Advertisement
E-Paper

বিকেল হলেই বন্ধ ব্লাডব্যাঙ্ক, অভিযোগ এগরায়

শুধু শুভাশিসবাবুই নয়, বিকেলর পর এগরা হাসপাতলে কোনও রোগীর রক্তের দরকার হলে তাঁর লোকজনকে কাঁথি হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে।

শান্তনু বেরা

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৮ ০২:২০
তালাবন্ধ: এগরা হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্ক। ছবি: গোপাল পাত্র

তালাবন্ধ: এগরা হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্ক। ছবি: গোপাল পাত্র

হাতের কাছে কাঁথি ব্লাড ব্যাঙ্ক হওয়ায় সেখানে চাপ পড়ত বেশি। এগরা মহকুমা হাসপাতালের রোগীদের কারও রক্তের প্রয়োজন হলে এখানেই সবার আগে ছুটে আসতেন রোগীর পরিজনরা। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ব্লাডে ব্যাঙ্কের উদ্বোধন হয়। হাসপাতালে আসা রোগীরা ভেবেছিলেন আর রক্তের জন্য অন্য হাসপাতালে ছোটাছুটি করতে হবে না। রাতবিরেতে ভুগতে হবে না রক্তের জন্য।

কিন্তু সমস্যা যে থেকেই গিয়েছে তা টের পাওয়া গেল সোমবার। খাকুড়দার বাসিন্দা শুভাশিস দাসের বৌদি অনিতা দাসকে সোমবার বিকেলে পাঁচটা নাগাদ এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শুভাশিসবাবু বলেন, ‘‘বৌদির অনবরত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। ডাক্তার বললেন জরুরি ভিত্তিতে রক্ত দরকার। কিন্তু হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে তা পেলাম না। কারণ, বিকেল ৪টের পর ব্লাডব্যাঙ্ক বন্ধ হয়ে যায়। উপায় না দেখে গাড়ি নিয়ে রাত দশটা নাগাদ কাঁথি ব্লাডব্যাঙ্কে যাই। সেখান থেকে রক্ত সংগ্রহ করে হাসপাতালে ফিরি।’’ তাঁর প্রশ্ন, হাসপাতালে ব্লাডব্যাঙ্ক থাকা সত্ত্বেও এ ভাবে রোগীকে হয়রানির কী কারণ? এর ফলে অনেক সময় তো রোগীর অবস্থার অবনতি এমনকী মৃত্যু হতে পারে। সে ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কি দায় নেবেন?

শুধু শুভাশিসবাবুই নয়, বিকেলর পর এগরা হাসপাতলে কোনও রোগীর রক্তের দরকার হলে তাঁর লোকজনকে কাঁথি হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে। এগরার বালিঘাইয়ের বাসিন্দা গৌরীশঙ্কর পাহাড়ি। তাঁর জামাইবাবু ক্যানসার রোগী এবং এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি। রক্ত লাগবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। গৌরীশঙ্করবাবুর কথায়, ‘‘বিকেল ৪টের পর আর ব্লাডব্যাঙ্ক খোলা থাকে না। খোঁজ নিয়ে জানলাম, কোনও টেকনিশিয়ান না থাকায় ব্লাডব্যাঙ্ক বন্ধ থাকে। বাধ্য হয়ে ৩৫ কিলোমিটার দূরে কাঁথি ব্লাডব্যাঙ্ক থেকে রক্ত আনতে হয়েছে।’’ ব্লাডব্যাঙ্ক থাকা সত্ত্বেও রোগীদের এমন হয়রানি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনিও।

অপেক্ষায়: কাঁথি ব্লাডব্যাঙ্কের সামনে রোগীর পরিজন। নিজস্ব চিত্র

কাঁথি ব্লাডব্যাঙ্ক সূত্রে খবর, প্রায় প্রতিদিনই রক্তের রিক্যুইজিশন স্লিপ নিয়ে এখানে ভিড় করেন এগরা হাসপাতালের রোগীর লোকজন। সন্ধ্যার পর ভিড় বাড়ে। তাঁদের দাবি, এগরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বারবারই অনুরোধ করা হয় বেশি পরিমাণ রক্তে নিয়ে গিয়ে সেখানে রাখার জন্য। কিন্তু তাঁরা কোনও আগ্রহই দেখান না।

এগরা হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ সত্যি নয় বলে দাবি করেছেন হাসপাতালের সুপার গোপাল গুপ্ত। তিনি বলেন, “২৪ ঘণ্টাই এগরা হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্ক খোলা থাকে। আসলে যে গ্রুপের ব্লাড দরকার তা না থাকলে বাধ্য হয়ে অন্য ব্লাডব্যাঙ্কে পাঠানো হয়।’’

কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী চক্রবর্তী বলেন, “আমরা চব্বিশ ঘণ্টা পরিষেবা দিই। এখানকার ব্লাড ব্যাংকে প্রচুর রক্ত মজুত থাকে। গভীর রাতেও এখানে তাই রক্ত মেলে। এগরা হাসপাতালকে রক্ত নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা নিয়ে যায়নি।’’

তবে দুই হাসপাতালের এমন চাপানউতোর নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নন এগরা হাসপাতালের রোগীর পরিজনেরা। তাঁদের একটাই দাবি, রোগীর রক্তের দরকার হলে হাসপাতালেরই সেই ব্যবস্থা করা উচিত। রাত বিরেতে কোনও রোগীর রক্তের দরকার হলে তা দেখার দায়িত্ব হাসপাতালের। কিন্তু তা না হওয়ায় তাঁদেরই হয়রান হতে হচ্ছে।

Egra Blood Bank
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy