আগামী মাসে জঙ্গলমহলে আসার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তার আগেই লালগড়ের ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের ধানের বকেয়া দাম মিটিয়ে দিল সরকার। মঙ্গলবার লালগড় ব্লক অফিস থেকে চেক বিলি শুরু হল। ছিলেন জেলা খাদ্য নিয়ামক পার্থপ্রতিম রায়, ইসিএসসি-এর জেলা পার্চেজ অফিসার রামকৃষ্ণ রায়।
খাদ্য দফতরের অধীনস্থ পশ্চিমবঙ্গ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরবরাহ নিগম (ইসিএসসি)-এর তরফে ২৮৮ জন চাষির বকেয়া বাবদ ৭২ লক্ষ ১৫ হাজার ৮১২ টাকা মিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। লালগড়ের বিডিও জ্যোতিন্দ্রনাথ বৈরাগী বলেন, “২৮৮ জন চাষি ধানের দাম পাননি বলে তথ্য-সহ আবেদন করেছিলেন। এ দিন থেকে তাঁদের চেক দেওয়া হচ্ছে।”
বিরোধীদের অবশ্য কটাক্ষ, ধান-কাণ্ড নিয়ে পুলিশের তদন্ত চলাকালীন বিধি ভেঙে সরকারি কোষাগার থেকেই চাষিদের দাম মেটানো হচ্ছে। পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনার শিবিরে চাষিদের কাছ থেকে ধারে ধান নিয়ে অভিযুক্তরা সেই ধান ভিন্ রাজ্যের খোলা বাজারে বেচে দিয়েছেন।
সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের আগে ধান-কাণ্ড নিয়ে অস্বস্তি এড়াতে তড়িঘড়ি দাম মেটানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। চলতি মাসে ব্লক প্রশাসন প্রতারিতদের তালিকা জেলায় পাঠায়। জেলাশাসকের দফতর থেকে তালিকা যায় রাজ্যে। সিদ্ধান্ত হয়, ইসিএসসি-র মাধ্যমে বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়া হবে।
চাষিদের অবশ্য বক্তব্য, “কিছু ধান্দাবাজ, ঘুষখোর অফিসারের জন্য সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই কড়ায় গণ্ডায় বকেয়া টাকা পাওয়া গেল। গত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে লালগড় ব্লকের কয়েকশো চাষির থেকে দু’টি সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির তরফে পার্চেজ ম্যানেজার প্রশান্ত খান ধান কেনেন। বেশির ভাগ ধানটাই ধারে কেনা হয়েছিল। দাম না পেয়ে চাষিরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরবরাহ নিগমের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশান্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।