সুতাহাটা বিডিও অফিসের সামনে মনোনয়ন জমার লাইন। নিজস্ব চিত্র
১৯৯৩ সাল থেকে টানা জেলা পরিষদের সিপিএম সদস্যা। কিন্তু, সোমবার শেষ দিনেও মনোনয়ন জমা দিতে পারলেন ঊষা ধাড়া।
অভিযোগ, পুলিশ ও তৃণমূল কর্মীদের হুমকি সহ্য করেও মহকুমা শাসকের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন তিনি। বেলা ১০টা নাগাদ সুযোগও মেলে। খোদ মহকুমাশাসক প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু দফতর থেকে বেরানোর আর ঊষা দেবী ও তাঁর সঙ্গে আসা তিন বাম প্রতিনিধিকে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ।
হাইকোর্টের নির্দেশমত মহকুমা শাসকের দফতরে এদিন যারা মনোনয়ন দিতে গিয়েছিলেন, তাদের দরজার বাইরে আটকে রাখার অভিযোগ উঠল খোদ পুলিশেরই বিরুদ্ধে। এ দিন সকাল থেকেই মনোনয়ন তোলার কাউন্টারে চোখে পড়ে হাজার দেড়েক লোকের লাইন। বিজেপি এবং বামেদের অভিযোগ, প্রার্থী পদে মনোনয়ন জমা দেবে না এমন লোকদের এনে সকাল থেকেই লাইনে দাঁড় করিয়ে দেয় তৃণমূল। সিপিএমের অভিযোগ, জেলাপরিষদ আসনে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক মনোনয়নের লাইনে দাঁড়ানো তাঁদের প্রার্থীদের তৃণমূলের লোকেরা হুমকি দিয়ে বলে, ‘মার খাওয়ার জন্য লাইন দিয়েছেন? আগে বাড়ি পালিয়ে যান’।
বার বার এমন হুমকি আসায় এসডিপিও র সহযোগিতা চেয়েছিলেন সিপিএমের লোকসভায় পরাজিত প্রার্থী মন্দিরা পন্ডা। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এসডিপিও সরাসরি জানিয়ে দেন, লাইনের দায়িত্ব নেওয়া সম্ভব নয়।’’ মনোনয়ন জমা দিতে আসা বিজেপি, বামপ্রার্থীদের অভিযোগ, পুলিশকে বার বার জানানো হলেও তাদের কোনও হেলদোল দেখা যায়নি। শেষ দিনেও তাদের দলের অনেকে মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি বলে বিজেপি সূত্রে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক দিন ধরে হলদিয়ার এসডিও অফিসে বুথ জ্যামের কায়দায় লোক জমা করার অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। এদিন তা মাত্রা ছাড়ায় বলে অভিযোগ বিরোদীদের। তাদের আরও অভিযোগ, বিরোধীদের মনোনয়ন জনা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সহযোগিতা করেননি হলদিয়ার এসডিপিও তন্ময় মুখোপাধ্যায়। হলদিয়ার পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেত্রী ঊষা ধাড়া বলেন, ‘‘শাসক দলের নেতাদের মত বিরোধীদের সঙ্গে আচরণ করেছে পুলিশ। গা জোয়ারি করে আমাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ বার বার ফোন করেও মহকুমা শাসক কিংবা এসডিপিওর সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি, বামেরা।
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মানস কুমার রায় বলেন, ‘‘গণতন্ত্রকে মাটিতে লুটিয়ে দিয়েছে এই সব পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা। আজ যা হল, তাতে নির্বাচনের নামে গণতন্ত্রকে ধর্ষণ করা হল।’’ শুধু হলদিয়া নয়, এ দিন সুতাহাটা, নন্দীগ্রাম -১ ও ২, হলদিয়া ব্লকেও বিডিও দফতরে ঘেঁষতে পারেনি বিরোধীরা। হলদিয়ার এসডিও পূর্ণেন্দু চন্দ্র নস্কর অবশ্য বলেন, ‘‘প্রার্থী নন এমন লোকেদের বের করে দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলাম। সেখানে কারা শাসক আর কারা বিরোধী বোঝা দুষ্কর ছিল।’’
হলদিয়ার এসডিপিও তন্ময় মুখোপাধ্যায়ের দাবি, পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তায় মনোনয়ন তোলার লাইন ছিল। যাঁরা লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁরা মনোনয়ন তুলেছেন।’’
বিরোধীদের প্রশ্ন, পুলিশ বা প্রশাসনের দাবি অনুযায়ী লাইনে দাঁড়ানো লোকেরা যদি প্রার্থী হন, তাহলে বিভিন্ন কারখানা-সহ পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে যে সব বহিরাগতকে লাইনে দাঁড় করানো হয়েছিল তারা কারা?
যদিও বহিরাগত তত্ত্ব অস্বীকার করেছে শাসকদল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy