এসআইআর চলাকালীনই উদ্বাস্তু কলোনি এলাকায় সিএএ বিষয়ক শিবির করবে বিজেপি। শিবিরে সেই এলাকার বাসিন্দা হিন্দু শরণার্থীদের জন্য অনলাইনে ‘সিটিজেন অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট’ বা সিএএ-তে আবেদনের ব্যবস্থা করা হবে বলে বিজেপি সূত্রে খবর। এ নিয়ে বিজেপিকে বিঁধছে শাসকদল তৃণমূল ও বামেদের উদ্বাস্তুদের সংগঠন।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় উদ্বাস্তু কলোনি রয়েছে ৫৬টি। যার মধ্যে ৩৫টি কলোনি রয়েছে গড়বেতা ও শালবনি বিধানসভা এলাকায়। দেশভাগের সময় ও পরে পূর্ববঙ্গ থেকে আসা বহু পরিবার এইসব কলোনি গুলিতে এসে বসবাস শুরু করে। ওই পরিবারের বাসিন্দারা এখানেই আধার কার্ড, রেশন কার্ড করে নিয়েছেন। সচিত্র ভোটার কার্ড করে এখানেই তাঁরা ভোট দেন বরাবর। ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর নিয়ে শোরগোল পড়েছে এইসব কলোনি এলাকা গুলিতে। নথি খোঁজার চেষ্টা করছে অনেক পরিবার।
এই আবহে বিজেপি এইসব উদ্বাস্তু কলোনি এলাকা গুলিতে সিএএ শিবির করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই শিবির করে কলোনি এলাকার হিন্দু শরণার্থীদের নাগরিকত্বের ব্যবস্থা করবে বিজেপি। দলের ঝাড়গ্রাম সাংগঠনিক জেলার ভোটার তালিকার কাজ ও সিএএ বিষয়ক প্রমুখ গড়বেতার তারাচাঁদ দত্ত মানছেন, ‘‘আমরা উদ্বাস্তু কলোনি গুলিতে সিএএ শিবির করব। এসআইআর চলাকালীনই করব। সমস্ত উদ্বাস্তু, যাঁরা পূর্ববঙ্গ থেকে এসেছেন, সেইসব হিন্দু শরণার্থীদের জন্য এই শিবির হবে। সেখানে তাঁদের অনলাইনে সিএএ ফর্ম ফিলাপ করানো হবে। তাঁরা যাতে নাগরিকত্বের দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হন, সে জন্যই দল থেকে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে এ নিয়ে দল কোনও রাজনৈতিক প্রচার করবে না।’’ তিনি বলছেন, ‘‘সমীক্ষা করে দেখেছি, গড়বেতা ও শালবনি বিধানসভা এলাকায় উদ্বাস্তু কলোনি গুলিতে সাড়ে তিন হাজার পরিবার আছে, এইসব পরিবার গুলি যাতে এ দেশের নাগরিকত্বের সুবিধা পান তার জন্য বিজেপি এইরকম শিবির করছে। ইতিমধ্যে অনেকেরই অনলাইনে সিএএ ফর্ম পূরণ করা হয়েছে।’’ বিজেপির এসসি মোর্চার রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রকোনা রোডের মদন রুইদাস বলেন, "উদ্বাস্তু কলোনি গুলিতে গিয়ে কাজ করার জন্য মণ্ডল ও জেলা স্তরের কার্যকর্তাদের নিয়ে একটা টিম গড়া হয়েছে। তাঁরা গিয়ে ওইসব এলাকার কোনও বাসিন্দা যদি সিএএ ফর্ম পূরণ করে আবেদন করতে চান, তার ব্যবস্থা করে দেবেন, ফর্মের ব্যবস্থাও করে দেবেন।"
উদ্বাস্তু কলোনি এলাকায় এ ধরনের শিবির নিয়ে বিজেপিকে বিঁধছে বামেদের সংগঠন সম্মিলিত কেন্দ্রীয় বাস্তুহারা পরিষদ (ইউসিআরসি)। পরিষদের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কালীপদ দুলে বলছেন, "বিজেপি ও তৃণমূল দু'দলই এসআইআর নিয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। আমরা প্রতিটি উদ্বাস্তু কলোনি গুলিতে গিয়ে মানুষকে বোঝাচ্ছি অযথা বিভ্রান্ত না হতে।" খোঁচা দিয়ে তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিধায়ক সুজয় হাজরা বলেন, "উদ্বাস্তু কলোনি এলাকার বাসিন্দাদের পাশে তৃণমূল সর্বদা থাকে। বিজেপি নাগরিকত্ব কেড়ে নিতে চায়। বামেরা বিভ্রান্ত করে। এসআইআরে একজনও বৈধ ভোটার বাদ গেলে আমরা পথে নামব।"
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)