করোনা সতর্কতা মেনে চলছে বেচাকেনা। নিজস্ব চিত্র
এপ্রিলের শেষে গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় বাইরে বেরিয়ে এসেছে এগরা শহর। বিধিনিষেধে আগের তুলনায় কিছুটা ছাড়ের কারণে বই প্রেমী ও পাঠকদের অনুরোধে শেষ পর্যন্ত বইয়ের দোকান খুললেন দোকানিরা। তবে সামাজিক দূরত্বের সতর্কতা মেনেই বই বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান দোকানিরা।
লকডাউন ঘরবন্দি কচিকাঁচা থেকে যুবক, প্রবীণ থেকে বৃদ্ধবৃদ্ধারা। বদ্ধ জীবনযাত্রায় হাঁপ ছাড়তে সঙ্গী বই। কিন্তু লকডাউনের জাঁতাকলে তা অমিল। প্রশাসনিক নির্দেশে বন্ধ রয়েছে পাঠ্যপুস্তকের দোকান। বাড়িতে সংগৃহীত ও সাজানো যে সব বই তারও বেশিরভাগ ঠোঁটস্থ। ফলে খিদে মেটাতে চাই নতুন বই। অথচ তা পাওয়ার উপায় নেই। গ্রন্থাগার থেকে বইয়ের দোকান সবই বন্ধ। বিকল্প ইন্টারনেট। কিন্তু সেখানেও সমস্যা যে নেই তা নয়। প্রযুক্তিগত সমস্যা তো রয়েইছে। তা ছাড়া বইয়ের মতো সাহচর্য সেখানে মেলে কই! সারাক্ষণ মোবাইল বা কম্পিউটারে চোখ লাগিয়ে থাকতে অনীহাও রয়েছে অনেকের। ফলে হাতে বই নিয়ে থাকার মেজাজ ফিরে পেতে উদগ্রীব ছাত্রছাত্রী থেকে বইপ্রেমীরা।
সরকারি ভাবে আগেই এগরা-১ ওয়ার্ড ও পটলাইকে গণ্ডিবদ্ধ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এই দুটি জায়গা জুড়ে রয়েছে এগরা শহর। স্পর্শকাতর এলাকা হওয়ায় জরুরি পরিষেবা ছাড়া সবই বন্ধ ছিল। গত মঙ্গলবার থেকে সরকারি ভাবে মদের দোকান খোলার অনুমতি আশা জাগিয়েছে বইপ্রেমীদের মনে। তাঁদের আবেদন, মদের দোকান যেখানে খোলা থাকবে সেখানে বইয়েক দোকান খুলে রাখতে অনুমতি দিক সরকার। যদিও বইপ্রেমীদের চাপে গত এক সপ্তাহ ধরে এগরার কিছু বইয়ের দোকান আংশিক খোলা রেখেছে। আনন্দ পাবলিশার্সের তমলুক ও কাঁথিতে আনন্দ বিপণিও বেলা দশটা থেকে সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত খোলা থাকছে। এগরার দু’টি বইয়ের দোকান খোলা হলেও সেখানে বই বিক্রির ক্ষেত্রে কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে। যদিও গণ্ডিবদ্ধ এলাকার বিধিনিষেধ গত ৩০ এপ্রিল উঠে গেলেও প্রশাসনিক ভাবে বইয়ের দোকান খোলায় কোনও আপত্তি নেই। ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠনের কারণেও বইয়ের দোকান খোলায় ছাড় দেওয়া হয়েছে। এগরা কলেজ সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ শিক্ষার বই ও পাঠ্য পুস্তক মিলছে এই দুই দোকানে। বইয়ের দোকান খোলার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছে এগরা পুলিশ-প্রশাসন। সামাজিক দূরত্ব মেনে সকাল ন’টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত দোকান খুলছে। তবে জোগানে টান থাকায় অনেক ক্রেতাকেই ফিরতে হচ্ছে পছন্দের বই না নিয়েই।
এক বইয়ের দোকানদার অবশ্য বলেন, প্রশাসনিক ভাবে দোকান খোলার কোনও অনুমতি আমাদের দেওয়া হয়নি। বই প্রেমী ও ছাত্রছাত্রীদের অনুরোধেই দোকান আংশিক খোলা হয়েছে। পুলিশকে মৌখিক ভাবে দোকান খোলার বিষয়টি জানানো হয়েছে। প্রশাসন সহযোগিতা করেছে।’’
এগরা কলেজের অধ্যক্ষ দীপক কুমার তামিলী বলেন, ‘‘ছোট থেকে বড় সকলেরই অন্যতম সঙ্গী বই। এই মুহূর্তে তো সেই সঙ্গীর প্রয়োজন আরও বেশি করে অনুভূত হচ্ছে। ফলে বইয়ের দোকান খোলা রাখাটা খুব জরুরি। তা ছাড়া ইন্টারনেট বা অনলাইনে পঠনপাঠন চালু হলেও ছাত্রছাত্রীদেরর পাঠ্য পুস্তকের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy