E-Paper

তৃণমূল নেতার দেহ, প্ররোচনায় ধৃত বিজেপির দুই

বুধবার বিকেলেই রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার জকপুর স্টেশনের অদূরে রেললাইনের ধারে দ্বিখণ্ডিত অবস্থায় উদ্ধার হয় শশাঙ্ক মাইতি (৭০)-এর দেহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২৩ ০৬:৫৭
রেল লাইনের ধারে তৃণমূল নেতার দেহ উদ্ধার।

রেল লাইনের ধারে তৃণমূল নেতার দেহ উদ্ধার। প্রতীকী চিত্র।

গ্রামের এক মহিলার সঙ্গে তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের অভিযোগ ঘিরে গোলমাল। তার পরেই নিখোঁজ এলাকার ওই তৃণমূল নেতা। পরে রেললাইনের ধার থেকে সেই তৃণমূল নেতার দ্বিখণ্ডিত দেহ উদ্ধারে শুরু হল রাজনৈতিক চাপানউতোর। ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে নাম জড়াল বিজেপির। দুই বিজেপি কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করতেই বুধবার রাতে উত্তপ্ত হল খড়্গপুর গ্রামীণ থানার পপরআড়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের তোড়কো গ্রামের পরিস্থিতি।

বুধবার বিকেলেই রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার জকপুর স্টেশনের অদূরে রেললাইনের ধারে দ্বিখণ্ডিত অবস্থায় উদ্ধার হয় শশাঙ্ক মাইতি (৭০)-এর দেহ। শশাঙ্ক তোড়কো গ্রামে তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী তথা প্রাক্তন বুথ সভাপতি ছিলেন। দেহ উদ্ধার করে রেল পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে। তবে রাত হতেই পরিস্থিতি বদলায়। রাতেই খড়্গপুর গ্রামীণ থানায় এসে বাবাকে মিথ্যা সম্পর্কের অভিযোগে মারধর করে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তোলেন শশাঙ্কর ছেলের শিবপ্রসাদ মাইতি। তাঁর অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে ওই গ্রামের এক আদিবাসী মহিলার সঙ্গে মিথ্যা সম্পর্কের অভিযোগ তুলে তাঁর বাবা শশাঙ্ককে মারধর করা হয়। তার পর থেকে বাবাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না অভিযোগ করেন শিবপ্রসাদ। এরপর বুধবার বিকেলে দেহ মেলে। ঘটনায় বিজেপি কর্মী শ্যামল বেরা, অনিল শিট, লক্ষ্মীকান্ত হেমব্রম-সহ ৬জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন শিবপ্রসাদ। তার পরেই গ্রামীণ থানার পুলিশ অভিযুক্ত বিজেপি কর্মী শ্যামল ও বিজেপির বুথ সভাপতি অনিলকে গ্রেফতার করে।

এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার খড়্গপুর গ্রামীণ থানায় বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। তাদের দাবি, আদিবাসী এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের জেরে গ্রাম্য বিবাদে জড়ান ওই তৃণমূল নেতা। সেই ঘটনাকে রাজনীতির রূপ দিতে পরিকল্পিত ভাবে বিজেপির কর্মীদের ফাঁসানো হচ্ছে। জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, “একটি দেহ উদ্ধারে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগের উপর ভিত্তি করে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।”

শিবপ্রসাদ বলেন, “বাবার সঙ্গে ওই মহিলার মিথ্যা সম্পর্কের অভিযোগ তোলা হচ্ছে। মঙ্গলবার বাবা বাজার থেকে একটি বৈঠক সেরে ফেরার সময় বৃষ্টি নেমে যাওয়ায় ওই মহিলার বাড়ির সামনে চালাঘরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। বৃষ্টি থামলে বাবা সেখান থেকে বেরোতেই বাবাকে মিথ্যা অভিযোগে মারধর করা হয়।’’ শিবপ্রসাদ যোগ করেন, ‘‘আমরা যাওয়ার পরেই যারা মারধর করছিল তারা বাবাকে নিয়ে চলে যায়। পরদিন বাবার দেহ রেললাইনের ধার থেকে পেলাম। বাবা যদি আত্মহত্যা করলেও সেটা ওদের মারধরে অপমানিত হয়ে। আত্মহত্যায় প্ররোচিত হয়েছেন।”

তৃণমূলের খড়্গপুর-২ ব্লকের সভাপতি তৃষিত মাইতি বলেন, “অন্য জায়গার মতো এখানেও বিজেপি রাজনৈতিকভাবে না পেরে পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওই কর্মীকে মেরেছে। মিথ্যা অভিযোগ তুলে মারধর করা হয়েছে। তার পরে দেহ উদ্ধার হয়েছে।”

বিজেপির খড়্গপুর-২ ব্লকের পিংলা-১ মণ্ডলের সভাপতি বিজয় সেন বলেন, “গ্রাম্য ঘটনায় আমাদের কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূলের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাওয়ায় এ ভাবে মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kharagpur TMC Suicide BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy