Advertisement
E-Paper

বাদই পড়লেন সুশান্ত! পশ্চিম মেদিনীপুরে সিপিএমের জেলা সম্পাদক করা হল সেই বিজয়কে

পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরে আয়োজিত সিপিএমের ২৫তম জেলা সম্মেলনে ওই সিদ্ধান্তের পাশাপাশি ৬৮ জনের জেলা কমিটি গঠিত হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:২৪
(বাঁ দিকে) সুশান্ত ঘোষ। (ডান দিকে) নবনির্বাচিত জেলা সম্পাদক বিজয় পালের সঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।

(বাঁ দিকে) সুশান্ত ঘোষ। (ডান দিকে) নবনির্বাচিত জেলা সম্পাদক বিজয় পালের সঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। —নিজস্ব চিত্র।

দৌড়ে ছিলেন অনেকেই। নজর ছিল সুশান্ত ঘোষের দিকেও। কিন্তু না! পশ্চিম মেদিনীপুরে সিপিএমের জেলা সম্পাদক হলেন বিজয় পাল। জেলা কমিটির তালিকা থেকেই বাদ পড়লেন ‘মহিলাঘটিতকাণ্ডে’ অভিযুক্ত সদ্য অপসারিত জেলা সম্পাদক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত। যদিও সম্পাদক নির্বাচন একেবারেই ঝঞ্ঝাটমুক্ত ছিল না। কয়েক জন গোপাল প্রামাণিক এবং কয়েক জন মেঘনাদ ভুইয়াঁর নাম প্রস্তাব করেন। পরে অবশ্য ওই দু’জনই তাঁদের নাম প্রত্যাহার করে নেন। জেলা সিপিএমের সম্পাদক নির্বাচনে ভোটাভুটি না-হলেও তা শান্তিপূর্ণ ভাবেও হয়নি।

সোমবার জেলা কমিটির বৈঠক শেষে ৬৮ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে সিপিএম। পরে আরও দু’জনকে নেওয়া হবে বলেও জানা গিয়েছে। তা ছাড়া আমন্ত্রিত সদস্য হিসাবে রয়েছেন তিন জন। সেখানেও নাম নেই সুশান্তের। যা দেখে মনে করা হচ্ছে, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মহিলাঘটিত অভিযোগকে মান্যতাই দিল দল।

বাম আমলে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী ছিলেন সুশান্ত। গত অগস্ট মাসে তাঁর বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নাম করে সহবাসের অভিযোগ করেন এক মহিলা। ওই ঘটনার কথা সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে লিখিত ভাবে জানান তিনি। মহিলার অভিযোগ, ২০০৬ সালে তৎকালীন মন্ত্রী সুশান্তের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর তিনি তাঁকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সে জন্য এক দিন সুশান্ত তাঁকে বাড়িতে ডাকেন। বাড়িতে মন্ত্রী তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তাঁর আরও অভিযোগ, এর পর চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিক বার তাঁর সঙ্গে সহবাস করেন সুশান্ত। কাউকে সেই কথা না জানানোর জন্য তাঁকে হুমকি দেন। তাঁর বিয়ের পরেও প্রাক্তন মন্ত্রী তাঁকে যোগাযোগ রাখতে বাধ্য করেন বলেও অভিযোগ। এ জন্য তাঁর সাংসারিক জীবনে অশান্তি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ওই মহিলা। অভিযোগ পাওয়ার পর সুশান্তকে জেলা সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেয় সিপিএম। তাঁকে ছুটিতে পাঠিয়ে ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক করা হয় বিজয়কে। সোমবার সেই বিজয়ই সর্বসম্মতিক্রমে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সিপিএমের সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।

১২ ও ১৩ জানুয়ারি পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরে আয়োজিত সিপিএমের ২৫তম জেলা সম্মেলনে ওই সিদ্ধান্তের পাশাপাশি ৬৮ জনের জেলা কমিটি গঠিত হয়েছে। পরে আরও দু’জন ওই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হবেন বলে জেলা সিপিএম সূত্রে খবর। সোমবার সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্য প্রমুখ।

তিন বছর আগে সিপিএমের জেলা সম্মেলনে সম্পাদক নির্বাচন নিয়ে তুমুল উত্তেজনা হয়েছিল এই জেলায়। সিপিএমের তৎকালীন রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র নিজে পশ্চিম মেদিনীপুরের মানুষ। শোনা যায়, তিনি তাপস সিন্‌হাকে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সিপিএমের অন্দরের খবর, সুশান্তকে জেলা সম্পাদক করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেন দলের বর্তমান রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সেই জেলা সম্মেলনে সম্পাদক নির্বাচনে ভোটাভুটি পর্যন্ত হয়েছিল। তাতে বিপুল ভোটে জয়ী হন সুশান্ত। অন্য দিকে, জেলা কমিটি থেকে সরিয়ে দেওয়া হলেও সুশান্ত এখনও সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে হুগলির ডানকুনিতে রয়েছে সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন। এখন দেখার রাজ্য কমিটি থেকেও সুশান্ত বাদ পড়েন কি না।

CPIM Susanta Ghosh Paschim Midnapore CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy