দাসপুরে প্রস্তাবিত চন্দ্রেশ্বর খাল খননের জন্য প্রথম দফার দু’কিলোমিটার এলাকার জমি মালিকদের নামের তালিকা এসেছিল অনেক আগেই। এ বার দ্বিতীয় দফার বাকি সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকার জমি মালিকদের নামের তালিকাও দাসপুরে এসে পৌঁছল। শনিবার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের এক বৈঠকে তালিকা তুলে দেওয়া হয় সাব-কমিটির হাতে। ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাসও মানছেন, ‘‘চন্দ্রেশ্বর খালের বাকি সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকার জমি মালিকদের তালিকাও এসে গিয়েছে। সাব-কমিটির হাতে দেওয়া হয়েছে।’’
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান প্রকল্পের অধীনে দাসপুরে প্রস্তাবিত সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার চন্দ্রেশ্বর খাল নতুন করে খনন— একটি অন্যতম কাজ। দাসপুরের বৈকুণ্ঠপুর থেকে খাল খনন করে সাত-আটটি গ্রামের ফাঁকা জমির উপর দিয়ে গুড়লিতে গিয়ে শিলাবতী নদীর সঙ্গে মেশানো হবে। চন্দ্রেশ্বর খালটির সঙ্গে রূপনারায়ণের সংযোগ রয়েছে। ফলে বর্ষায় শিলাবতীর বাড়তি জল ঘাটালে যাওয়ার আগেই গুড়লি থেকে চন্দ্রেশ্বর খালের মাধ্যমে রূপনারায়ণে গিয়ে মেশানোই এর একমাত্র লক্ষ্য। তার জেরে শিলাবতীর চাপ অনেক কমবে। ইতিমধ্যেই তথ্যচিত্রের মাধ্যমে চন্দ্রেশ্বর খাল খননের প্রয়োজনীতা-সহ বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তাতে কাজও হয়েছে। যে দাসপুর এলাকায় আন্দোলন শুরু হয়েছিল, পুরো বিষয়টি অবগত হওয়ার পর অনেকেই খাল কাটার জন্য জমি দিতে এগিয়ে এসেছেন। ওই খাল খনন হলে যে দাসপুরে নতুন করে বন্যার কোনও আশঙ্কা নেই, তা-ও তথ্যচিত্রের মাধ্যমে বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরেছে সেচ দফতর।
এমনিতে এখন প্রথম পর্যায়ের দু’কিলোমিটার এলাকার জমি মালিকদের সম্মতি আদায় চলছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মালিকদের সম্মতি হাতে এসেও গিয়েছে। তবে এখনও বহু সম্মতি পাওয়া বাকি। দাসপুর সাব-কমিটির সদস্যদের গাফিলতিতেই অত্যন্ত শ্লথ গতিতেই এগোচ্ছে এই প্রক্রিয়া— রয়েছে এমন অভিযোগও। এরই মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ের বাকি জমি মালিকদের তালিকা এসে পৌঁছনোয় প্রস্তাবিত গ্রামের বাসিন্দাদেরও কৌতুহল চরমে উঠেছে। তালিকায় নাম রয়েছে কি না, তা জানার আগ্রহ বাড়ছে। এ বার ওই চন্দ্রেশ্বর খাল খননের প্রয়োজনীয় জমি মালিকদের সম্মতি আদায়ের কাজ দ্রুতগতিতে করার উপর জোর দিয়েছে প্রশাসন।
‘ডিস্ট্রিক্ট মনিটারিং কমিটি’র সদস্য আশিস হুতাইত বলেন, ‘‘চন্দ্রেশ্বর খাল খননের বকেয়া সব জমি মালিকদের নামের তালিকা এসেছে। এখন প্রথম পর্যায়ের কাজের প্রয়োজনীয় জমি মালিকদের সম্মতি আদায় চলছে। সাব-কমিটির সংশ্লিষ্ট সকলে একাধিক দলে ভাগ হয়ে জমি মালিকদের বাড়িতে পৌঁছচ্ছেন।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)