Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Tamluk

‘অপহরণের’ নালিশ, পরে তৃণমূলে যোগ বিজেপি নেতার

বিজেপি জেলা নেতৃত্বের অভিযোগ, সম্রাটকে তৃণমূলের আশ্রিত দুষ্কৃতিরা মারধর করে অপহরণ করে।  পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, সম্রাটের সাথে কিছু লোকজনের বচসা হয়েছিল।

বিজেপি নেতা সম্রাট সামন্তর (মাঝখানে নীল সোয়েটার পরিহিত) হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দিচ্ছেন সৌমেন মহাপাত্র। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

বিজেপি নেতা সম্রাট সামন্তর (মাঝখানে নীল সোয়েটার পরিহিত) হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দিচ্ছেন সৌমেন মহাপাত্র। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:৩১
Share: Save:

পঞ্চায়েত নির্বাচন এগিয়ে আসার সাথে ফের উত্তপ্ত হচ্ছে ময়নার বাকচা এলাকা। তৃণমূলের বাকচা অঞ্চল সভাপতি মনোরঞ্জন হাজরা ও তাঁর ছেলেকে কয়েক দিন আগে প্রকাশ্য বাজারে মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় বিজেপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় দুই বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার রেশ কাটার আগে রবিবার সকালে বাকচা গজিলাক বাজারে বাকচা পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপির যুব মোর্চার তমলুক সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সামন্তকে মারধর করে ‘অপহরণ’ করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনায় বাকচা এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযোগ পেয়েই ময়না থানার পুলিশ বাহিনী গিয়ে সম্রাটকে উদ্ধার করে ময়না থানায় নিয়ে আসে।

বিজেপি জেলা নেতৃত্বের অভিযোগ, সম্রাটকে তৃণমূলের আশ্রিত দুষ্কৃতিরা মারধর করে অপহরণ করে। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, সম্রাটের সাথে কিছু লোকজনের বচসা হয়েছিল। তারপরই সম্রাটকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ আসে। তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছে। অপহরণের অভিযোগ ঠিক নয়।

যদিও এদিন বিকেলেই বিজেপির ওই যুব নেতা তমলুকে জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্রের হাত থেকে পতাকা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূলে যোগ দেন। যোগদানের সময় উপস্থিত ছিলেন ময়নার প্রাক্তন বিধায়ক সংগ্রাম দোলই, ময়না ব্লক তৃণমূল সভাপতি সন্দীপব্রত দাস ও বাকচা অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি মনোরঞ্জন হাজরা। সম্রাটের তৃণমূলে যোগদান নিয়ে সৌমেন বলেন, ‘‘শুধু সম্রাট নয়। বাকচার আরও অনেকে ধীরে ধীরে তৃণমূলে যোগ দেবেন। বাকচা এলাকার মানুষ শান্তি চান। সাময়িক যাঁরা ভুল করেছিলেন। তাঁরা ভুল বুঝতে পেরেছেন। সম্রাটদের মতো ছেলেরা আমাদের দলে যোগ দেওয়ায় দলের শ্রীবৃদ্ধি হবে। বাকচা আবার শান্ত এলাকায় পরিণত হবে।’’

তবে সম্রাটের বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েক দিন আগে তৃণমূলের বাকচা অঞ্চল সভাপতি মনোরঞ্জন হাজরাকে মারধরের ঘটনায় বিজেপির যে পাঁচজন কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে তাঁদের মধ্যে রয়েছে বাপি সামন্ত। বাপি সামন্ত সম্রাটের বাবা। আদালতের নির্দেশে বাপি এখন জেল হেফাজতে রয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে সম্রাটের বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল যোগ দেওয়া রাজনৈতিক দিক থেকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি আশিস মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশকে দিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করে ও তাঁদের হুমকি দিয়ে তৃণমূলে যোগদানের কৌশল নতুন নয়। আমাদের দলের নেতা সম্রাটকে পুলিশকে দিয়ে থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে হুমকির মুখে ফেলে তৃণমূলে যোগ দেওয়ানোর নাটক করা হয়েছে। তবে তৃণমূলের এই অপকর্মের জবাব দেবেন বাকচার মানুষ।’’

ময়নার প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা সংগ্রাম দোলইয়ের দাবি, ‘‘সম্রাটকে অপহরণের অভিযোগ ঠিক নয়। সম্রাট নিজেই তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। দলের জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্রের হাত ধরে তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tamluk BJP Leader TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE