Advertisement
০৫ মে ২০২৪

গুলি-বোমার মামলায় গ্রেফতার বিজেপির সেলিম

ধৃত সেলিমের বিরুদ্ধে গুলি চালানো, বোমা ছোড়ার অভিযোগ রয়েছে বলেও পুলিশ সূত্রের খবর।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেশপুর শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৯ ০৩:৪৪
Share: Save:

লোকসভা ভোটের পর থেকে কেশপুরে বিজেপির ‘মুখ’ হয়ে উঠছিলেন দুই নেতা। তন্ময় ঘোষ আর মহম্মদ সেলিম। একটি মামলার সূত্রে বৃহস্পতিবার সেলিমকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

সিপিএম থেকে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানো তন্ময় আর সেলিমের নেতৃত্বেই কেশপুরের একের পর এক অঞ্চলে পতাকা তুলছিলেন বিজেপির নেতাকর্মীরা। স্বাভাবিক ভাবে একাধিক গোলমালের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে এই দু’জনের। কয়েকটি ক্ষেত্রে মামলাও হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, তেমনই মামলার সূত্রে বৃহস্পতিবার রাতে সেলিম এবং আরেক বিজেপি নেতার খোঁজে অভিযান চালায় কেশপুর থানার পুলিশ। সেলিম গ্রেফতার হয়েছেন। আরেকজনের খোঁজ নেই। পুলিশ সূত্রের খবর, তিনি নাকি গা ঢাকা দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, সপ্তাহ তিনেক আগে কেশপুরে এসে পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘নতুন পুলিশ সুপার আসার পরে কেশপুর রিকভারি প্ল্যান বানিয়েছেন।’’ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার জানিয়েছিলেন, যে কোনও গোলমালের ঘটনায় আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ সূত্রের খবর, বিভিন্ন গোলমালে জড়িতদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছে জেলা পুলিশ। নির্দেশ পেয়ে তৎপর হয়েছে কেশপুর থানা।

ধৃত সেলিমের বিরুদ্ধে গুলি চালানো, বোমা ছোড়ার অভিযোগ রয়েছে বলেও পুলিশ সূত্রের খবর। গত ৭ জুলাই কেশপুরে এসেছিলেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি পদযাত্রা, সভা করেন। ওই দিন মহিষদায় গোলমাল হয়। তৃণমূল কর্মীদের মারধর করা হয়। বোমাবাজি করা হয়। অভিযোগের তির ছিল বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। মহিষদায় বোমাবাজিতে অভিযুক্ত ছিলেন সেলিম। লোকসভা ভোটের দিন অর্থাৎ গত ১২ মে দোগাছিয়ায় গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন ওই বিজেপি নেতা। সেলিমের বিরুদ্ধে বোমা- গুলির মামলা রয়েছে? পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপারের জবাব, ‘‘নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে কেশপুরের একজনকে (সেলিম) গ্রেফতার করা হয়েছে।" জেলা পুলিশ সুপার মানছেন, গোলমালে জড়িত আরও কয়েকজনের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।

তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশের উপর নির্ভরতা কমানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। যদিও তৃণমূলের একাংশের দাবি, স্থানীয় নেতারা এখনও পুলিশের উপর নির্ভরতা কমাতে পারছেন না। সেলিমের গ্রেফতারির পর, দলের অন্দরে ফের উঠছে এই প্রসঙ্গ। সত্যিই কি নেত্রীর নির্দেশ মানা হচ্ছে? তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতিকে বলতে শোনা যাচ্ছিল, ‘‘আমরা আইন হাতে তুলে নেব না। পুলিশ- প্রশাসনকে বলছি, গোলমালে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। না হলে মানুষ প্রতিরোধে নামবেন।’’ ঘটনাচক্রে এরপরই পুলিশের তল্লাশি- অভিযানে গতি আসে। গ্রেফতার হন সেলিম।

তন্ময় এবং সেলিম দু’জনেই একসময়ে সিপিএম করতেন। তন্ময় সিপিএমের কেশপুর এরিয়া কমিটির সম্পাদক ছিলেন। লোকসভা ভোটের পরে কেশপুরে বিজেপির যে সব রাজনৈতিক কর্মসূচি হয়েছে, সে সব কর্মসূচিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন দুই বিজেপি নেতাই। শাসক দলের সঙ্গে টক্কর দিয়েছেন তাঁরা। সেলিমের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে তন্ময়ের দাবি, ‘‘মিথ্যা মামলায় পুলিশ সেলিমকে গ্রেফতার করেছে।’’ আর তৃণমূল নেতা মহম্মদ রফিক বলছেন, ‘‘পুলিশ পুলিশের কাজ করছে।’’

বৃহস্পতিবার রাতে সেলিম গ্রেফতার হয়েছেন। শুক্রবার বিকেলে কেশপুরে মিছিল করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের দাবি, ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের সমর্থনে এই মিছিল হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Keshpur Bombing Case Selim
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE