Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ঘাটালে শাসকের দাপটে পিছু হঠলেন বিরোধীরা

বিজেপির দাবি, তৃণমূলের হামলায় দলের আট-দশ জন কর্মী অল্পবিস্তর জখম হয়েছেন। লাঠিপেটা করা হয় সিপিএমের এক কর্মীকেও। আহত ওই বাম কর্মী ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

দাপট: উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে ঘাটালের বিদ্যাসাগর হাইস্কুলে। পাশে মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে চলছে মনোনয়পত্র জমা দেওয়ার কাজ। বিরোধীদের ‘আটকাতে’ স্কুলের পাশ দিয়েই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পতাকা নিয়ে টহল শাসকদলের যুব বাহিনীর। নীরব দর্শক পুলিশ। সোমবার। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

দাপট: উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে ঘাটালের বিদ্যাসাগর হাইস্কুলে। পাশে মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে চলছে মনোনয়পত্র জমা দেওয়ার কাজ। বিরোধীদের ‘আটকাতে’ স্কুলের পাশ দিয়েই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পতাকা নিয়ে টহল শাসকদলের যুব বাহিনীর। নীরব দর্শক পুলিশ। সোমবার। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৮ ০২:১৭
Share: Save:

পুলিশ ছিল। লাঠি হাতে ছিল শাসকও। বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিতে আসা মাত্রই শুরু শক্তি প্রদর্শন। সকালের গোলমালের পরই এলাকা ফাঁকা। দুপুরে সাহস সঞ্চয় করে গুটিকয়েক বিরোধী প্রার্থী জমা দিলেন মনোনয়ন। সোমবার মনোনয়নের শেষ দিনে এমনই ছবি দেখা গেল, ঘাটাল মহকুমা শাসকের দফতর সংলগ্ন এলাকায়।

বিজেপির দাবি, তৃণমূলের হামলায় দলের আট-দশ জন কর্মী অল্পবিস্তর জখম হয়েছেন। লাঠিপেটা করা হয় সিপিএমের এক কর্মীকেও। আহত ওই বাম কর্মী ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সব দেখে বিরোধীদের কটাক্ষ, সত্যিই তো সামনে ‘উন্নয়ন’ দেখে মনোনয়ন জমা না দিয়েই ফিরতে হল।

সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক সাঁতরার অভিযোগ, “মহকুমা শাসকের অফিসও নিরাপদ নয়। সকাল থেকেই শাসক দলের লোকজন তাণ্ডব চালিয়েছে। পুলিশ ঠুঁটো।” বিজেপি-র ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি রতন দত্তের কথায়, “কর্মীদের লাঠিপেটা করে খেদিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ছিল নীরব দর্শক।”

তৃণমূলের ঘাটাল ব্লকের সভাপতি দিলীপ মাঝির প্রতিক্রিয়া, “মিথ্যে অভিযোগ। বাধা দিলে সিপিএম, বিজেপি মনোনয়ন দিল কী করে?” সকাল ১০টায় মনোনয়ন জমা শুরু। তার আগেই মহকুমা শাসকের দফতরের সামনে জড়ো হয়েছিলেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। হাতে লাঠি আর পতাকা। শহরের যে ক’টি রাস্তা দিয়ে পৌঁছনো যায় মহকুমা শাসকের দফতরে প্রায় সবক’টিতে ছিলেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা।

সকাল ১০টা বাজতেই বিভিন্ন গলির রাস্তা ধরে মনোনয়নের জন্য আসতে শুরু করেছিলেন বিজেপি ও সিপিএমের প্রার্থী সহ সাক্ষী-প্রস্তাবকেরা। অভিযোগ, মহকুমা শাসকের দফতরে ঢোকার আগেই বিজেপি ও সিপিএমের প্রার্থীদের পথ আটকে শুরু হয় তল্লাশি। তারপর বেধড়ক মারধর করা হয়।

দুপুর ১২টার পর পুলিশ এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। পুলিশই সিপিএম ও বিজেপি প্রার্থীদের মনোনয়নের জন্য ঢুকিয়ে দেয় মহকুমা শাসকের দফতরে। এদিন মহকুমা শাসকের অফিস লাগোয়া ঘাটাল বিদ্যাসাগর হাইস্কুলে উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষাও চলছিল। শাসক দলের কর্মীদের তাণ্ডব-চিৎকারের মধ্যেই চলে পরীক্ষা।

কী বলছে প্রশাসন? ঘাটালের মহকুমা শাসক পিনাকীরঞ্জন প্রধানের বক্তব্য, ‘‘আমার ক্যাম্পাসে কোনও অশান্তি হয়নি। নির্বিঘ্নেই সবপক্ষই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।’’ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খড়্গপুর) ওয়াই রঘুবংশী বলেন, ‘‘পুলিশ সকাল থেকে সতর্ক ছিল। পুলিশের সামনে কোনও হামলা হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE