পায়ের পাতা হঠাৎ করেই ফুলে যাচ্ছে। অথচ ইউরিক অ্যাসিড নেই। হিলজুতোও পরেন না, তা-ও গোড়ালিতে তীব্র যন্ত্রণা ভোগাচ্ছে। পায়ের পাতায় এমন ব্যথাবেদনা মাঝেমধ্যেই হয়। যদি তা দীর্ঘমেয়াদে ভোগাতে থাকে, সে ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে। অনেকেই ভাবেন এমন ব্যথা বাতের কারণে হয়ে থাকে। সব ক্ষেত্রে তা নয়। তা হলে ব্যথার কারণ কী?
প্রচন্ড খাটাখাটনির পর পরিশ্রান্ত দিনের শেষে কারও কারও গোড়ালির তলায়, আবার কারও গোড়ালির পিছনের দিকে ব্যথা হয়। গোড়ালির পিছনের ব্যথাকে বলা হয় ‘টেন্ডো অ্যাকিলিস’। হাঁটাচলায় সাহায্যকারী প্রধান শিরা বা টেন্ডনে যখন কোনও প্রদাহ হয়, তখন গোড়ালির পিছনের দিকে যন্ত্রণা শুরু হয়। গোড়ালির নীচের ব্যথাকে বলা হয় ‘প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস’। অনেক সময় গোড়ালির তলায় হাড় বেড়েও ব্যথা হয়, একে ক্যালকেনিয়াল স্পার বলে।
কারা ভোগেন বেশি?
অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা থাকলে প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিসের সমস্যা বেশি হয়। এক টানা বসে কাজ করেন যাঁরা, শরীরের নড়াচড়া কম হয়, তাঁদের হতে পারে। দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করেন যাঁরা, তাঁরা ভোগেন এই সমস্যায়।
যাঁদের পায়ের পাতা একেবারে সমান্তরাল ভাবে মাটিতে স্পর্শ করে, অর্থাৎ ফ্ল্যাট ফুটের সমস্যা থাকলে এমন ব্যথা মাঝেমধ্যেই হতে পারে। সঠিক জুতো না পরলে বা দীর্ঘ সময় হিলজুতো পরে থাকলে লিগামেন্টটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ওষুধ ছাড়া ব্যথা কমবে কী উপায়ে?
মূলত প্রদাহের কারণে প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিসের সমস্যা শুরু হয়। প্রদাহ দূর করতে বরফ ভাল বিকল্প হতে পারে। দিনে অন্তত ১৫-২০ মিনিট বরফ সেঁক দিন। তা হলে প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিসের ব্যথা বেশ খানিকটা কমবে।
ব্যথার তীব্রতা কমাতে গোড়ালিতে ঠান্ডা-গরম সেঁক দেওয়া যায়। প্রথমে ঠান্ডা সেঁক দিন, পর মুহূর্তে গরম সেঁক দিন। সেঁক দিলে পায়ের পেশি সচল হয়। ঠান্ডা এবং গরম জলের মিশ্রণ পায়ে ঢাললে খানিক স্বস্তি পাওয়া যায়।
কিছু ব্যায়াম করলেও প্লান্টার ফ্যাসাইটিসের ব্যথা কমবে, যেমন— পায়ের পাতার উপরে ভর দিয়ে মাটি থেকে গোড়ালি তুলে ধরুন। কয়েক সেকেন্ড পর স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে আসুন। ১০ থেকে ১৫ বার এই ব্যায়াম করুন। একে বলে হিল রেজ়। এই ব্যায়ামটি নিয়মিত করলে গোড়ালির ব্যথা কমে যাবে।