Advertisement
০৫ মে ২০২৪

এলাকা দখলে এসপি-ও: ভারতী

রবিবার কেশপুরের পঞ্চমীতে বিজেপির মিছিলে আসা কর্মী-সমর্থকদের উপর বোমা-গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

কেশপুরের চরকায় ভারতী ঘোষ। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

কেশপুরের চরকায় ভারতী ঘোষ। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেশপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৯ ০০:০৩
Share: Save:

তৃণমূলের নির্দেশে কেশপুরের চরকা পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা করেছে পুলিশ। কেশপুরে পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে এক ‘ক্লোজ ডোর’ বৈঠকও নাকি হয়েছে। এমনই গুরুতর অভিযোগ তুললেন বিজেপি নেত্রী তথা জেলার প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। ভারতীর কথায়, ‘‘পুলিশের ক্লোজ ডোর বৈঠকে জেলার পুলিশ সুপার নিজে বলেছেন, চরকা রিকভারি করতে হবে। খন্দকারকে নিয়ে আসা হয়েছিল। খন্দকার এক সময়ে কেশপুরের ওসি ছিলেন।’’

রবিবার কেশপুরের পঞ্চমীতে বিজেপির মিছিলে আসা কর্মী-সমর্থকদের উপর বোমা-গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। জখম দলীয় কর্মী এবং তাঁদের পরিজনেদের সঙ্গে দেখা করতে মঙ্গলবার বিকেলে কেশপুরের চরকায় আসেন ভারতী। এক সভাও করেন তিনি। সেখানে থেকেই সরাসরি জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভারতী। বলেছেন, ‘‘নতুন পুলিশ সুপার আসার পরে যে কেশপুর রিকভারি প্ল্যান বানিয়েছেন, আমরা তা জানি। জেলার পুলিশ সুপারকে বলে যাচ্ছি, আপনার প্ল্যান- প্রোগ্রাম আমরা জেনে গিয়েছি। আপনাদের যেমন সিআইডি রয়েছে, আমাদের তেমন সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স রয়েছে। আমরা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স থেকে জানতে পেরেছি, পুলিশ সুপার দরজা বন্ধ ঘরে বলেছেন, যে করেই হোক, মেরেকেটে কেশপুর রিকভারি করতে হবে।’’ সোমবারের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে তৃণমূল নেতা মহম্মদ রফিককে গ্রেফতারের দাবিও তুলেছেন ভারতী।

বস্তুত, বহু দিন পরে নেতা হিসেবে কেশপুরে ফিরেছেন রফিক। তাঁর নেতৃত্বে মিছিল থেকে ‘শান্তি নয়, যুদ্ধ চাই’ স্লোগানের পরদিনই অশান্ত হয় কেশপুর। আর সেই অশান্তি তৈরির পিছনে খোদ পুলিশ সুপারের ভূমিকা ছিল, ভারতীর এমন দাবিতে পুলিশ মহলে শোরগোল পড়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্মীর কথায়, ‘‘উনি অনেক দিন এ জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন। পুলিশের কারও কারও সঙ্গে ওঁর যোগাযোগ থেকে যেতেও পারে। না হলে পুলিশের বৈঠকের সব খবর পাচ্ছেন বলে দাবি করছেন কী করে?’’ কে বা কারা গোপন খবর ফাঁস করে দিচ্ছেন, সে নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীর আনা অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমারের জবাব, ‘‘আমি এখনই কিছু বলছি না।’’ জেলা পুলিশের অন্য এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘ভোটের পরে কেশপুরে কিছু ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা ঠিকঠাক রাখতে পুলিশ বৈঠক করতেই পারে। সেখানে পুলিশের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা হতেই পারে।’’

এ দিন ভারতী যখন পুলিশকে সরাসরি বিঁধছেন, তখন অদূরে দাঁড়িয়ে ‘ডিউটি’ করছিলেন কেশপুরের ওসি প্রশান্ত কীর্তনিয়া। সে দিকে তাকিয়ে পুলিশের উদ্দেশে ভারতী বলেন, ‘‘আপনারা যাঁরা ইউনিফর্ম পরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন, আপনাদের দায়িত্ব মানুষকে রক্ষা করা। আপনারা আপনাদের দায়িত্ব পালন করুন। সুনামি আসার সেই দিনটার জন্য অপেক্ষা করবেন না। আমরা দুর্বল নই।’’ ফের চরকায় আসার আশ্বাসও দিয়েছেন ভারতী। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির পাল্টা বক্তব্য, ‘‘কেশপুরে অশান্তি বাধাতে তো ভারতী ঘোষই বারবার ছুটে আসছেন। পুলিশ যা করছে তা শান্তি রক্ষায়। আর আমরা মারদাঙ্গা এলাকা দখলের লড়াই করি না।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Keshpur Bharati Ghosh TMC BJP West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE