কুরবান শা। ফাইল চিত্র
কুরবান শা খুনের ঘটনার তিন মাসের মধ্যেই জমা পড়ল চার্জশিট। তাতে খুন, ষড়যন্ত্র এবং অস্ত্র আইনে অভিযোগ করা হয়েছে বিজেপি নেতা আনিসুর রহমান, মলয় ঘোষ এবং শ্যুটার তসলিম আরিফ ওরফে রাজার বিরুদ্ধে। ওই মামলায় অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেলেন তিনজন।
গত ৭ অক্টোবর পাঁশকুড়ার মাইশোরায় দলীয় কার্যালয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হন তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক কার্যকরী সভাপতি তথা পাঁশকুড়া-১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি কুরবান। ঘটনায় বিজেপি নেতা আনিসুর-সহ এখনও পর্যন্ত মোট আটজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আনিসুর বাদে বাকি ধৃতেরা হল আব্দুল খালেক খান, দীপক চক্রবর্তী, নিশীথ পাল, নবারুণ মিশ্র, মলয় ঘোষ, তসলিম আরিফ, মোবারক করিম খান। তদন্তে নেমে পুলিশ আরও তিনজনের নাম জানতে পারে। তবে তাদের ধরা যায়নি।
সোমবার তমলুক মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে এক হাজার ২০০ পাতার চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। মোট ১০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিটে অভিযোগ আনা হয়েছে। চার্জশিটে নাম ওঠেনি তিনজনের। এরা হল কুরবান হত্যা মামলায় প্রথম গ্রেফতার হওয়া আব্দুল খালেক খান, কুরবানের পরিবারের দায়ের করা এফআইআরে নাম থাকা শেখ জাকির এবং শেখ মোক্তার। কুরবান হত্যাকাণ্ডে এই তিনজনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে দাবি সরকারি আইনজীবীর।
যে ১০ জনের নামে পুলিশ চার্জশিট জমা দিয়েছে, তারা হল—আনিসুর রহমান, মলয় ঘোষ, তসলিম আরিফ ওরফে রাজা, মোবারক করিম খান, দীপক চক্রবর্তী, নিশীথ পাল, নবারুণ মিশ্র, শীতল মান্না, গোলাম মেহাদি ওরফে কালু এবং আজিম পাপ্পু। এদের মধ্যে আনিসুর, মলয় এবং রাজার বিরুদ্ধে খুন, ষড়যন্ত্র ও অস্ত্র আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে। বাকি সাত জনের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র খুন ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে। চার্জশিটে নাম থাকা শীতল, পাপ্পু এবং কালু বর্তমানে পলাতক।
সরকারি আইনজীবী শেখ সফিউল খান বলেন, ‘‘কুরবান হত্যা মামলায় আনিসুর-সহ ১০জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ। তদন্ত প্রায় শেষের পথে। আনিসুর, মলয় ও রাজার কাছ থেকে বন্দুক, গুলি উদ্ধার হয়েছে। তাই ওদের বিরুদ্ধে খুন, ষড়যন্ত্রের পাশাপাশি অস্ত্র আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে চার্জশিটে। তিনজনকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। চার্জশিটে শীতল, কালু এবং পাপ্পুকে পলাতক দেখানো হয়েছে।’’
উল্লেখ্য, পুলিশি তদন্তে সামনে এসেছে যে, মাইশোরার রাজশহরের বাসিন্দা শীতল, শ্যামবল্লভপুরের বাসিন্দা কালু কুরবানের আততায়ীদের এক মাস আগে থেকে এলাকায় থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। ধৃত শ্যুটার রাজাকে জেরা করে পুলিশ আজিম পাপ্পু নামে খড়গপুর এলাকার একজনের নাম জানতে পারে। কয়েকদিন আগে শীতল, কালু এবং পাপ্পুর নামে হুলিয়া জারি করে তমলুক আদালত। তাদের অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পুলিশ চার্জশিট জমা দেওয়ায় খুশি কুরবানের স্ত্রী তথা মাইশোরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সাবান বানু খাতুন। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ নির্দিষ্ট সময়ে চার্জশিট দিয়েছে। এতে আমরা খুশি। তবে সব থেকে বেশি খুশি হব যখন ওরা শাস্তি পাবে। আমি দোষীদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy