E-Paper

বিজেপির সদস্য সংগ্রহে বাধা ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ই 

বৃহস্পতিবারের এই ঘটনা কোনও ব্যতিক্রমী উদাহরণ নয়। বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানে জঙ্গলমহলের জেলা ঝাড়গ্রামে কার্যত সাড়াই মিলছে না বলে দলেরই একাংশের দাবি।

কিংশুক গুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:২৫
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

ঝাড়গ্রাম: লক্ষ্মীবারে হেমন্তের দুপুর। বেলপাহাড়ির প্রান্তিক গ্রামে এক গৃহস্থের দুয়ারে হাসি মুখে মোবাইল ফোন নিয়ে হাজির বিজেপির বুথ কমিটির নেতা। ‘কী চাই?’ গৃহকর্তার প্রশ্নে উত্তর আসে, ‘সদস্য সংগ্রহে অভিযান’। গৃহকর্তা কিছু বলার আগেই অন্দরমহল থেকে ঝাঁঝিয়ে গৃহকর্ত্রী ও তাঁর শাশুড়ি বলে উঠলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ করার মতলব!
তাই না?’’

বৃহস্পতিবারের এই ঘটনা কোনও ব্যতিক্রমী উদাহরণ নয়। বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানে জঙ্গলমহলের জেলা ঝাড়গ্রামে কার্যত সাড়াই মিলছে না বলে দলেরই একাংশের দাবি। অথচ ২০১৯ সালে এই জেলাতেই বিজেপির সদস্য সংখ্যা ছিল ৭৯ হাজার। পাঁচ বছর পর এ বার এই জেলায় চার লক্ষ সদস্য করার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল। সূত্রের খবর, ঝাড়গ্রাম সাংগঠনিক জেলা মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মেরেকেটে প্রায় ১৪ হাজার সদস্য সংগ্রহ হয়েছে। সদস্য সংগ্রহ অভিযানের মেয়াদ বাড়িয়ে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে বটে, তাতেও কাজের কাজ কিছু হয়নি বললেই চলে।

লক্ষ্যপূরণে সমস্যা কোথায়? এক বিজেপি কর্মী বলছেন, ‘‘কী বার্তা নিয়ে মানুষের কাছে যাব? গ্রামবাসীর একাংশের ধারণা, বিজেপির সদস্য হলে তাঁরা রাজ্যের সরকারি পরিষেবা পাবেন না। তৃণমূলের এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে আমাদের দলের উপযুক্ত প্রচার কই? ফলে সদস্য সংগ্রহ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।’’

এমনিতেই ঝাড়গ্রাম জেলায় বিজেপির সংগঠনের ভিত এখন নড়বড়ে। পর পর নির্বাচনে এখানে মুখ থুবড়ে পড়েছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির ঝাড়গ্রাম সাংগঠনিক জেলার মধ্যে রয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলার সদর, গোপীবল্লভপুর, বিনপুর ও নয়াগ্রাম বিধানসভা, পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা ও শালবনি বিধানসভা এবং পুরুলিয়া জেলার বান্দোয়ান বিধানসভা। এই সাংগঠনিক জেলার ৩২টি মণ্ডলে মোট বুথের সংখ্যা ২০২৯টি। এক মণ্ডল সভাপতি বলছেন, ‘‘এমনিতেই ধীরে ধীরে সদস্য সংগ্রহের কাজ চলছিল। উপনির্বাচনের ফলের পর বুথস্তরে অনেকেই সদস্য সংগ্রহে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন। তার মধ্যে তৃণমূলের চমক-ধমক আর নানা মিথ্যাচার রয়েছে।’’

কেন এই পরিস্থিতি? জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডু অস্বস্তিকর প্রশ্ন এড়িয়ে বলছেন, ‘‘রাজ্য জুড়ে যে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল ৩০ নভেম্বরের মধ্যে, আমরা তার কাছাকাছি পৌঁছনোর চেষ্টা করছি, ঝাড়গ্রামও তার ব্যতিক্রম নয়। সাংগঠনিক জেলার ২০২৯টি বুথে জেলার নেতা-কর্মীরা মাঠে নেমে কাজ করছেন।’’ তাঁর অভিযোগ, গ্রামাঞ্চলে তৃণমূলের লোকজন নানা ভাবে ভুল বোঝাচ্ছে। তারও কিছুটা প্রতিফলন পড়ছে।

কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না তৃণমূল। ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু বলেন, ‘‘উন্নয়ন ও পরিষেবা পেয়ে জঙ্গলমহলবাসী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছেন। মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এই চরম সত্য আড়াল করার জন্য ওরা আমাদের বিরুদ্ধে ভুয়ো অভিযোগ তুলছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jhargram BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy