Advertisement
E-Paper

স্বপ্নের স্কুল গড়তে সহায় গ্রামবাসীরা

এখানেই শেষ নয়, মিড-ডে মিলের জন্য তকতকে রান্নাঘর, ছাত্র ও ছাত্রীদের আলাদা শৌচাগার— আছে সবই। স্বীকৃতি হিসেবে ইতিমধ্যে মিলেছে ‘নির্মল বিদ্যালয়’ এবং ‘শিশুমিত্র’ পুরস্কারও।

জয়দীপ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:১৭
স্কুলের ক্লাসঘরে সিসিটিভি ক্যামেরা ও চার্ট। —নিজস্ব চিত্র।

স্কুলের ক্লাসঘরে সিসিটিভি ক্যামেরা ও চার্ট। —নিজস্ব চিত্র।

জঙ্গলের ধারে এই স্কুল দশ বছর আগেও ছিল আর পাঁচটা প্রাথমিক স্কুলের মতোই। ঝাঁ চকচকে স্কুল গড়ার সাধ থাকলেও সাধ্য ছিল না। প্রধান শিক্ষকের উদ্যোগে গ্রামবাসীর সাহায্যে ভোল বদলেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার কুইলিবাদ গ্রামের একমাত্র প্রাথমিক স্কুলটির।

অধিকাংশ প্রাথমিক স্কুলেই যেখানে নড়বড়ে বেঞ্চে ব্ল্যাকবোর্ডের আবছা লেখা কষ্ট করে পড়তে হয় পড়ুয়াদের। সেখানে বাঁকুড়া সীমানা ঘেঁষা ধাদিকা পঞ্চায়েতের আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম কুইলিবাদের স্কুলে প্রোজেক্টরের মাধ্যমে হচ্ছে পড়াশোনা। ‘বিল্ডিং অ্যাজ লার্নিং এইড’ হিসেবে গড়ে উঠেছে স্কুল ভবন। পড়ুয়াদের নিরাপত্তার জন্য রয়েছে ক্লাসে-ক্লাসে সিসি ক্যামেরা। এখানেই শেষ নয়, মিড-ডে মিলের জন্য তকতকে রান্নাঘর, ছাত্র ও ছাত্রীদের আলাদা শৌচাগার— আছে সবই। স্বীকৃতি হিসেবে ইতিমধ্যে মিলেছে ‘নির্মল বিদ্যালয়’ এবং ‘শিশুমিত্র’ পুরস্কারও।

স্কুলের এত কিছু যে বার্ষিক অনুদানের টাকা দিয়ে করা সম্ভব নয়, সেটা ২০০৭ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পরই বুঝে যান সন্দীপকুমার খাঁ। তাই গ্রামের বন কমিটির দ্বারস্থ হন তিনি। তাঁদের বোঝান, ছেলেমেয়েদের ভাল শিক্ষার জন্য উন্নত পরিকাঠামো প্রয়োজন। বাসিন্দারা সাহায্য করলেই তা সম্ভব। প্রধান শিক্ষকের আবেদনে সাড়া দেন গ্রামবাসীরাও। স্কুলের সামনের রাস্তা মেরামত, চাঁদা তুলে ক্লাসঘর রং করানোর কাজ করেন স্থানীয়রাই। প্রোজেক্টরে ছবি দেখিয়ে পড়ালে খুদেরা তাড়াতাড়ি শিখবে, বলেছিলেন শিক্ষকেরা। গ্রামবাসীরা সে ব্যবস্থাও করেছেন। স্কুলের জন্য নিজেরাই পাঁচটি সিসি ক্যামেরা কিনেছেন তিন শিক্ষক ও এক পার্শ্বশিক্ষক। স্কুল চত্বরের এক দিকে যে বাগান রয়েছে, তা পরিচর্যা করে পড়ুয়ারাই। ভেষজ উদ্যান, ফুলের বাগানের পাশাপাশি পালং, মুলো-সহ নানা শীতকালীন আনাজও ফলিয়েছে তারা। মিড-ডে মিলে সে সব কাজে লাগে, জানান শিক্ষকেরা।

প্রধান শিক্ষক সন্দীপবাবু জানান, ৮৪ জন ছাত্রছাত্রীর অনেকেই প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। কিন্তু স্কুলের উন্নয়নে গ্রামবাসীকে সামিল করতে কোনও বেগ পেতে হয়নি। গ্রামের বাসিন্দা ধনঞ্জয় গরাই, চৈতন মান্ডিরা আবার বলেন, ‘‘গ্রামের ছেলেমেয়েদের জন্য শিক্ষকেরা এত ভাবেন। আমরা সাধ্যমতো পাশে থাকি।’’

তবে সমস্যাও রয়েছে। শিক্ষকেরা জানান, স্কুল ভবনের ছাদ টিনের চালের হওয়ায় গরমে ও বর্ষায় অসুবিধা হয়। বছর তিনেক আগে আলাদা ভবনে আপার প্রাইমারি বিভাগ চালু হলেও রয়েছেন মোটে এক জন অতিথি শিক্ষক। এলাকার তিন স্নাতক যুবক-যুবতী সেখানে পড়ান, যাঁদের সামান্য কিছু বেতনের ব্যবস্থা চাঁদা তুলে করেন অভিভাবকেরাই।

CCTV Class Room
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy