২৪ ঘণ্টা পেরিয়েছে। তবে দলীয় কার্যালয়ে ডেকে এক মহিলাকে ধর্ষণে অভিযুক্ত তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি অধরা। প্রতিবাদে, সোমবার মেদিনীপুর শহরে বিক্ষোভ দেখাল বিজেপি। অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি উঠল। নেতৃত্বে ছিলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল।
সোমবার বিকেলে কালেক্টরেট মোড়ে এই বিক্ষোভে স্লোগান ওঠে— ‘পুলিশ তুমি উর্দি ছাড়ো, তৃণমূলের ঝান্ডা ধরো’। কয়েক জন বিজেপি নেতা-কর্মীকে আটক করে পুলিশ। অগ্নিমিত্রার দাবি, ‘‘ওই মহিলা আমাদের সক্রিয় কর্মী। তৃণমূল ওঁকে বিজেপি ছাড়তে বলেছিল। হুমকি দিয়েছিল।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘ওঁকে ধর্ষণ করে গোপনাঙ্গে পাথর ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশকে দিয়ে ঘটনা ধামাচাপার চেষ্টা চলছে। এখানে বিচার না পেলে, আদালতে যাব।’’ এ দিন মহিলার এলাকাতেও বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিএনএসের একাধিক ধারায় মামলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৬৪ (ধর্ষণ), ১২৭ (২) (অন্যায় ভাবে আটকে রাখা) ইত্যাদি। জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘‘তদন্তে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোত ঘোষেরও বক্তব্য, ‘‘কেউ জড়িত থাকলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। দল কাউকে আড়াল করবে না।’’ অভিযুক্ত নেতা এ দিন এলাকাতেই ছিলেন। ফের তাঁর দাবি, ‘পুরোটাই সাজানো ঘটনা।’’ ওই নেতার তোলা পাল্টা মারধরের অভিযোগে এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতকে খড়্গপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
‘নির্যাতিতা’ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি ছিলেন। তবে এ দিন পরিজনেরা তাঁকে কল্যাণী এমসে নিয়ে গিয়েছেন। মহিলার স্বামী বলেন, ‘‘মেডিক্যাল রিপোর্ট হাতে পাইনি। তাই এমসে যাচ্ছি। আমি চাই, মেডিক্যাল রিপোর্টটা ঠিকঠাক হোক। তাই নিজের দায়িত্বে মেডিক্যাল থেকে নিয়ে এসেছি।’’
মেদিনীপুর মেডিক্যালের একটি সূত্রের দাবি, প্রাথমিক পরীক্ষায় মহিলার যৌনাঙ্গে আঘাতের ‘তেমন’ চিহ্ন মেলেনি। হাসপাতাল সুপার ইন্দ্রনীল সেন অবশ্য এ নিয়ে কিছু বলতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘মেডিক্যাল রিপোর্ট তদন্তাধীন বিষয়। তা নিয়ে কিছু বলব না। তবে এখানে মহিলার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ছিল।’’ এ দিন সকালে মেডিক্যালে গিয়ে ‘নির্যাতিতার’ সঙ্গে দেখা করেন সিপিএমের নেত্রীরা। আজ,
মঙ্গলবার জেলার ওই এলাকায় বিক্ষোভ দেখাবে বামেরা।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)