প্রতীকী ছবি।
ভোট-আবহে বিজেপির বিরুদ্ধে ‘বহিরাগত’ তত্ত্বে সরব রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। এ বার তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভিন্ রাজ্যের রাজনৈতিক দলকে জঙ্গলমহলে ডেকে নিয়ে আসার অভিযোগে সরব হচ্ছে গেরুয়া শিবির।
বিজেপি সূত্রের খবর, ‘গৃহ সম্পর্ক অভিযানে’ গিয়ে এ বার ভোটারদের বলা হবে, বিজেপির সর্বভারতীয় নেতাদের ‘বহিরাগত’ তকমা দেওয়া হচ্ছে, অথচ তৃণমূলই ভিন্ রাজ্যের রাজনৈতিক দলের ‘বহিরাগত’ নেতাদের এনে ভোটে ভরাডুবি ঠেকাতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলার মুখপাত্র মৃণালকান্তি ভুঁইয়া বলছেন, ‘‘দেশের যে কোনও আসনে যে কোনও রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকার রয়েছে। কিন্তু জঙ্গলমহলে ভিন্ রাজ্যের একাধিক দলের সাম্প্রতিক কর্মসূচি থেকে এটা স্পষ্ট যে, জঙ্গলমহলে জনসমর্থন হারিয়ে এখন তৃণমূল ভোট ভাগাভাগির ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে। তবে লাভ হবে না।’’ তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতো পাল্টা বলেন, ‘‘তৃণমূলের অন্য দলের সাহায্য নেওয়ার প্রয়োজন নেই। বিজেপি জঙ্গলমহলে হালে পানি না পেয়ে এখন উল্টোপাল্টা বকছে।’’
গত ২৮ জানুয়ারি ঝাড়গ্রাম শহরে আদিবাসীদের পুরনো আবেগ উস্কে দিয়ে সভা করেছিল ঝাড়খণ্ড মুক্তিমোর্চা (জেএমএম)। ওই সভায় ঝাড়খণ্ড রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনের উপস্থিতিতে জেএমএম-এর শীর্ষ নেতৃত্ব স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলার পশ্চিমাঞ্চলকে সংবিধানের পঞ্চম তফসিলে অন্তর্ভুক্তি ও কেন্দ্রশাসিত নির্বাচিত পরিষদ গড়ার দাবিতে জঙ্গলমহলের আসনগুলিতে প্রার্থী দেওয়া হবে। তারপর শুক্রবার মহারাষ্ট্রের শিবসেনা ঝাড়গ্রাম শহরে জনসভা করে জানিয়েছে, জেলার চারটি আসনে প্রার্থী দিচ্ছে তারা। এক ধাপ এগিয়ে ঝাড়গ্রাম আসনে প্রার্থীর নামও ঘোষণা করে দিয়েছে শিবসেনা।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের মতে, জেএমএম প্রার্থীরা কিছুটা আদিবাসী ভোট কাটতে পারেন। আর বিজেপির ভোটে থাবা বসানোর সম্ভাবনা রয়েছে হিন্দুত্ববাদী শিবসেনার। আর ভোট কাটাকুটিতে তৃণমূলেরই সুবিধা হবে।
৯ ফেব্রুয়ারি লালগড়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জয়প্রকাশ নড্ডার সভায় বিজেপির দাবি মতো লোক হয়নি বলে সরব হয় তৃণমূল। ওইদিনই রাতে লোক না হওয়ায় ঝাড়গ্রাম শহরে দ্বিতীয় সভাটি করেননি নড্ডা। এমনকী ১১ ফেব্রুয়ারি পরিবর্তন যাত্রা উপলক্ষে গোপীবল্লভপুরে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার মাঠেও লোক ভরাতে পারেনি বিজেপি। সাংগঠনিক কোনও ঘাটতি রয়েছে কি-না জানতে ঝাড়গ্রামে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব। ভিন্ রাজ্যের হিন্দিভাষী বিজেপি নেতাদের ‘বহিরাগত’, ‘পরিযায়ী’ শব্দবন্ধে আক্রমণ শানাচ্ছে তৃণমূল শিবির। পাল্টা ‘বহিরাগত ভাড়াটে দলে’র তত্ত্ব সামনে আনছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির নেতারা বলছেন, ‘‘ভিন্ রাজ্যের দলগুলি জঙ্গলমহলে এসে বিজেপিকে আক্রমণ করছে। অথচ রাজ্য সরকার ও তৃণমূলের সম্পর্কে নমনীয় মনোভাব নিয়ে চলছে। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, ভিন্ রাজ্যের দলগুলি তৃণমূলের সুবিধা করতেই ভোটের ময়দানে হাজির হচ্ছে।’’ ক’দিন আগে ঝাড়গ্রামের এক জনসভায় তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিজেপির সমালোচনা করে বলেছিলেন, ‘‘ভাড়াটে সৈন্য দিয়ে যুদ্ধ জয় করা যায় না।’’ আর জেলা বিজেপির মুখপাত্র মৃণালকান্তি ভুঁইয়া বলছেন, ‘‘ভাড়াটে দল এনেও কিন্তু যুদ্ধ জয় সম্ভব নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy