রাস্তা আটকে বন্ধ পালন নন্দীগ্রামে (বাঁদিকে)। হলদিয়ায় আদালতে মেঘনাদ পাল । নিজস্ব চিত্র।
কৃষি আধিকারিককে হেনস্থার ঘটনায় পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজত হল বিজেপি নেতা মেঘনাদ পাল-সহ ধৃত দুজনের। বাকি পাঁচজন জেল হেফাজতে গিয়েছেন। এই গ্রেফতারির প্রতিবাদে শনিবার সকাল থেকে বিজেপির বন্ধ, অবরোধ, বিক্ষোভ চলল নন্দীগ্রামে। সকালের দিকে কিছুটা সাড়া পড়লেও দুপুরের পরে জনজীবন প্রায় স্বাভাবিক হয়ে যায়। তবে বিজেপির এ দিনের কর্মসূচি হোক কিংবা মেঘনাদকে আদালতে হলদিয়া আদালতে তোলা— কোথাওই দেখা যায়নি নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীকে।
মেঘনাদ বরাবর শুভেন্দুর ‘ঘনিষ্ঠতম’ বলেই পরিচিত। ফলে, তাঁর গ্রেফতারিতে শোরগোল পড়ে রাজনৈতিক মহলে। বস্তুত বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামের মাটিতে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দুর কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হারের পর থেকে ক্রমাগত চলেছে মামলা-পাল্টা মামলার রাজনীতি। ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে মামলা করেছে তৃণমূল। শুভেন্দুর বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা হয়েছে। পাল্টা ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগে সরব হয়েছে বিজেপি। চলছে সিবিআই-সিআইডি তরজা। ভোট-পরবর্তী হিংসায় তৃণমূলের ১১ জন নেতা-কর্মী জেলে রয়েছেন। এই আবহে শুভেন্দু র 'ঘনিষ্ঠতম' মেঘনাদের গ্রেফতার নতুন করে হাওয়া গরম করেছে।
শুক্রবার নন্দীগ্রাম কৃষক বাজারে ডেপুটেশন জমা দিতে যাওয়ার সময় এক কৃষি আধিকারিককে মারধরের অভিযোগ ওঠে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনাতেই মেঘনাদ-সহ ৭ বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শনিবার দুপুরে ধৃতদের হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা, কর্তব্যরত অবস্থায় সরকারি আধিকারিককে মারধর, এলাকার শান্তি বিঘ্নিত করা-সহ একাধিক ধারায় মামলা করেছে পুলিশ। মেঘনাদ পাল ও আশিস ভুঁইয়ার ৫ দিন পুলিশি হেফাজত ও বাকি ৫ জনের ১৪ দিন জেল হেফাজতে নির্দেশ হয়েছে
মেঘনাদদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে এ দিন সকাল ছ'টা থেকে নন্দীগ্রামের দু’টি ব্লক এলাকায় ১২ ঘণ্টার বন্ধ ডেকেছিল বিজেপি। নন্দীগ্রাম থেকে চণ্ডীপুর যাওয়ার রাজ্য সড়কের রতনপুর, দেবীচকে কোথাও কোথাও টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। কোথাও গাছের গুঁড়ি এবং ইট ফেলে রাস্তা অবরোধ করা হয়। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের প্রাণকেন্দ্র টেঙ্গুয়া এ দিন সকালে ছিল ফাঁকা। দোকানপাট, হোসিয়ারি কারখানা খোলেনি, যান চলাচলও প্রায় হয়নি। তবে পাশের ব্লকের বিরুলিয়ায় বাজার বসে। বেলা খানিকটা বাড়ার পরে দুটি ব্লকের প্রশাসনিক আধিকারিকেরা বন্ধে জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে কিনা দেখতে বেরিয়ে পড়েন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিরাট পুলিশ বাহিনী মোতায়েন ছিল। দুপুর নাগাদ পুলিশের সঙ্গে বিজেপি সমর্থকদের বচসা বাধে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হলদিয়া) পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘কোথাও কোনও অশান্তি ঘটেনি।’’
বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নবারুণ নায়েকের দাবি, ‘‘স্বতঃস্ফূর্তভাবে নন্দীগ্রামের মানুষ বন্ধে সম্মতি জানিয়েছেন।’’ কিন্তু এলাকার বিধায়ককে দেখা গেল না কেন? নবারুণের জবাব, ‘‘উনি আলাদা কর্মসূচিতে ব্যস্ত ছিলেন। দলের তরফে আমি হলদিয়া মহকুমা আদালতে উপস্থিত ছিলাম।’’ নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা আবু তাহের পাল্টা বলেন, ‘‘অনৈতিক ভাবে বন্ধ করা হয়েছিল। নন্দীগ্রামের মানুষ তা মেনে নেয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy