Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

হস্টেলে দেহ, ছাত্রী মৃত্যুতে সিআইডি তদন্ত

মৃত ছাত্রী পল্লবী দত্ত (১৫) সবংয়ের ভেমুয়া আর টি গার্লস হাইস্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ত।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৮ ০৭:০০
Share: Save:

এক ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত সিআইডির হাতে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা সোমবার সিআইডি-র অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছেন, তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী ২৪ অগস্ট আদালতে রিপোর্ট দিতে হবে।

পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত ছাত্রী পল্লবী দত্ত (১৫) সবংয়ের ভেমুয়া আর টি গার্লস হাইস্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ত। তার বা়ড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায়। তাই স্কুলের হস্টেলে থেকেই লেখাপড়া করত সে। গত বছর ৮ নভেম্বর রাতে হস্টেলের চিলেকোঠা থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। গলায় গামছার ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাকে ঝুলতে দেখে সহপাঠীরা হস্টেল কর্তৃপক্ষকে খবর দেন। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ ছাত্রীর পরিবারকে জানিয়ে দেয়, মানসিক অবসাদে সে আত্মঘাতী হয়েছে। ছাত্রীর বাবা ভক্তি দত্ত মেয়ের মৃত্যুর সঠিক তদন্ত চেয়ে নিম্ন আদালতে আবেদন করেন। তবে সেখানে সুরাহা না মেলায় হাইকোর্টে মামলা করেন ওই ছাত্রীর বাবা। মামলার আবেদনে বলা হয়, থানার পুলিশের তদন্তে ভরসা নেই। তাই আদালত যেন অন্য কোনও তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে পল্লবীর মৃত্যুর তদন্ত করানোর নির্দেশ দেয়।

ভক্তিবাবুর আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় এবং দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে অভিযোগ করেন, সবং থানার তদন্তে একাধিক ধোঁয়াশা রয়েছে। উদাহরণ দিয়ে আইনজীবীরা জানান, হস্টেলের চিলেকোঠায় গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে দেহটি ঝুলে থাকলেও ছাত্রীর পা দু’টি ছিল চিলেকোঠার ঘরের মেঝেয়। গলায় ফাঁস দিয়ে কেউ আত্মঘাতী হলে, তার জিভ মুখ থেকে কিছুটা বেরিয়ে থাকে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে জিভ বেরিয়ে ছিল না। কী কারণে ওই ছাত্রীর চুল ভেজা ছিল, তার তদন্ত হয়নি। খবর পেয়ে স্ত্রী অষ্টমীদেবীকে সঙ্গে নিয়ে ছাত্রীর বাবা বেশি রাতে হস্টেলে পৌঁছে দেখেন, সেখানে পল্লবীর কোনও সহপাঠী নেই। তারা কোথায় ছিল, হস্টেল কর্তৃপক্ষ তার সদুত্তর দেননি। যে ঘরে ছাত্রীর দেহ মেলে, সেখানে ছাত্রীর বাবা-মাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। চিলেকোঠার ঘরে যাওয়ার সিঁড়িতে কেন মুড়ি ছড়ানো ছিল, তা-ও তদন্ত করে দেখেনি পুলিশ। আইনজীবীরা আরও অভিযোগ করেন, অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় কেন গাফিলতির কারণে মৃত্যুর ধারা দেওয়া হল তারও কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি পুলিশ। কী কারণে ওই ধারা দেওয়া হয়েছে বিচারপতি মান্থা তা সরকারি কৌঁসুলির কাছে জানতে চান। সরকারি কৌঁসুলি আদালতে তা জানাতে পারেননি। এ দিন মামলার শুনানির সময় আদালতে হাজির ছিলেন ছাত্রীর বাবা-মা। শুনানি শেষে আদালতের বাইরে ভক্তিবাবু বলেন, ‘‘চাষ করে মেয়েকে অনেক কষ্টে লেখাপড়া শেখাচ্ছিলাম। মেয়ে পড়াশোনায় ভালই ছিল। কেন আত্মহত্যা করতে যাবে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CID Calcutta High Court সিআইডি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE