধও। ফলে লক্ষ্য কঠিন হলেও সাফল্য পাব বলেই আমার বিশ্বাস।’’— অকপটে বলছেন পিয়ালি। গত ১৮ ডিসেম্বর চন্দননগর থেকে কাঠমান্ডুর উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন পিয়ালি। এর পরে প্রায় ১০ দিন ট্রেক করে বেসক্যাম্প। এর পরে কবে কী ভাবে এগোনো যাবে, তা নির্ভর করবে আবহাওয়ার উপরেই।

পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সাল পর্যন্ত নেপালের আটটি আট হাজারি শৃঙ্গে শীতকালীন অভিযান হয়েছে সাকুল্যে ১০৪টি। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি অভিযান হয়েছে এভারেস্টে। মাকালুতে অল্পবিস্তর অভিযান হলেও সাফল্যের মুখ দেখেননি বেশিরভাগ আরোহী। ২০০৯ সালে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সাহায্য ছাড়াই রাশিয়ার ডেনিস উড়ুবকো এবং ইতালির সিমোন মোরো প্রথম মাকালুতে শীতকালীন অভিযানে সাফল্য পান। কিন্তু তার পরে বেশ কয়েক বার একাধিক পর্বতারোহী চেষ্টা করলেও কেউই শৃঙ্গ ছুঁতে পারেননি। গত বছরেই শীতে মাকালুতে অভিযান চালানো সানু শেরপার দলের সঙ্গেই এ বার জুটি বেঁধেছেন পিয়ালি। অভিযানের খরচ প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা। সে জন্য ইতিমধ্যেই ১১ লক্ষ টাকা ঋণ নিতে হয়েছে তাঁকে। বাকিটুকুর জন্য ভরসা ক্রাউড ফান্ডিং।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Piyali Basak Mountaineer Mount Makalu Makalu

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy